Advertisement
E-Paper

প্রাণ ফেরানোর আর্জি দুই বিধবার

পঞ্চায়েতের কলমের খোঁচায় সরকারি নথিতে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাঁদের দীর্ঘ দিনের বরাদ্দ বিধবা ভাতা। অর্থাভাবে কার্যত অনাহারে দিন কাটছে। অগত্যা বিডিও’র কাছে ভাতা চালু করে প্রাণ বাঁচানোর আবেদন করেলেন আশি বছরের দুই বৃদ্ধা সাজেরা বিবি এবং জানজেরা বিবি। চমকপ্রদ ঘটনাটি ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৩৫

পঞ্চায়েতের কলমের খোঁচায় সরকারি নথিতে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাঁদের দীর্ঘ দিনের বরাদ্দ বিধবা ভাতা। অর্থাভাবে কার্যত অনাহারে দিন কাটছে। অগত্যা বিডিও’র কাছে ভাতা চালু করে প্রাণ বাঁচানোর আবেদন করেলেন আশি বছরের দুই বৃদ্ধা সাজেরা বিবি এবং জানজেরা বিবি। চমকপ্রদ ঘটনাটি ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার।

প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় দাসপলশা পঞ্চায়েতের তুড়িগ্রামের প্রায় ৮০ বছরের দুই বৃদ্ধা সাজেরা বিবি এবং জানজেরা বিবি ২০০৮ সাল থেকে মাসিক ৬০০ টাকা হারে বিধবা ভাতা পাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাত্‌ গত জুন মাস থেকে তাঁদের ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে চরম সমস্যায় পড়েন তাঁরা। কারণ, ওই ভাতার টাকাটুকুই তাঁদের ভাত কাপড়ের অন্যতম সংস্থান ছিল বলে সহায় সম্বল দুই বিধবার দাবি। তাই কার্যত পরানুগ্রহে দিন কাটছে তাঁদের। বারবার প্রশাসনের সকল স্তরে আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। অবশেষে বিস্তর ঘোরাঘুরির পর জানা যায়, পঞ্চায়েতের গাফিলতিতেই ওই দুর্দশা ঘটেছে তাঁদের।

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, বর্তমানে বিধবা বা বার্ধক্য ভাতা-সহ অধিকাংশ সরকারি অনুদান উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অথবা পোস্টঅফিসের পাশ বইয়ে জমা হয়। কিন্তু ভাতার ক্ষেত্রে প্রাপকেরা জীবিত রয়েছেন কি না তার রিপোর্ট জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট ব্লকের মাধ্যমে চেয়ে পাঠানো হয় স্থানীয় পঞ্চায়েতের কাছে। বহু ক্ষেত্রে কোনও রকম তদন্ত না করেই পঞ্চায়েত মনগড়া গতানুগতিক রিপোর্ট পাঠিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। আবার রাজনৈতিক কারণেও মর্জিমাফিক রিপোর্ট পাঠানো হয় বলেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। প্রশাসনেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনা এমনও ঘটে প্রাপকের মৃত্যুর পরও বেশ কয়েক মাস তাঁর পাশ বইতে ভাতার টাকা জমা পড়ে যায়। আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বোঝাপড়া করে সেই টাকা তুলে নেন পরিবারের লোকেরা। জীবিত থেকেও মৃতের তালিকাভুক্ত হয়ে বঞ্চিত হতে হয় বহু উপভোক্তাকে। সাজেরা বিবিদেরও ওই অবস্থার শিকার হতে হয়েছে। তাঁদের ক্ষোভ, “কী কারণে আমাদের মৃত দেখানো হয়েছে বলতে পারব না। তবে ভাতা বন্ধ থাকলে আমরা সত্যিই না খেয়ে মারা পড়ব। তাই বিডিওকে আমাদের প্রাণ ফিরিয়ে ভাতা চালু করার আবেদন করেছি।”

স্থানীয় বাসিন্দা তথা সিপিএম নেতা মহম্মদ মকরম আলি দাবি করেন, “শুধু ওই দুই বিধবাই নন, আরও একজন বিধবা এবং বার্ধক্য প্রাপককে একই সময় থেকে মৃত দেখানোয় ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাঁদের ভিক্ষা করে দিন চলছে। ওই সব উপভোক্তারা তাঁদের দলীয় সমর্থক হওয়ায় তৃণমূল-বিজেপি জোট পরিচালিত পঞ্চায়েত ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।” পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের আসিয়া বিবি বলেন, “বদলি হয়ে যাওয়া এক কর্মীর ভুলেই ওই ঘটনা ঘটে। আমরা জানার পরই সমাধানের ব্যবস্থা করেছি।” সংশ্লিষ্ট ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের বিডিও সৈয়দ মাসুদুর রহমান বলেন, “পঞ্চায়েতের পাঠানো ভুল রিপোর্টের ভিত্তিতেই ওই ঘটনা ঘটেছে। কী কারণে ওই ভুল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ভুল সংশোধন করে ভাতা চালুর ব্যবস্থাও করা হয়েছে।”

mayureswar death widow allowance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy