Advertisement
E-Paper

সমবায় ব্যাঙ্ক নিয়ে সরব বিজেপি

তাঁরা জানতেন জমানো টাকা সময় তুলতে পারবেন। কিন্তু গত ১৬ মে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশে সমবায় ব্যাঙ্কের যাবতীয় লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে শুরু হয় সমস্যা। বার বার ঘুরেও টাকা তুলতে পারছেন না গ্রাহকেরা। আন্দোলন, ধর্না, বিক্ষোভ করেও সমস্যা মিটছে না। ব্যাঙ্কে টাকা রেখে তারা কি অন্যায় করেছেন? গোটা জেলা জুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৪

তাঁরা জানতেন জমানো টাকা সময় তুলতে পারবেন। কিন্তু গত ১৬ মে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশে সমবায় ব্যাঙ্কের যাবতীয় লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে শুরু হয় সমস্যা। বার বার ঘুরেও টাকা তুলতে পারছেন না গ্রাহকেরা। আন্দোলন, ধর্না, বিক্ষোভ করেও সমস্যা মিটছে না। ব্যাঙ্কে টাকা রেখে তারা কি অন্যায় করেছেন? গোটা জেলা জুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

জেলার সমবায় ব্যাঙ্কগুলির গ্রাহকদের এই সমস্যাকে এ বার হাতিয়ার করে আন্দোলনে নামল বিজেপি। শুক্রবার মহকুমাশাসকের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিজেপির রামপুরহাট মণ্ডল কমিটি সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন করে। অবিলম্বে ব্যাঙ্ক খোলার জন্য রাজ্য সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। তা না হলে এক মাস পরে জেলায় সমস্ত ব্লকে ব্লকে এবং জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে ৭২ ঘণ্টা অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শুভাশিস চৌধুরী।

বিজেপির জেলা নেতা অসিত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “ব্যাঙ্কের আমানতকারীর সংখ্যা ২ লক্ষ ৬৬ হাজার। তাঁদের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা গচ্ছিত আছে। ব্যাঙ্কের কিছু স্বার্থপর ব্রাঞ্চ ম্যনেজার এবং ঋণ গ্রহিতাদের অসাধু চক্রের জন্য ২০০৬-২০১৪ সাল পর্যন্ত অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ৭০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। ২০১২ সাল থেকে ব্যাঙ্কে কোনও নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি, কাউকে ঋণ দেওয়া হয়নি। ২০১৩ সালে ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৫ কোটি টাকা। রাজ্যের বর্তমান সমবায় মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর তখন ২০১৩ সালে রাজ্যের সমবায় দফতরের সচিব ছিলেন।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জ্যোতির্ময়বাবু বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটি এবং নার্বাডের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ১৫ কোটি দেবে, রাজ্য সরকার ৪০ কোটি টাকা দেবে। আর বাকি ১৫ কোটি টাকা অন্য জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় থেকে দিয়ে বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ককে বাঁচানো হবে। বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, ১৫ কোটির জায়গায় ২০ কোটি টাকা ঋণ আদায় করতে তাঁরা সমর্থ হয়েছিলেন। রাজ্য সরকারের ৪০ কোটি টাকা এবং অন্য জেলার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ১৫ কোটি দেওয়ার বিষয়ে জ্যোর্তিময়বাবু বলেন, “আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছিলাম। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গোঁ মনোভাবের জন্য আর এগোনো যায়নি।” তাঁর দাবি, “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক চাইছে অন্য জেলা সমবায় ব্যাঙ্ক নয়, রাজ্য সরকারকে ওই টাকা দিতে হবে। কিন্তু সরকারের পক্ষে এই মুহূর্তে ৭০ কোটি টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন। তাই এখন সরকারও সিদ্ধান্ত নিতেও পারছে না।”

মন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শুভাশিস চৌধুরী বলেন, “সারদা মামলা এখনও আদালতের বিচারাধীন। সে ক্ষেত্রে সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটা বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ৫০০ কোটি টাকা সাহায্য করছেন। আর যে সংস্থার সঙ্গে সরকার অংশীদার সেই সংস্থাকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী ৭০ কোটি দিতে পারছেন না?” মন্ত্রীর জবাব, “সারদা মামলা সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। আর সমবায়ের ব্যাপারে অর্থমন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি শুধু বলতে পারি, বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ককে তার অভ্যন্তরীণ মূলধন নিয়ে বাঁচতে হবে। দেখা যাক কী হয়।”

অন্য দিকে, সম্প্রতি জেলা সফর এসে কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একটাও কথা না বলায় আশাহত হয়েছেন জেলাবাসী। তাঁদের অনেকের বক্তব্য, মহারাষ্ট্র সরকার ৩৩৯ কোটি টাকা দিয়ে সেখানকার তিনটি ব্যাঙ্ককে বাঁচাতে পেরেছে। কেন আমাদের সরকার আদালতে অঙ্গীকারপত্র জমা দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে না, যে তারা টাকা দিতে রাজি তা হলেই তো ব্যাঙ্ক বেঁচে যায়। জ্যোতির্ময় কর বলেন, “আদালতে অঙ্গীকারপত্র জমা দেওয়া মানেই ৭০ কোটি টাকা দিতে হবে। এখনই সে টাকা কী করে দেওয়া যায়?”

rampurhat cooperative bank bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy