Advertisement
E-Paper

মজুরির দাবিতে অবরোধ হুড়ায়

প্রতিশ্রুতি মতো একশো দিন কাজের প্রকল্পে মজুরি মেলেনি। ক্ষোভে সোমবার পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০-এ) জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন হুড়ার লক্ষণপুর পঞ্চায়েত এলাকার শতাধিক শ্রমিক। স্বভাবিক ভাবেই দুপুরে পুরুলিয়া থেকে দুর্গাপুর হয়ে কলকাতাগামী এই সড়কের দু’দিকে আটকে পড়ে প্রচুর যানবাহন। অবশ্য অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবার গাড়িকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠলেও শ্রমিকেরা তাঁদের প্রাপ্য মজুরি এ দিনও পাননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৪ ০১:০০
কুলগোড়ায় সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

কুলগোড়ায় সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

প্রতিশ্রুতি মতো একশো দিন কাজের প্রকল্পে মজুরি মেলেনি। ক্ষোভে সোমবার পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০-এ) জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন হুড়ার লক্ষণপুর পঞ্চায়েত এলাকার শতাধিক শ্রমিক। স্বভাবিক ভাবেই দুপুরে পুরুলিয়া থেকে দুর্গাপুর হয়ে কলকাতাগামী এই সড়কের দু’দিকে আটকে পড়ে প্রচুর যানবাহন। অবশ্য অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবার গাড়িকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠলেও শ্রমিকেরা তাঁদের প্রাপ্য মজুরি এ দিনও পাননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্লকের লক্ষণপুর পঞ্চায়েত এলাকার দেউলি, লক্ষণপুর বা খৈরি গ্রামের একাধিক পুকুর সংস্কারের কাজ হয় একশো দিনের প্রকল্পে। এলাকার দেউলি, হুড়া-কেশবপুর, রাঙাডি, জোড়টাঁড়-সহ আশপাশের গ্রামের শ্রমিকেরা ওই প্রকল্পে কাজ করেছেন বলে বিক্ষোভকারীদের দাবি। দেউলির বাসিন্দা সৃষ্টিধর মাহাতো, রাঙাডির বাসিন্দা হলধর মাহাতো, পূর্ণিমা মাহাতো, রঞ্জিত টুডু বা দেউলির জানিক মাহাতো বলেন, “প্রায় মাস দু’য়েক হয়ে গেল আমরা পুকুর সংস্কারের কাজ করেছি। মজুরির জন্য পঞ্চায়েতে যোগাযোগ করেছিলাম। সেখান থেকে বলা হয়, ডাকঘরে আমাদের টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর হুড়া-কেশবপুর ডাকঘরে গিয়ে পোস্টমাষ্টারের সঙ্গে দেখা করলে, তিনি আজ দেব বা কাল দেব করে ঘোরাচ্ছেন। যে দিনই যাচ্ছি বলছেন, ‘টাকা আসেনি’। আমরা গরিব মানুষ। দিনমজুরির কাজ করে আমাদের সংসার চলে। টাকা না পাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।” মাস দেড়েক ধরে একাধিকবার ডাকঘরে গিয়ে প্রাপ্য মজুরি না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার পোস্টমাষ্টারকে ঘেরাও করেছিলেন শ্রমিকেরা। তাঁরা বলেন, “ওই দিন পোস্টমাষ্টার জানিয়েছিলেন, সোমবার টাকা দেওয়া হবে। সেই মতো এ দিন ডাকঘরে গিয়ে একই কথা শুনতে হয়।”

এর পরেই ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ডাকঘরের অদূরে কুলগোড়া মোড়ে গিয়ে অবরোধ শুরু করেন। এর ফলে এক দিকে দুর্গাপুর হয়ে কলকাতা, অন্য দিকে পুরুলিয়া হয়ে রাঁচি বা জামশেদপুর-বোকারোগামী এই প্রধান রাস্তাটি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি বেগতিক অবরোধস্থলে যান যান হুড়ার বিডিও সুব্রত পালিত, ওসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। বিডিও সব শুনে যোগাযোগ করেন পঞ্চায়েতের সঙ্গে। সেখান থেকে জানানো হয়, শ্রমিকদের মজুরির টাকা স্থানীয় ডাকঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। লক্ষণপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দিলীপ রায় বলেন, “আমরা কিন্তু কাজের মাপজোক করিয়ে শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরি ডাকঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” এর পরেই বিডিও স্থানীয় পোস্টমাষ্টার বিশ্বেশ্বর মাহাতোর সঙ্গে কথা বলেন। বিশ্বেশ্বরবাবুর দাবি, “আমি পুরুলিয়ায় প্রধান ডাকঘরে চেক জমা দিয়েছি অনেকদিন আগেই। কিন্তু ওখান টাকা না এলে আমি কী করব।” পুরুলিয়া মুখ্য ডাকঘরের সুপারিন্টেডেন্ট তপন চক্রবর্তী বলেন, “ওই ডাকঘরের পোস্টমাষ্টার শ্রমিকদের প্রাপ্য অর্থ নিয়ে যাননি। দ্রুত শ্রমিকদের মজুরির টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

বিডিও সুব্রত পালিতও বলেন, “এটা ঠিক স্থানীয় ডাকঘরে টাকা এসে পৌঁছয়নি। তবে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, হুড়া-কেশবপুরের পোস্টমাষ্টার জেলা সদরে শ্রমিকদের মজুরির চেক জমা দিলেও তিনি টাকা আনার জন্য কোনও তোড়জোড় করেননি। আমরা আজ, মঙ্গলবার টাকা এনে শ্রমিকদের প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।” কেন তিনি শ্রমিকদের মজুরির অর্থ আনার ব্যবস্থা করেননি? এর অবশ্য উত্তর মেলেনি বিশ্বেশ্বরবাবুর কাছ থেকে।

wage demand blockade hura kulgora
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy