গত পাঁচ মাস ধরে বন্ধ থাকা বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক দ্রুত চালু হতে চলেছে বলে দাবি করলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বৃহস্পতিবার বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকার দলীয় নেতা-কর্মীরা বোলপুরের পার্টি অফিসে হাজির হয়েছেন। ওই আলাপচারিতার পরে অনুব্রত বলেন, “ব্যাঙ্ক খোলার জন্য রাজ্য সরকার ৬৮ কোটি টাকা দিচ্ছে। ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে একটু ধৈর্য ধরতে বলছি। আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করুন। আপনাদের ব্যাঙ্ক দ্রুত খুলে যাবে।” বিপুল খেলাপি ঋণের কারণে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ওই ব্যাঙ্কের সব ক’টি শাখার লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
বিপুল অনাদায়ী খেলাপি ঋণের জন্য গত ১৫ মে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের লাইসেন্স বাতিল করেছে। তার পর থেকেই জেলার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের ১৭টি শাখাতেই সব ধরনের লেনদেন বন্ধ রয়েছে। নিজেদের জমানো টাকা তুলতে না পারায় জেলাজুড়ে ওই ব্যাঙ্কের প্রায় আড়াই লক্ষেরও বেশি আমানতকারীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। তাঁদের গচ্ছিত মোট ৩৫০ কোটি টাকার ভবিষ্যত্ কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সমস্যার আঁচ এসে পড়েছে ওই ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত জেলার কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিগুলিও। প্রশাসন সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও জেলার ৩৩১টি কৃষি উন্নয়ন সমিতির মধ্যে অন্তত ৯৫টি সমবায়ে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সেই সব সমিতির অধিকাংশেরই ৭০ শতাংশের বেশি অমানত কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের বিভিন্ন শাখায় গচ্ছিত রয়েছে। ফলে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমানতকারীদের টাকাপয়সা ফেরানোর ক্ষেত্রে একই রকম সমস্যায় পড়েছে ওই সমবায় সমিতিগুলিও। খরিফ মরসুমে কৃষিঋণ না পেয়ে সমস্যায় পড়েন জেলার অসংখ্য প্রান্তিক চাষি। এমনকী, লেনদেন বন্ধের জেরে উপভোক্তারা ব্যাঙ্কে গচ্ছিত ১০০ দিন কাজের প্রকল্প, মিড-ডে মিল, বার্ধক্য-বিধবা-অক্ষম ভাতা, রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনার (আরকেভিওয়াই) মতো বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকাও তুলতে পারছেন না বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে গত কয়েক মাস ধরে জেলার বিভিন্ন জায়গায় আমানতকারীরা এবং বিরোধী দলগুলি বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা স্মারকলিপিও দিয়েছে। বন্ধ ব্যাঙ্ক গত কয়েক মাস ধরে জেলায় শাসক দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। সেই নিরিখে অনুব্রতর দাবি সঠিক হলে তৃণমূলের স্বস্তি ফিরবে। এ দিন অনুব্রতর সুরেই ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামও বলেছেন, “রাজ্য থেকে ব্যাঙ্ক খোলার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত এসে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে তত্পর হয়েছেন। শীঘ্রই এ নিয়ে নির্দেশিকা আসতে চলেছে। ঠিক কবে ব্যাঙ্ক খুলবে, তা আগামী দিনে পরিষ্কার করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy