Advertisement
E-Paper

প্ররোচনা সত্ত্বেও ছাড় অরূপকে, ধৃত বিজেপি নেতা

বাঁকুড়ার মনিয়াডিহি গ্রামে গিয়ে জেলা সভাধিপতি তথা শাসকদলের তাবড় নেতা অরূপ চক্রবর্তী দলীয় কর্মীদের খোলামেলা ‘ছাড়পত্র’ দিয়েছিলেন বিরোধীদের ‘বলিদান’ দেওয়ার। তার দায় নিজেই ‘বুঝে নেব’ বলে অভয়ও দিয়েছিলেন স্থানীয় নেতা-কর্মীদের। স্পষ্ট খুনের প্ররোচনা সত্ত্বেও পুলিশ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার প্রয়োজনই মনে করেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৪ ০২:৫৩
আদালতে নীলাদ্রিশেখর দানা। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।

আদালতে নীলাদ্রিশেখর দানা। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।

বাঁকুড়ার মনিয়াডিহি গ্রামে গিয়ে জেলা সভাধিপতি তথা শাসকদলের তাবড় নেতা অরূপ চক্রবর্তী দলীয় কর্মীদের খোলামেলা ‘ছাড়পত্র’ দিয়েছিলেন বিরোধীদের ‘বলিদান’ দেওয়ার। তার দায় নিজেই ‘বুঝে নেব’ বলে অভয়ও দিয়েছিলেন স্থানীয় নেতা-কর্মীদের।

স্পষ্ট খুনের প্ররোচনা সত্ত্বেও পুলিশ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার প্রয়োজনই মনে করেনি।

তারই প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে খাতড়ায় সভা করে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ যখন পুলিশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন, ঠিক তখনই খবর আসে বিজেপি-র বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক নীলাদ্রিশেখর দানাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

অভিযোগ, দিন কয়েক আগে, মনিয়াডিহি (স্থানীয় বাসিন্দারা যাকে মান্যডি বলেন) গ্রামে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে নীলাদ্রিবাবুরই অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলার ইন্ধন জুগিয়েছিলেন। বাঁকুড়া থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপি-র ওই নেতার বিরুদ্ধে তাই খুনের চেষ্টা, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা এমনকী শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ আনা হয়েছে। বিজেপি এই ঘটনার মধ্যে পুলিশের ‘স্বজনপোষণেরই’ ছায়া দেখছে। তাদের দাবি, অরূপের দোষ আড়াল করতে শাসকদল পুলিশের উপরে পাল্টা চাপ তৈরি করে নীলাদ্রিকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়েছে। ওই বিজেপি নেতাকে বাঁকুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১১ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

যার পরিপ্রেক্ষিতে রাহুল বলেন, “রাজ্যে প্রশাসন বলে যে কিছু নেই তা একের পর এক ঘটনায় প্রমাণিত। পুলিশ রাজনৈতিক রঙের শিকার।” বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার অবশ্য জানান, নীলাদ্রির গ্রেফতারের প্রতিবাদে অচিরেই আন্দোলন শুরু করবেন তাঁরা।

বাঁকুড়ার জেলা সভাপতির ‘খুনের প্ররোচনা’র বিরুদ্ধে বাঁকুড়া থানায় বৃহস্পতিবারই অভিযোগ জানাতে গিয়েছিল বিজেপি। অভিযোগ, লিখিত সেই অভিযোগ পুলিশ জমা নিলেও তা ডায়েরি বা এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি। কেন? জেলা পুলিশের কোনও কর্তাই এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি।

অরূপের ‘প্ররোচনায়’ পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকলেও বিজেপি-র জেলা সম্পাদককে গ্রেফতারে এত তৎপরতা কেন? জেলা পুলিশের কাছে উত্তর মেলেনি তারও। বাঁকুড়া পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তার আশ্বাস, অরূপের বিরুদ্ধে বিজেপি-র অভিযোগ থানায় জমা রয়েছে। প্রয়োজন হলে কেস শুরু করবেন। ওই পুলিশ কর্তা মেনে নিয়েছেন, “বিজেপি-র ওই নেতাকে গ্রেফতারের ব্যাপারে পুলিশের উপরে রাজনৈতিক চাপ ছিল।” অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, “পুলিশের কর্তারা নীচুতলার অফিসারদের চাপ দিতে পারেন। আমরা কী ভাবে চাপ দেব?”

গত ২৩ জুন খাতড়ায় বিজেপি-র মিছিলে হামলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আহত হয়েছিলেন দলের বিজেপি-র বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অভিজিৎ দাস-সহ ২০ জন বিজেপি কর্মী। ওই ঘটনার পরে প্রাথামিক ভাবে বিজেপি-র ৭ জন এবং তৃণমূলের ৪ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। প্রতিবাদে এ দিনই খাতড়ায় সভা ছিল রাহুলের।

বিজেপি-র অভিযোগ, ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের সুদন মাঝি নিজের গ্রামে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার না করে উল্টে ওই ঘটনার সঙ্গে যাঁর কোনও যোগ নেই, সেই নীলাদ্রিকে গ্রেফতার করল। এই ঘটনায় আতঙ্কিত ওই বিজেপি নেতার স্ত্রী নন্দিতাদেবী। তিনি বলেন, “কোথায় কোন সুদূর গ্রামে ঝামেলা হয়েছে, তার সঙ্গে আমার স্বামীর কোনও সম্পর্ক নেই। শুধু বিজেপি করার অপরাধেই তাঁকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আতঙ্কে রয়েছি।”

arup chakrabarty bankura
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy