Advertisement
E-Paper

মিলছে না রান্নার গ্যাস জেলায় ক্ষোভ, নালিশ

রান্নার গ্যাস নিয়ে জেলাজুড়ে সমস্যা নতুন নয়। প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, সরকারি নিয়ম মতো গ্যাস পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নালিশ মেলে, দীর্ঘ অপেক্ষা ও হয়রানির পর গ্রাহকেরা গ্যাস পাচ্ছেন না। তারই জেরে মঙ্গলবার তৃণমূল কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাল সাঁইথিয়া শহরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটারের কার্যালয়ের সামনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪৬
মঙ্গলবার সাঁইথিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার সাঁইথিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

রান্নার গ্যাস নিয়ে জেলাজুড়ে সমস্যা নতুন নয়। প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, সরকারি নিয়ম মতো গ্যাস পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নালিশ মেলে, দীর্ঘ অপেক্ষা ও হয়রানির পর গ্রাহকেরা গ্যাস পাচ্ছেন না। তারই জেরে মঙ্গলবার তৃণমূল কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাল সাঁইথিয়া শহরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটারের কার্যালয়ের সামনে।

এ দিন সকালে গ্যাস সরবরাহ-সহ কয়েক দফা দাবিতে সাঁইথিয়া শহর তৃণমূলের পক্ষে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহর পরিক্রমা শেষে বিক্ষোভ দেখায়। শহর তৃণমূলের চেয়ারম্যান মানস সিংহ বলেন, “কয়েকদফা দাবিতে স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটর মাধ্যমে একটি সংস্থার রিজিওনাল ম্যানেজারকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।”

তাঁদের মূল দাবিগুলি হল, সরকারি নিয়ম মেনে গ্যাস পরিষেবা, গ্যাসের কালবাজারি ও স্বজনপোষন বন্ধ করা ও ফোন বা অনলাইন পরিষেবা বাস্তবায়িত করা। ডিস্ট্রিবিউটার দেবাশিস সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “কালবাজারি বা স্বজনপোষনের অভিযোগ ঠিক নয়। মোট গ্রাহক ৯৬০০। চাহিদা অনুযায়ী প্রায় মাসে সাপ্লাইয়ে ঘাটতি থাকায় অনেক সময় গ্যাস নিয়ে সমস্যা হয়ে থাকে। চিকিৎসার কারণে বাইরে আছি। ফিরে ব্যাবস্থা নেব।”

গ্রাহকদের অভিযোগ, রান্নার গ্যাস নিয়ে জেলাজুড়ে সমস্যা রয়েছে। সময় মত গ্যাস না পাওয়া ও হয়রানির কারণে গ্রাহকেরা মাঝে মধ্যে জেলার বিভিন্ন জায়গায় গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটারের কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান। কখনও কখনও রাজনৈতিক দলের পক্ষেও বিক্ষোভ দেখানো হয়ে থাকে। কিছুদিন আগেই তেমন ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল তারাপীঠের ডিস্ট্রিবিউটার জয়ন্ত রায়কেও। স্থানীয়দের দাবি, সরকারি নিয়ম মেনে অনলাইনে গ্যাস বুক করেও নির্দিষ্ট সময়ে গ্যাস পাওয়া যায় না। কখনও কখনও ৪০-৪৫দিন লেগে যায়। জয়ন্তবাবু বলেন, “কালবাজারি বা বেনিয়ম করার কোনও প্রশ্নই নেই। আসলে মাঝে মধ্যে সাপ্লাই ঘাটতির কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়। ৯৩৪০ জন গ্রাহক, অথচ গত মাসে গ্যাস পেয়েছি ৬৬৫০ সিলিন্ডার। এই ঘাটতির কারণে সঠিক পরিষেবা দেওয়া যায় না।”

রামপুরহাটে রান্নার গ্যাস নিয়ে বিক্ষোভ না হলেও বাসিন্দাদের মধ্যে পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ রয়েইছে। কখনও কখনও বুকিংয়ের নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে গ্যাস দেওয়া হয়। ডিস্ট্রিবিউটার শিবনাথ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, “এখানে ১৮ হাজার গ্রাহক। নিয়ম মেনে অনলাইনে বুকিং মাধ্যমে গ্যাস দেওয়া হয়। হয়ত অসাবধনতা বশত কখনও সখনও কাউকে সময় মত গ্যাস দেওয়া না হয়ে থাকতে পারে। এর জন্য আমরা দুখিঃত।” গ্যাস পরিষেবা নিয়ে ঘাটতি নেই বলে তিনি দাবি করেন।

রান্নার গ্যাসের যোগান নিয়ে তুমুল ক্ষোভ মিলল নলহাটির ইন্ডিয়ান গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটারের বিরুদ্ধে। এখানকার গ্রামীণ এলাকার গ্রাহকদের ক্ষেত্রে পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বার বার। পাইকরের গ্রাহক অনুপম মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “আমাদের গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটার নলহাটি ও মুরারই এলাকায় সঠিক পরিষেবা দিলেও গ্রামীণ এলাকার ক্ষেত্রে পক্ষ পাতিত্ব করেন। গ্যাস বুকিং করার নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরেও গ্যাস মেলে না। এ দিকে মুরারই থেকে গ্যাস আনতে গ্যাসের নির্ধারিত মূল্যের অনেক বেশি দিতে হয়।”

ছবিটা একইরকম দুবরাজপুরেও। গ্যাস নিয়ে অভিযোগ মিলল জেলার এই শহরেও। গ্রাহকদের বড় অংশের অভিযোগ, “মাঝে মধ্যেই গ্যাস নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। সময় মতো বুকিং করি ঠিক কথা। কিন্তু কবে গ্যাস পাব তা নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা থেকেই যায়।”

ডিস্ট্রিবিউটার তনুশ্রী গোস্বামীর তরফে দাবি, এতে তাঁদের কোনও দোষ নেই। ১৪ হাজার গ্রাহক, চেষ্টা করা হয় ৩২-৩৩ দিনের মাথায় গ্যাস সরবরাহ করার। কিন্তু সাপ্লাইয়ের ঘাটতির কারণে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়। সেক্ষেত্রে ৫৪-৫৫ দিন লেগে যায়।

রান্নার গ্যাস নিয়ে তুমুল অভিযোগ মিলল বোলপুরে। যে দুটি সংস্থা রয়েছে তাঁদের গ্রাহক পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ শহরে বহুদিনের। গ্রাহকদের অভিযোগ, “সময় মতো গ্যাস পাওয়া যায় না। ডিস্ট্রিবিউটারকে বলেও কোনও লাভ হয় না।” সিউড়িতেও গ্রাহকদের কম বেশি একইরকম ক্ষোভ। সিউড়ির লালদিঘি পাড়ার সুদীপ্ত সিংহ বলেন, “মাঝে মধ্যে সময় মতো গ্যাস পাওয়া যায় না।” একই কথা বললেন, চাঁদনি পাড়ার অরূপ বসাক। তাঁর অভিযোগ, “গ্যাস নিয়ে সমস্যা আছে। সময় মতো গ্যাস পাওয়া যায় না।”

অভিযুক্ত গ্যাস সংস্থার দুর্গাপুরের সেলস অফিসার বিনোদ বিশ্বকর্মা বলেন, “প্ল্যান্টেই বাল্ক সাপ্লায়ে ঘাটতি ছিল। ফলে ডিস্ট্রিবিউটারদেরকে তাঁদের প্রয়োজন মত গ্যাস সাপ্লাই করা যায়নি। সে জন্য সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। এবার আর সমস্যা হবে না।” তিনি আশ্বাস দেন, “এবার পুজোর সময় গ্যাস নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না।”

cooking gas sainthia non-availability
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy