Advertisement
E-Paper

স্বামীকে মারতে ৫০০ টাকা বকশিস

পরিকল্পনা করে স্বামীকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দিয়ে সবাইকে অন্য গল্প শুনিয়েছিলেন স্ত্রী। জঙ্গলের মাটি খুঁড়ে স্বামীর দেহ উদ্ধারের পরে ফের অন্য গল্প ফাঁদেন। কিন্তু পুলিশের তদন্তে শেষ পর্যন্ত সেই স্ত্রী ধরা পড়লেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৪২

পরিকল্পনা করে স্বামীকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দিয়ে সবাইকে অন্য গল্প শুনিয়েছিলেন স্ত্রী। জঙ্গলের মাটি খুঁড়ে স্বামীর দেহ উদ্ধারের পরে ফের অন্য গল্প ফাঁদেন। কিন্তু পুলিশের তদন্তে শেষ পর্যন্ত সেই স্ত্রী ধরা পড়লেন। খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ধরা হয়েছে আরও দু’জনকে। তাঁদের মধ্যে একজন ওই মহিলার প্রেমিক বলে পুলিশের দাবি।

সাঁতুড়ি থানার মানপুর গ্রামের অদূরে বুধবার একটি পুকুরের পাশের জঙ্গল থেকে দিলীপ চৌধুরী-র (৩৫) দেহ উদ্ধার হয়েছিল। শুক্রবার পুলিশ তাঁর স্ত্রী স্ত্রী গীতা চৌধুরী এবং সুশীল দাস ও মঙ্গল মালকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, সুশীলের সঙ্গে গীতার বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক রয়েছে। দিলীপ বাধা হওয়ায় তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রঘুনাথপুরের এসডিপিও পিনাকী দত্ত বলেন, “বিবাহ বর্হিভূত অবৈধ সম্পর্কের জেরেই এই খুনের ঘটনা। ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে খুনে ব্যবহৃত গামছা ও বাঁশ উদ্ধার হয়েছে।” শনিবার রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক সুশীল ও মঙ্গলকে দু’দিন পুলিশ হেফাজত এবং গীতাদেবীকে ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

১০ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিলেন খেজুর রসের ব্যবসায়ী দিলীপবাবু। দেহ উদ্ধারের পরে দিলীপবাবুর ভাই সাঁতুড়ি থানার একতিরা গ্রামের বাসিন্দা প্রদীপ চৌধুরী পুলিশের কাছে দাদাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশের গীতাদেবীর উপরে সন্দেহ হয়। পুলিশের ব্যাখ্যা, ১০ এপ্রিল দিলীপবাবু নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই মানপুরের বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি বিহারের নোয়াদাতে চলে গিয়েছিলেন গীতাদেবী। দেহ উদ্ধারের আগের দিন মঙ্গলবার প্রদীপবাবু মানপুর গ্রামে দাদার বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বাড়িতে দাদা বা বৌদি কেউ নেই দেখে, তিনি ফোনে গীতাদেবীর সঙ্গে যোগাযাগ করেন। তখন গীতাদেবী তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁর স্বামী কাজের সূত্রে বাইরে গিয়েছেন। তাই তিনি বাপের বাড়িতে দিয়েছেন। পুলিশের কাছে এমনটাই জানিয়েছেন প্রদীপবাবু।

এ দিকে দেহ উদ্ধারের পরে গীতাদেবী মানপুর গ্রামে আসার পরে অন্য গল্প ফেঁদেছিলেন। এসডিপিও জানান, ওই মহিলা পুলিশের কাছে দাবি করেছিলেন, ১০ এপ্রিল বাউল গান শোনার নাম করে চার ব্যক্তি তার স্বামীকে নিয়ে যায়। পরে তারা জানিয়েছিল, দিলীপকে খুন করা হয়েছে। সেই ঘটনার কথা কাউকে জানালে তাকেও খুনের হুমকি দেয় ওই দুষ্কৃতীরা। ভয় পেয়ে সে বাপেরবাড়ি চলে যায়। গীতাদেবী যে চারজনের নাম বলেছিলেন তাদের মধ্যে স্থানীয় দণ্ডহিত গ্রামের সুশীল দাস ও মঙ্গল মালের নাম ছিল। এসডিপিও বলেন, “ওই মহিলার বক্তব্য শুনে চার জনকে আটক করে থানায় নিয়ে এসে গীতাদেবীর সামনে বসিয়ে জেরা করতেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে পড়ে।”

প্রকৃত ঘটনা কী?

পুলিশের দাবি, সুশীলের সঙ্গে গীতার বিবাহ বর্হিভূত সর্ম্পক ছিল। দিলীপবাবু সেই সম্পর্কের বিষয়ে জেনে যাওয়াতেই পরিকল্পিত ভাবে তাঁকে খুন করে সে। জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, মানপুর গ্রামে যেখানে খেজুর রস বিক্রি করতেন দিলীপ, ১০ এপ্রিল বিকেলে সেই ঝুপড়িতেই মঙ্গল মালের সাহায্যে গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে গীতা। পরে সুশীলকে ডেকে তার সাহায্যে বাঁশে দেহটি বেঁধে পুকুরের পাশে জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে পুঁতে দেয়। খুনে সাহায্য করার জন্য মঙ্গলকে ৫০০ টাকা দিয়েছিল গীতা। তবে আদালতে ধৃতেরা দাবি করেছে, “তারা ওই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।” তবে পুলিশের পাল্টা দাবি, নিজেদের হেফাজতে নিয়ে ধৃতদের কথা মতো জায়গা থেকেই খুনে ব্যবহৃত সামগ্রীগুলি উদ্ধার হয়েছে।

murder santuri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy