Advertisement
০৫ মে ২০২৪

শান্তির তালুকে নেপাল, পাল্টা প্রচারে মৃগাঙ্ক

সাত সকালেই কংগ্রেস প্রার্থী প্রচারে গেলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতির এলাকায়। আর তৃণমূল প্রার্থী বিকেলে প্রচার সারলেন কংগ্রেস প্রার্থীর তালুকে। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে শব্দবিধির নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরে প্রথম রবিবার এ ভাবেই ভোট প্রচারে মেতে উঠলেন পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন দলের প্রার্থী ও কর্মীরা। সকাল গড়াতেই গরম বাতাস গায়ে জিভ বোলাচ্ছে।

পায়ে পায়ে। রবিবার প্রচারে সঙ্গীদের সঙ্গে বামফ্রন্ট প্রার্থী নরহরি মাহাতো (বাঁ দিকে) ও তৃণমূল প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতো। ছবি: সুজিত মাহাতো

পায়ে পায়ে। রবিবার প্রচারে সঙ্গীদের সঙ্গে বামফ্রন্ট প্রার্থী নরহরি মাহাতো (বাঁ দিকে) ও তৃণমূল প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতো। ছবি: সুজিত মাহাতো

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৪ ০২:১৬
Share: Save:

সাত সকালেই কংগ্রেস প্রার্থী প্রচারে গেলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতির এলাকায়। আর তৃণমূল প্রার্থী বিকেলে প্রচার সারলেন কংগ্রেস প্রার্থীর তালুকে।

উচ্চ মাধ্যমিক শেষে শব্দবিধির নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরে প্রথম রবিবার এ ভাবেই ভোট প্রচারে মেতে উঠলেন পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন দলের প্রার্থী ও কর্মীরা।

সকাল গড়াতেই গরম বাতাস গায়ে জিভ বোলাচ্ছে। তাই রবিবার ভোরেই হ্যান্ডমাইক নিয়ে প্রচারে বেরিয়ে পড়েছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতো। গাড়ি নিয়ে সটান গেলেন পুরুলিয়া ১ ব্লকের লাগদা গ্রামে। সেখান থেকে কমবেশি ১০ কিলোমিটার দূরে গাড়াফুসড় গ্রামে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর বাড়ি।

লাগদার পাড়ায়-পাড়ায় কর্মীরা হ্যান্ডমাইকে হাঁকছেন, “আপনাদের কাছে এসেছেন কংগ্রেসের প্রার্থী নেপাল মাহাতো।” কলতলায় মেয়েদের জটলায় কিংবা চণ্ডীমণ্ডপে জোয়ান-বুড়োদের মজলিসে নিজের হাত দেখিয়ে নেপালবাবু বললেন, “ভোটটা এ বার হাত ছাপে।” পথেই দেখা সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। দু’জনে কুশল বিনিময় করলেন। বাতাস গরম হতে শুরু করেছে। নেপালবাবু বলেন, “ভোট তো বরাবরই এই গরমকালেই হয়। এ সব অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। আরও অনেক জায়গায় যেতে হবে।” তাঁর গাড়ি ছুটল পরবর্তী গন্তব্য ডিমডিহায়।

শনিবার প্রচার সেরে বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হওয়ায় এ দিন সকালে আর প্রচারে বেরোননি তৃণমূল প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাতো। কর্মীদের সঙ্গে তিনি সকালে বৈঠক করেছেন। স্থানীয় গোপালপুরে তিনি প্রচারে যান। তবে বিকেলে তিনি চলে যান নেপালবাবুর এলাকা ঝালদা ১ ব্লকের জারগো গ্রামের মেলায়। সেখান থেকে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে ইচাগ গ্রামে নেপালবাবুর বাড়ি। মৃগাঙ্কবাবুর সঙ্গে শান্তিরাম মাহাতো ছাড়াও ছিলেন জেলা সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো, দলের বর্ষিয়ান বিধায়ক কে পি সিং দেও প্রমুখ। মেলায় আসা গ্রামাঞ্চলের মানুষদের সঙ্গে তাঁরা অনেকটা সময় কাটান। সেই সঙ্গে ভোটের প্রচারও সারেন। মৃগাঙ্কবাবু বলেন, “চিকিৎসক হিসেবে গ্রামাঞ্চলের বহু মানুষের সঙ্গে আমার পরিচিতি রয়েছে। ভোটের আগে প্রচারে এসে অনেক চেনা মুখ দেখে মনে হচ্ছে পরিচিত জনের সঙ্গে দেখা হল। এ বিরাট প্রাপ্তি।”

পথে নেমে প্রচার ও একই সঙ্গে কর্মিসভার জন্য রবিবারের সকালকেই বেছে নিয়েছিলেন বামফ্রন্টের প্রার্থী নরহরি মাহাতো। পুরুলিয়া ২ ব্লকের গোলামারা গ্রামে কর্মিসভা করতে গিয়ে পথের পাশে লোকজনের সঙ্গে তিনি হাত মেলালেন। কুশল বিনিময়ও করলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়া প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের নিখিল মুখোপাধ্যায়। ভোটারদের কাছে তাঁরা দাবি করেন, “এই এলাকায় আমাদের আগে ভাল ভোট ছিল। এ বার সেই আগের মতো ভোট দিন।” নরহরিবাবুর পরনে ছিল সাদা পাজামা-পাঞ্জাবী। তিনি বলেন, “গরমে এই পোশাকে স্বস্থি রয়েছে। তবে বহু এলাকায় ঘুরতে হচ্ছে। এ বার ঝালদা যাব। সেখানে বিড়ি শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে।”

বিজেপি প্রার্থী বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন সাত সকালে আনাড়ার বাড়িতে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক সেরে সোজা মানবাজারে চলে যান। ধানাড়া, বিসরি পঞ্চায়েত ঘুরে কর্মীদের বাড়িতেই দুপুরে তিনি সাদামাটা খাবার খান। সন্ধ্যায় মানবাজারে বাড়ি বাড়ি প্রচার সারলেন। বললেন, “আমরা পুরুলিয়ার ছেলে। রোদ আমাদের কাবু করতে পারবে না।” কিন্তু দুপুরে যে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে? বিকাশবাবু বলেন, “সেটাই তো মুশকিল। তাই সকাল-সন্ধ্যার প্রচারে জোর দিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

prasanta paul purulia nepal mahato congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE