E-Paper

কেন্দ্রীয় স্কুলে শূন্য পদে প্রাক্তনদের পুনর্নিয়োগে প্রশ্ন

শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, কেন্দ্র কয়েক বছর আগে রাজ্যের পিছিয়ে পড়া এলাকায় অনগ্রসর অঞ্চল মঞ্জুরি তহবিল থেকে ওই সব মডেল স্কুল চালু করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৩ ০৮:৩১
teacher.

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিয়োগের আশায় চাকরিপ্রার্থীরা দলে দলে রাস্তার ধর্না দিচ্ছেন। তাঁদের সুচারু কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না-করে রাজ্য সরকার পরিচালিত কিছু সেন্ট্রাল স্কুল বা কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্য থেকে চুক্তির ভিত্তিতে পুনর্নিয়োগের খবরে কিছু প্রশ্ন ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিতর্ক তীব্র হয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়ে‌ছে, বাসন্তী গভর্নমেন্ট মডেল স্কুলের জন্য বাংলা, কুলতলি গভর্নমেন্ট মডেল স্কুলের জন্য ইংরেজি, ইতিহাস, ভুগোল এবং জয়নগর গভর্নমেন্ট মডেল স্কুলের জন্য অঙ্ক, ইতিহাস, ইংরেজি ও ভুগোলের শিক্ষক দরকার। সেই সঙ্গে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী লাগবে চারটি স্কুলে। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য ইন্টারভিউ হবে ৭, ৮, ৯ জুন।

সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বা সরকার পোষিত স্কুলে চুক্তিভিত্তিক বা অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে শিক্ষকের অভাব পূরণের চেষ্টা হয় প্রায়ই। এ বার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত, সরকার পোষিত অথবা বেসরকারি স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পুনর্নিয়োগের খবরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, চাকরির আশায় অসংখ্য প্রার্থী হাপিত্যেশ করে বসে থাকা সত্ত্বেও প্রাক্তনদের দিয়ে পদ পূরণের উদ্যোগ কেন? শিক্ষা সূত্রের খবর, নিয়োগ করা হবে ‘গ্রুপ সি’ বা তৃতীয় শ্রেণি এবং ‘গ্রুপ ডি’ বা চতুর্থ শ্রেণির স্কুলকর্মীও।

কেন্দ্রীয় স্কুলে নিয়োগ হয় পিএসসি বা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে। তাই পিএসসি-র পরীক্ষার মাধ্যমে নতুনদের না-নিয়ে কেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্য থেকে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ হবে, সেই প্রশ্ন জোরদার হয়েছে শিক্ষা শিবিরে। বছরের পর বছর পথে বসে নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভরত যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগপত্র না-দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ডেকে কাজ দেওয়া নিয়ে সংশয় দানা বাঁধছে।

শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, কেন্দ্র কয়েক বছর আগে রাজ্যের পিছিয়ে পড়া এলাকায় অনগ্রসর অঞ্চল মঞ্জুরি তহবিল থেকে ওই সব মডেল স্কুল চালু করে। কেন্দ্র প্রাথমিক টাকা দিলেও পরে ওই সব স্কুলে ‘ম্যাচিং ফান্ড’ দেয় রাজ্য সরকারও। এই ধরনের সরকারি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হয় জেলা স্কুল পরিদর্শকের মাধ্যমে। ২০১৮ সালে পিএসসি-র মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ে অন্তত ৮৫০ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, সারা পশ্চিমবঙ্গে যত মডেল স্কুল চালু হয়েছিল, সব ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিয়োগ হয়নি। ফলে শিক্ষকের অভাব রয়েই গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর বক্তব্য, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের কর্মদক্ষতা সাধারণ ভাবে বয়সের কারণেই কমে যায়। তা হলে আবার তাঁদের নেওয়া হচ্ছে কেন? ‘‘হাজার হাজার যোগ্য চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন, যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের কেন নেওয়া হবে না? এসসএসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা নিয়ে নানা বিতর্ক আছে। পিএসসি পরীক্ষা নিয়ে তো বিতর্ক নেই। তা হলে পিএসসি-র পরীক্ষা হবে না কেন,’’ প্রশ্ন ওই শিক্ষক-নেতার।

এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু ফোনে তাঁকে পাওয়া যায়নি, এসএমএস করা হলেও তার কোনও উত্তর মেলেনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Schools Controversy

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy