Advertisement
E-Paper

ধর্ষণের হুমকি, নেতার ছেলেকে শাস্তি দিল স্কুল

স্কুলেরই তিন ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল স্কুলপড়ুয়া ছেলের বিরুদ্ধে। সোমবার বাবার উপস্থিতিতেই সেই অভিযুক্ত ছেলেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিল স্কুল পরিচালন কমিতি। বাবা শুধু ওই পরিচালন কমিতির সদস্যই নন, তৃণমূলের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষও বটে! স্কুল কমিটিও তৃণমূল প্রভাবিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৫১

স্কুলেরই তিন ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল স্কুলপড়ুয়া ছেলের বিরুদ্ধে। সোমবার বাবার উপস্থিতিতেই সেই অভিযুক্ত ছেলেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিল স্কুল পরিচালন কমিতি। বাবা শুধু ওই পরিচালন কমিতির সদস্যই নন, তৃণমূলের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষও বটে! স্কুল কমিটিও তৃণমূল প্রভাবিত।

ঘটনাস্থল, বাঁকুড়ার ওন্দা হাইস্কুল। এলাকার ওই তৃণমূল নেতার ছেলে এই স্কুলেরই দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। তার সঙ্গেই অভিযুক্ত ওই স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্র এবং এক বহিরাগত যুবক। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছিলেন অভিভাবকদের বড় অংশ। এ দিন পরিচালন কমিটির বৈঠক বসে। বৈঠক শেষে স্কুলের টিচার-ইন-চার্জ তুষারকান্তি বন্দ্যোপাধ্যায় অভিভাবকদের সামনে ঘোষণা করেন, “অভিযুক্ত দুই ছাত্রকেই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে আবেদন করব।” স্কুলের পরিবেশ ঠিক রাখার স্বার্থে ছেলের শাস্তির বিধানকে মেনে নিয়েছেন কর্মাধ্যক্ষ বাবা। তবে, তাঁর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে চাননি। গত শুক্রবার, শিক্ষক দিবসে ওন্দা হাইস্কুলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, কর্মাধ্যক্ষের ছেলে দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরবাইকে স্কুলের মূল দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ‘ইভটিজিং’ করছিল। এর প্রতিবাদ করে তিন ছাত্রী। আর তাতেই খেপে গিয়ে ওই তিনটি ছেলে প্রতিবাদী ছাত্রীদের ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে রেপ করে দেব’ বলে হুমকি দেয়। অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয় স্কুলে। ওই দিনই টিচার-ইন-চার্জের কাছে লিখিত অভিযোগ হয়। শনিবার ওন্দা থানাতেও লিখিত আবেদন করা হয়। পুলিশ অবশ্য মামলা রুজু করেনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।

সেই ব্যবস্থা নিতেই এ দিন বৈঠকে বসে স্কুল পরিচালন কমিটি। নিজের অনুগামীদের ঘেরাটোপে স্কুলে আসেন আসেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের ওই কর্মাধ্যক্ষ। স্কুল চত্বরে ছিলেন শতাধিক অভিভাবক। বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ বৈঠক শেষ হয়। ছাত্রদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে সবার সামনে কেঁদে ফেলেন তুষারকান্তিবাবু।

কর্মাধ্যক্ষও অভিভাবকদের সামনে এসে বললেন, “খবর পেয়ে আমার ছেলেকে স্কুলে আর পাঠাব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ছেলেকে বহিষ্কার করলে যদি স্কুলের সুস্থ পরিবেশ বজায় থাকে, তা হলে আমি তা-ই মেনে নিচ্ছি। কিন্তু, সে কেমন ছেলে, তা পরীক্ষায় তার নম্বরই প্রমাণ করবে!”

স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হলেও জেলা স্কুল পরিদর্শকের অনুমতি পেলে অভিযুক্ত দুই ছাত্র বোর্ডের পরীক্ষায় বসতে পারবে। তবে স্কুলে আর ক্লাস করতে পারবে না। স্কুলের শাস্তি মেনে নিলেও কর্মাধ্যক্ষের আশা, সে উচ্চ মাধ্যমিক দেওয়ার সুযোগ পাবে। তাঁর বক্তব্য, “ছেলেকে মিথ্যা অপবাদে ফাঁসানো হল। তবে, আমি নিশ্চিত স্কুলে আসার সুযোগ না পেলেও ও পরীক্ষায় ভাল ফল করবে।” ছেলেটি পড়াশোনায় ভাল বলেই স্কুল সূত্রের খবর। জেলা তৃণমূল কিন্তু ঘটনা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে চেয়েছে। দলের বাঁকুড়া সভাপতি তথা ওন্দার বিধায়ক অরূপ খাঁ বলেন, “স্কুলের ঘটনা। স্কুল যা ভাল মনে করেছে, তাই করেছে।”

অভিযুক্ত বহিরাগত যুবকের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন অভিভাবকেরা। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমিয়বরণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলে ঠিক কী হয়েছে জানি না। জেলার বাইরে রয়েছি। গিয়ে খোঁজ নেব।”

rape threat student rusticated bankura onda high school
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy