Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ভিউ পয়েন্ট থেকে জলাধার দেখে মন ভরল পর্যটকের

প্রথম দর্শনেই পর্যটকদের মন কেড়ে নিল মুকুটমণিপুরের ‘ভিউ পয়েন্ট’। মঙ্গলবার দুপুরে মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারের কোলঘেঁষা পিতৃপাহাড় টিলার উপরে নির্মিত এই ‘ভিউ পয়েন্ট’ এবং ‘ওয়াচ টাওয়ার’-এর উদ্বোধন করেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী। সরকারি ভাবে এই ভিউ পয়েন্টে ওঠার অনুমোদন মেলার প্রথম দিনেই সেখান থেকে জলাধার দেখতে ভিড় করেছিলেন আশপাশের গ্রামের বাসিন্দা থেকে দূরের পর্যটক।

জলরাশি উপভোগ করছে পর্যটক পরিবার। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র

জলরাশি উপভোগ করছে পর্যটক পরিবার। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মুকুটমণিপুর শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০১:০৫
Share: Save:

প্রথম দর্শনেই পর্যটকদের মন কেড়ে নিল মুকুটমণিপুরের ‘ভিউ পয়েন্ট’। মঙ্গলবার দুপুরে মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারের কোলঘেঁষা পিতৃপাহাড় টিলার উপরে নির্মিত এই ‘ভিউ পয়েন্ট’ এবং ‘ওয়াচ টাওয়ার’-এর উদ্বোধন করেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী। সরকারি ভাবে এই ভিউ পয়েন্টে ওঠার অনুমোদন মেলার প্রথম দিনেই সেখান থেকে জলাধার দেখতে ভিড় করেছিলেন আশপাশের গ্রামের বাসিন্দা থেকে দূরের পর্যটক।

চোখ জুড়ানো এই ভিউ পয়েন্ট দেখে খুশি সকলেই। এ বার জুলাই ও অগস্ট মাসে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কুমারী ও কংসাবতীর এই জলাধার এখনও কানায় কানায় ভরে ওঠেনি। তবে, গত কয়েক দিনে কুমারী ও কংসাবতীর ঊর্ধ্বমুখ পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ধীরে ধীরে জলাধারে জল বাড়ছে। ফলে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। ভাদ্র মাসের ভ্যাপসা গরমেও পর্যটকদের পা পড়ছে মুকুটমণিপুরে। রাজ্যের অন্যতম আকর্ষণীয় এই পর্যটনকেন্দ্র এ বার পর্যটকদের জন্য নতুন করে তৈরি করা হয়েছে ভিউ পয়েন্ট এবং ওয়াচ টাওয়ার, যার পোশাকি নাম ‘মুসাফিরানা’।

উদ্বোধনের সময়েই মুকুটমণিপুরে সপরিবারে বেড়াতে এসেছিলেন বাঁকুড়ার গোবিন্দনগর এলাকার বাসিন্দা বাবলু কর্মকার। স্ত্রী নয়নতারা, দুই ছেলে শুভজিৎ ও রণজিৎকে সঙ্গে নিয়ে এ দিন পরেশনাথ মন্দির ঘুরে দেখার ফাঁকে এই পাহাড় টিলায় ওঠেন। পেশায় ব্যবসায়ী বাবলুবাবু বলেন, “আগেও আমরা মুকুটমণিপুরে এসেছি। কিন্তু, এ বার এই ভিউ পয়েন্ট থেকে গোটা জলাধার দেখতে দেখতে আমাদের মন ভরে গেল। সময় পেলে ফের আসব এখানে।” শুভজিৎ ও রণজিতের কথায়, “ওয়াচ টাওয়ার থেকে জলাধারটা দেখতে অসাধারণ লাগছে। বাড়ি যেতে মন চাইছে না। মনে হচ্ছে এখানেই থাকি।” আসানসোল থেকে প্রথমবার এখানে বেড়াতে আসা প্রিয়জিৎ দত্ত, সৌমেন নন্দীর উচ্ছ্বাস, “মুসাফিরানা থেকে গোটা মুকুটমণিপুরকে এক ঝলকেই দেখা যাচ্ছে। এমন মনোরম পরিবেশে দিনটা দারুণ কাটল। খুবই ভাল লাগল ভিউ পয়েন্ট দেখে।”

নতুন ভিউ পয়েন্টের আকর্ষণে পর্যটকদের ঢল নামবে বলে আশাবাদী জেলা প্রশাসনও। জেলাশাসক বলেন, “পাহাড়ের মাথায় এই ওয়াচ টাওয়ার ও ভিউ পয়েন্ট পর্যটনের আকর্ষণ আরও বাড়াবে। মুকুটমণিপুরের সার্বিক উন্নয়নের জন্য আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। কাজ হবে। তবে এই সুন্দর ভিউ পয়েন্ট যাতে নোংরা না করা হয়, তা দেখতে হবে স্থানীয় প্রশাসন ও পর্যটকদের।” প্রশাসনের এই উদ্যোগে খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে হোটেল মালিক। দীর্ঘদিন ধরে এই পর্যটনকেন্দ্রে ঝাল মুড়ি বিক্রি করতে আসা পেড়িপাথরের শুকদেব সর্দার, জলাধারের নৌকা চালক সহদেব সর্দার বলেন, “এলাকার যত উন্নয়ন হবে, তত পর্যটকদের আসা যাওয়া বাড়বে। আর আমাদের খদ্দের বাড়বে। আর্থিক ভাবে আমাদের মতো লোকেরা লাভবান হব।” মুকুটমণিপুর হোটেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তথা হোটেল মালিক সুদীপ সাহু বলেন, “এই ভিউ পয়েন্ট মুকুটমণিপুরের সৌন্দর্যায়নকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। পর্যটনকেন্দ্রের আরও উন্নয়ন হোক, এটাই আমরা চাইছি। এতে পর্যটক আরও আসবেন।” এ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি বিভাবতী টুডু, খাতড়ার মহকুমাশাসক শুভেন্দু বসু, বিডিও (রানিবাঁধ) সুমন্ত দেবনাথ প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mukutmanipur view point tourist spot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE