Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সাড়া এ বার আদিবাসী মহলেও, উচ্ছ্বসিত বিজেপি

রাঢ়বঙ্গে বিজেপি-র শিকড় ছড়াতে শুরু করেছিল বীরভূম থেকে। এ বার তারা ডানা মেলতে চেষ্টা করল পুরুলিয়াতেও। বীরভূমে যদি সংখ্যালঘু মানুষজনের তাদের দলে যোগদান বিজেপি-র পক্ষে আশাপ্রদ হয়ে থাকে, তা হলে পুরুলিয়ায় তাদের স্বস্তি দিচ্ছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে গেরুয়া বাহিনীকে নিয়ে উৎসাহ।

পুরুলিয়ার ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের সভায় রাহুল সিংহ। বুধবার সুজিত মাহাতোর ছবি।

পুরুলিয়ার ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের সভায় রাহুল সিংহ। বুধবার সুজিত মাহাতোর ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ০২:০২
Share: Save:

রাঢ়বঙ্গে বিজেপি-র শিকড় ছড়াতে শুরু করেছিল বীরভূম থেকে। এ বার তারা ডানা মেলতে চেষ্টা করল পুরুলিয়াতেও। বীরভূমে যদি সংখ্যালঘু মানুষজনের তাদের দলে যোগদান বিজেপি-র পক্ষে আশাপ্রদ হয়ে থাকে, তা হলে পুরুলিয়ায় তাদের স্বস্তি দিচ্ছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে গেরুয়া বাহিনীকে নিয়ে উৎসাহ।

পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের সভায় বুধবার তুমুল ভিড় বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহকে খুশি করেছে অবশ্যই। সেই সঙ্গেই তাঁদের প্রাপ্তি, ফরওয়ার্ড ব্লকের দুই প্রাক্তন বিধায়কের বিজেপি-তে যোগদান। আদিবাসীদের সংগঠন ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি গত অগস্টেই বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার কথা জামশেদপুরে ঘোষণা করেছিল। ওই দলের নেতৃত্ব এ দিন বিজেপি-র সভায় এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা এখন থেকে বিজেপি-র পতাকা নিয়েই লড়াই করবেন। আদিবাসীদের যে ক’টি রাজনৈতিক দল এখনও কিছুটা হলেও প্রাসঙ্গিক, তাদের মধ্যে জেডিপি অন্যতম। তাই তাদের দলে টানতে পেরে উল্লসিত পুরুলিয়ার বিজেপি নেতৃত্ব। আবার জঙ্গল মহলের জয়পুর ও আড়শা থেকে দুই প্রাক্তন বিধায়ককে দলে পেয়েও ওই এলাকায় সংগঠন বাড়ানো তুলনায় সহজ হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। উৎসাহিত রাহুলবাবু দাবি করেছেন, “বাংলার মুসলিমদের চোখ আগেই খুলে গিয়েছে। এখন সব মানুষই বুঝতে পারছেন, বাংলাকে বাঁচাতে পারে একমাত্র বিজেপি-ই।”

বাম জমানায় পুরুলিয়া জেলা ছিল ফব-র শক্ত ঘাঁটি। বামেদের দুর্দিনে ফব-র দুই প্রাক্তন বিধায়ক বিন্ধ্যেশ্বর মাহাতো ও প্রভাত মাহাতো বিজেপি-তে যোগ দিলেন। এঁদের মধ্যে বিন্ধ্যেশ্বর ফব-র জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, “ওঁরা দু’জন বেশ কিছু দিন ধরেই দলের কোনও কাজে যোগ দিচ্ছিলেন না। শুনেছিলাম, তৃণমূলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিজেপি-তে যাবেন, বুঝতে পারিনি!” প্রভাতবাবু অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন, “আমাদের দু’জনকে দল ইদানীং বিশেষ মর্যাদা দিচ্ছিল না। আমরা রাজনৈতিক কর্মী। তাই মানুষের কাজ করার জন্য বিজেপি’তে যোগ দিলাম।” তাঁদের সঙ্গেই বিজেপি’তে গিয়েছেন আজসু নেতা অনিল চৌধুরী ও একাধিক কংগ্রেস নেতা।

বিজেপি-র সভার আগে শহরের হরিপদ সাহিত্য মন্দিরে এ দিন নিজেদের একটি সভা করেন ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির নেতৃত্ব ও কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন জেডিপি-র শীর্ষ নেতা সালখান মুর্মু ও রাজ্য সভানেত্রী পানমণি বেসরা। সালখান বলেন, “গত অগস্ট মাসে বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও অসম এই পাঁচটি রাজ্যে আমরা বিজেপি-র সঙ্গে যোগ দিয়েছি। সেই অনুষ্ঠান ছিল জামশেদপুরে। কিন্তু এ রাজ্যে আমরা এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে সে কথা ঘোষণা করলাম।” সেখানেই পানমণি দাবি করেন, “২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের সময় আমরা তৃণমূলের পাশে ছিলাম। কিন্তু এখনও আমরা সেই তিমিরেই! আদিবাসীদের তেমন উন্নয়ন হল কই? তাই বিজেপি-তে যোগ দিলাম।”

বিজেপি-র সদস্য সংগ্রহের টোল ফ্রি নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে সেই মুর্হূতেই সদস্য পদ নেওয়ার জন্য এ দিনের সভায় সকলকে অনুরোধ জানান দলের সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার। ভিড় দেখে রাহুলবাবু দলের জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরিই বলেন, “বিকাশকে বলছি, এ বার থেকে সভা করলে আর ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে নয়! সভা অন্য কোথাও করতে হবে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

convention bjp purulia minorities
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE