Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বয়কট চলছেই, এ বার পাঠভবনে

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণ বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলন জারি রাখল ছাত্রছাত্রীরা। শুক্রবার পাঠভবনের পড়ুয়ারাও ক্লাস ও পরীক্ষা বয়কটে সামিল হয়। এ দিন পাঠভবনের অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নির্ধারিত কোনও প্র্যাকটিক্যাল টেস্ট হয়নি। ছাত্র আন্দোলন নিয়ে বিশ্বভারতীর কোনও আধিকারিকই মুখ খুলতে চাননি।

পড়ুয়া ও অভিভাবকদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

পড়ুয়া ও অভিভাবকদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:২৩
Share: Save:

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণ বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলন জারি রাখল ছাত্রছাত্রীরা। শুক্রবার পাঠভবনের পড়ুয়ারাও ক্লাস ও পরীক্ষা বয়কটে সামিল হয়। এ দিন পাঠভবনের অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নির্ধারিত কোনও প্র্যাকটিক্যাল টেস্ট হয়নি। ছাত্র আন্দোলন নিয়ে বিশ্বভারতীর কোনও আধিকারিকই মুখ খুলতে চাননি।

বৃহস্পতিবার শিক্ষাসত্রের ছাত্রছাত্রীরাও ক্লাস ও পরীক্ষা বয়কট করেছিল। আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণ ফেরানোর দাবিতে বিশ্বভারতীর দু’টি বিদ্যালয় স্তরে (পাঠভবন ও শিক্ষাসত্র) দু’দিনের প্রতীকী বন্‌ধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

বস্তুত, বিশ্বভারতী তৈরি হওয়ার সময় থেকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্র থেকে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের বিশ্বভারতীর স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণ ছিল। সেই নিয়মে ওই দুই স্কুলের বহু ছাত্রছাত্রীই (কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া ন্যূনতম নম্বরের ভিত্তিতে) সরাসরি স্নাতক স্তরে ভর্তি হতে পারত। কিন্তু গত ২২ নভেম্বর বিশ্বভারতীর শিক্ষাসমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই নিয়ম তুলে দেওয়া হবে। স্নাতক স্তরে ভর্তি হতে গেলে তা সর্বভারতীয় মেধা তালিকার ভিত্তিতে হবে। তা জানিয়ে নোটিসও দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদেই ২৪ নভেম্বর থেকে আন্দোলন চালাচ্ছে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের পড়ুয়ারা। ক্লাস ও পরীক্ষা বয়কটের সিদ্ধান্তও নিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের অবস্থানে অনড় থাকায় আন্দোলনকারী বৃহস্পতিবার থেকে দু’টি বিদ্যালয়স্তরের সম্পূর্ণ পঠনপাঠন প্রতীকি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। ইতিমধ্যেই আন্দোলনকারীদের প্ররোচিত করা এবং সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার জন্য জনা সাতেক সিনিয়র পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করেছেন কর্তৃপক্ষ। উল্টো দিকে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্বভারতীর শিক্ষক সভা ও অধ্যাপক সভা। পড়ুয়াদের সুরেই দুই সংগঠন অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল করে কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছে। এরই মধ্যে সমস্যার সমাধানে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের একাংশের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত।

দু’পক্ষের অনড় মনোভাবে সে আলোচনা অবশ্য নিস্ফলা হয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় কোনও সমাধান সূত্রই বের করা যায়নি। তারই মধ্যে এই ছাত্র আন্দোলন বৃহস্পতিবারই চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। নজিরবিহীন ভাবে বিশ্বভারতীর একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির স্কুলপড়ুয়ারা উপাচার্যের কুশপুতুল পুড়িয়েছে। ওই দিন রাতেই জরুরি বৈঠকে বসে বিশ্বভারতীর কর্মিসভা, অধ্যাপক সভা এবং আধিকারিকদের সংগঠন। সূত্রের খবর, অনেক রাত অবধি আলোচনার পরেও কোনও গঠনমূলক সিদ্ধান্তে আসা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

shantiniketan boycott patha bhavan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE