Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

হোম কেয়ার পরিষেবায় প্রশ্ন দায়বদ্ধতা নিয়ে

অর্থের বিনিময়ে করোনা রোগীকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও দায়বদ্ধতাও নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌরভ দত্ত 
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২০ ০৪:৪২
Share: Save:

বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসার মাত্রাতিরিক্ত বিল নিয়ে অভিযোগ ছিলই। এরই মধ্যে বিভিন্ন প্যাকেজে ‘কোভিড হোম কেয়ারে’র দায়বদ্ধতা ঘিরেও প্রশ্ন উঠে গেল।

যাদবপুরের বাসিন্দা এক প্রৌঢ়ের গত ৬ অগস্ট করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। সেই সময় বৃদ্ধের শারীরিক সমস্যা না থাকায় আনন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ‘কোভিড হোম আইসোলেশন’ পরিষেবায় আস্থা রাখে আক্রান্তের পরিবার। শনিবার রাতে বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বাবাকে ভর্তির জন্য যোগাযোগ করেন ছেলে। কিন্তু অভিযোগ, হাসপাতাল জানায় যে শয্যা নেই। বিষয়টি স্বাস্থ্য কমিশনের নজরে আনার পরেই আবার আনন্দপুরের হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয়, শয্যার ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে! যার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, যাঁদের এমন যোগাযোগ নেই তাঁরা কী করবেন?

আইসিএমআর (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ)-এর পরামর্শের সূত্র ধরে হাসপাতালগুলির উপরে চাপ কমাতে স্বাস্থ্য দফতরও উপসর্গহীন, মৃদু উপসর্গযুক্তদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছে। রাজ্য সরকার টেলিমেডিসিন পরিষেবাও চালু করেছে। এই পরিস্থিতিতে ‘মুশকিল আসান’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের ‘হোম আইসোলেশন’ বা সরকারি ‘সেফ হোমে’র ধাঁচে ‘স্যাটেলাইট সেন্টার’ পরিষেবা। আনন্দপুর ফর্টিস, মেডিকা, উডল্যান্ডস, অ্যাপোলো গ্লেইনেগলস, আমরি’র মতো বেসরকারি হাসপাতাল অর্থের বিনিময়ে হোম কেয়ার পরিষেবা দিচ্ছে। হোম কেয়ার না হলেও দৈনিক টাকার বিনিময়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে গৃহে থাকা আক্রান্তের কাছে চিকিৎসকদের পরামর্শ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে আর এন টেগোর হাসপাতালও।

অর্থের বিনিময়ে করোনা রোগীকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বেসরকারি হাসপাতালগুলি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও দায়বদ্ধতাও নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর এন টেগোর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শয্যা খালি রয়েছে কি না তার উপরে সবটা নির্ভর করছে। ফর্টিস কর্তৃপক্ষেরও একই বক্তব্য। অ্যাপেলো হোম কেয়ারের ইস্টার্ন রিজিওন ইউনিট হেডে’র প্রধান সৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোভিড শয্যা না থাকলে কিছু করার নেই। তবে রোগী যাতে অন্য হাসপাতালে শয্যা পান সেই চেষ্টা করা হয়। রোগীর পরিজনদেরও কিছু হাসপাতালের নম্বর দেওয়া হয় যোগাযোগের জন্য।’’ উডল্যান্ডসের অধিকর্ত্রী রূপালি বসু বলেন, “হোম কেয়ার এবং স্যাটেলাইট সেন্টারে থাকা রোগীদের প্রয়োজন হলে আইসিইউ এবং জেনারেল ওয়ার্ড, দু’ক্ষেত্রেই শয্যা রয়েছে।”

অ্যাসোসিয়েশন অব হসপিটালস ইন ইস্টার্ন ইন্ডিয়া তথা আমরি গ্রুপের সিইও রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘বাড়িতে বা স্যাটেলাইট সেন্টারে থাকাকালীন প্রতিদিন আক্রান্তের শারীরিক পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হয়। প্রয়োজন বুঝলে শয্যার ব্যবস্থাও করি। যে হাসপাতালের পরিষেবা রোগী নিচ্ছেন দরকার পড়লে তাঁদেরই আক্রান্তকে ভর্তির দায় বর্তায়।’’ মেডিকার কর্ণধার অলোক রায়েরও বক্তব্য, ‘‘ভর্তির নিশ্চয়তা না দিলে বিশ্বাস থাকবে কী করে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE