E-Paper

সদ্য প্রকাশিত কেন্দ্রীয় রিপোর্ট ঘিরে উদ্বেগ, রাজ্যে প্রসূতি মৃত্যুর অনুপাত নিয়ে ফের প্রশ্ন

বিশ্বে সামগ্রিক ‘মেটারনাল মর্টালিটি রেশিয়ো’ (এমএমআর) ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে ৭০ বা তার নীচে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে রাজ্যের এমন পরিস্থিতি কেন? স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশের দাবি, ওই রিপোর্ট পুরনো। কয়েক বছর অন্তর কেন্দ্র ওই রিপোর্ট প্রকাশ করে।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫ ০৭:১৮

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

রাজ্যে প্রসূতি মৃত্যুর অনুপাত নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠল।

কেন্দ্রের সদ্য প্রকাশিত ‘স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম’-এর রিপোর্ট (২০২০-’২২) অনুযায়ী, দেশের সার্বিক ‘মেটারনাল মর্টালিটি রেশিয়ো’ (এমএমআর) ৮৮ হলেও, এ রাজ্যে সেটি ১০৫। কেন্দ্রের এই রিপোর্ট প্রকাশের পরেই সোমবার প্রসূতি মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন জেলার সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য কর্তারা।

বিশ্বে সামগ্রিক ‘মেটারনাল মর্টালিটি রেশিয়ো’ (এমএমআর) ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে ৭০ বা তার নীচে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে রাজ্যের এমন পরিস্থিতি কেন? স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশের দাবি, ওই রিপোর্ট পুরনো। কয়েক বছর অন্তর কেন্দ্র ওই রিপোর্ট প্রকাশ করে। এখন রাজ্যের ‘এমএমআর’ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।

কিন্তু বাস্তব কি আদৌ তাই? শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টই নয়, খাস স্বাস্থ্য ভবনের অন্দরের খবর, রাজ্যে প্রসূতি মৃত্যুর অনুপাত এখনও ১০০-র থেকে নামেনি। ২০২৩-২৪ আর্থিক বর্ষে প্রসূতি মৃত্যুর অনুপাত ৯৬-৯৭-এ নেমে এসেছিল ঠিকই। কিন্তু ২০২৪-এর এপ্রিল থেকে সেই পরিস্থিতি ফের ধাক্কা খেতে শুরু করে। দিন কয়েক আগে কেন্দ্রের রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার আগেই স্বাস্থ্য দফতরে এর কারণ নিয়ে জল্পনা চলছে।

প্রতি এক লক্ষ জীবিত সন্তান প্রসবের নিরিখে প্রসূতি মৃত্যুর এই আনুপাতিক হিসাব রাখা হয়। দেখা যাচ্ছে, ২০২৪-২০২৫ আর্থিক বর্ষে (এপ্রিল থেকে মার্চ) সব থেকে বেশি প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে হাওড়া ও পুরুলিয়ায়। হাওড়ায় এক লক্ষে সংখ্যাটি ১২৪ এবং পুরুলিয়ায় তা ১০০। পাশাপাশি, আশঙ্কা রয়েছে আলিপুরদুয়ার (৯৯), জলপাইগুড়ি (৯৩), মুর্শিদাবাদ (৯০), উত্তর ২৪ পরগনা (৯২), পশ্চিম বর্ধমান (৯৬) জেলা নিয়েও। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, একমাত্র কালিম্পংয়ের ‘এমএমআর’ শূন্য এবং কলকাতায় ৩৬। বাকি অন্য সব জেলাতেই ৫০-এর কাছাকাছি বা তার বেশি।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত বছরের এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে রাজ্যের ‘এমএমআর’ ১০৩-এ পৌঁছেছিল। তার পরে বিভিন্ন সময়ে জেলাগুলিতে প্রসূতি মৃত্যু বৃদ্ধির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে মেডিক্যাল কলেজগুলি এবং জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে স্বাস্থ্য ভবন। তাতেও চিত্রটা তেমন বদলায়নি। স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘দেশের অন্য রাজ্যেও ‘এমএমআর’ ঊর্ধ্বমুখী। তবে এ রাজ্যের কয়েকটি জেলায় কেন মৃত্যুর হার বেশি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রত্যেকটি প্রসূতি মৃত্যুর অডিট করা হচ্ছে।’’ সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাজ্যে ৭০ শতাংশ প্রসূতির মৃত্যু হচ্ছে সিজ়ারের পরে। সিজ়ার পরবর্তী সঙ্কটজনক অবস্থা মোকাবিলার পরিকাঠামোতেই ঘাটতি। পরিকাঠামোর উন্নয়ন, সিনিয়র চিকিৎসকদের শূন্যপদ পূরণ না করলে সমাধান সম্ভব নয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Maternal Mortality Pregnant Women Deaths

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy