ইন্দিরা আবাস যোজনায় গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আগেই উঠেছে। এ বার তারই তদন্তে প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ তুলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেন মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য। অভিযোগকারী ওই পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের আব্দুল সামাদ। অবশ্য উদাসীনতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “তাঁদের সুনির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছিল। সেটা তাঁরা করেননি।”
আদালতে মামলার বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের ধীমান সাহা দাবি করেন, “দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারীদের তালিকা ২০০৫ সালে তৈরি হয়েছিল। তখন বামেরা ক্ষমতায় ছিল। ভুলে ভরা সেই তালিকায় অনেক এপিএল পরিবারকে বিপিএল তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। ওই তালিকা নিয়ে আমাদের আপত্তি ছিল।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে সেই তালিকা অনুযায়ী ইন্দিরা আবাসের গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে উপভোক্তাদের তালিকা কিছুটা পঞ্চায়েত ও কিছুটা পঞ্চায়েত সমিতি থেকে করা হয়েছে। সেই তালিকা জেলা প্রশাসন থেকে অনুমোদিত হওয়ার পর উপভোক্তাদের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে ডুমুর পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে অভিযোগ আসায়, ওই পঞ্চায়েতে উপভোক্তাদের তালিকা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে জন্য ওই পঞ্চায়েতে এই প্রকল্পে উপভোক্তাদের এখন টাকা দেওয়া বন্ধ আছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতির রাজগ্রাম, মহুরাপুর, গোঁড়শা, পলসা, মুরারই, ডুমুরগ্রাম ও চাতরা এই পঞ্চায়েতের জন্য ২০০৫ সালে তৈরি আর্থসামাজিক তালিকা থেকে ১০৬১ জনের নাম ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে পঞ্চায়েত সমিতিকে দেওয়া হয়। ধীমান সাহা জানান, এখনও পর্যন্ত ৮১০ জন উপভোক্তাকে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা থাকার জন্য টাকা দেওয়া হয়নি। মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা আব্দুল সামাদের অভিযোগ, “শুধু ডুমুরগ্রাম পঞ্চায়েত নয়, যে সাতটি পঞ্চায়েত আছে প্রত্যেকটিতে ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে সরকারি নিয়ম মানা হয়নি। ২০০৫ সালে তৈরি তালিকা না মেনে এবং এপিএল পরিবারভুক্তদের প্রকল্পের তালিকায় আনা হয়েছে। সভা না ডেকে পঞ্চায়েত সমিতি থেকে টাকা দেওয়া হয়েছে। এমনকী প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে বাড়ি নির্মাণ করেনি এমন উপভোক্তাদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও দেওয়া হয়েছে।”
তাঁর আরও অভিযোগ, কিছু ক্ষেত্রে গৃহনির্মাণের জন্য জেলাপরিষদ থেকে অনুমোদিত তালিকায় থাকা প্রকৃত প্রাপকদের বাদ দিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি। বিডিও, এসডিও ও জেলাশাষক থেকে জেলা প্রশাসনের সবস্তরে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন সদর্থক পদক্ষেপ নেয়নি। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে উন্নয়নমূলক বৈঠক হয়েছে। ছিলেন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী, সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) বিধান রায়, এসডিও (রামপুরহাট) এস উমাসঙ্কর। জেলাশাসক বলেন, “ওই বৈঠকে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট ভাবে কোনও অভিযোগ থাকলে আমাকে লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এসডিওকে বলা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy