Advertisement
E-Paper

স্কুলে থাবা বসিয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছাই, বন্ধ মিড-ডে মিল

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাইপুকুর থেকে হু হু করে উড়ে আসছে ছাই। দিন কয়েক ধরে অবস্থা এতটাই খারাপ যে, থালা, পানীয় জল, বিছানায় ছাইয়ের স্তর জমে যাচ্ছে। বাতাসে ছাইয়ের পরিমাণ এতচাই বেড়ে গিয়েছে, শ্বাস নিতেও সমস্যা হচ্ছে। এক কথায়, সেই উড়ে আসা ছাইয়ে নাজেহাল অবস্থা আশপাশের বাসিন্দাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৪ ০২:০৯
কুয়াশা নয়। বক্রেশ্বর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছাইয়ে ঢেকেছে পথঘাট, আকাশ।  ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।

কুয়াশা নয়। বক্রেশ্বর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছাইয়ে ঢেকেছে পথঘাট, আকাশ। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাইপুকুর থেকে হু হু করে উড়ে আসছে ছাই। দিন কয়েক ধরে অবস্থা এতটাই খারাপ যে, থালা, পানীয় জল, বিছানায় ছাইয়ের স্তর জমে যাচ্ছে। বাতাসে ছাইয়ের পরিমাণ এতচাই বেড়ে গিয়েছে, শ্বাস নিতেও সমস্যা হচ্ছে। এক কথায়, সেই উড়ে আসা ছাইয়ে নাজেহাল অবস্থা আশপাশের বাসিন্দাদের।

কিন্তু সংশ্লিষ্ট বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও সমস্যার সুরাহা না হওয়ায় পথে নামতে বাধ্য হন আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষজন। শনিবার সকালে সদাইপুর থানা এলাকার পানুরিয়ার কাছে ঘণ্টা দেড়েক রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। খবরটি জেলা প্রশাসনের কানে পৌঁছতেই পুলিশ ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। ছাই যাতে না উড়ে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এই আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা।জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “বাসিন্দাদের অভিযোগ মিথ্যে নয়। আপাতত ছাইপুকুরে ছাইয়ের উপর জলে দিয়ে ভিজিয়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে। তবে স্থায়ী সমস্যা মেটনোর জন্য তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে নিয়ে খুব শীঘ্রই বৈঠক করা হবে। জেলাশাসকও সমস্যার কথা জানেন।”

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই পুকুরটি সদাইপুর থানা এলাকার পানুরিয়া গ্রামের কাছে রয়েছে। ওই দিন বিক্ষোভে সামিল পানুরিয়া মুড়োমাঠ, মল্লিকপুর, মেটেগ্রাম, হোদলার বাসিন্দাদের ক্ষোভ, দিন কয়েক ধরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের এই ছাই পুকুর থেকে এতো ছাই উড়ে আসছে যে, তাতে থালা, পানীয় জল, ঘরের উঠোন থেকে শুরু করে বিছানা সব জায়গা ভরে যাচ্ছে। বাতাসে এত পরিমাণ ছাই রয়েছে যে, নিশ্বাস নিতেও অসুবিধা হচ্ছে। খাবারে ছাই পড়ছে বলে এলাধ্যকার দু’টি প্রাথমিক স্কুলে শুক্রবার থেকে বন্ধ রয়েছে মিড-ডে মিল। অথচ তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। এলাকার বাসিন্দা আশোক বাউড়ি, গোপাল সাহা, সফিকুল মোল্লা, গোপাল সরকার, রিঙ্কু বাউড়িরা বললেন, “দীর্ঘদিন আগে থেকেই ভরে গিয়েছে তাপবিদ্যুতের ছাইপুকুর। চৈত্র মাসে এলোমেলো হাওয়া দিলেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই নিয়ে বহু অভিযোগ করা হয়েছে। এ ভাবে আর কত দিন কাটাতে হবে আমাদের। শীঘ্রই ব্যবস্থা না নিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হত।” এ ব্যাপারে কী বলছেন তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ? তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার মহিতোষ মাজির বক্তব্য, “এই মুহূর্তে পাঁচটি ইউনিট চালু রয়েছে। যখন তিনটি ইউনিট চালু ছিল সেই সময়ের মধ্যেই ছাইপুকুর কার্যত ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। এর পরে আরও দু’টি ইউনিট চালু হওয়া হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে প্রয়োজন আরও একটি ছাইপুকুরের। আরও একটি পুকুর তৈরি করার জন্য আমরা প্রস্তুত। কিন্তু প্রয়োজনীয় জায়গা না পাওয়ার জন্য এভাবেই চালাতে হচ্ছে। জায়গা পাওয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে বহু বার বলা হয়েছে। কিন্তু জায়গা এখনও পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পুকুরের একটা অংশে ছাই কেটে তুলে নিয়ে সেখানে ছাই ফেলা হচ্ছে। তবে জল দিয়ে অপাতত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করব, যাতে ছাই কম উড়ে।”

sadaipur mid day meal fly ash
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy