Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Rampurhat

Rampurhat Clash: বগটুই-কাণ্ডের শুনানি শেষ হাই কোর্টে, প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ রায় দিতে পারে শুক্রবার

আদালতের নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবারই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় কেস ডায়েরি জমা দেন। তিনি বলেন, ‘‘সিসিটিভি ক্যামেরা ইনস্টল করার কথা বলা হয়েছিল। বুধবার হাই কোর্ট সেই নির্দেশ দিয়েছিল। সন্ধ্যাবেলা নির্দেশের প্রতিলিপি হাই কোর্টের সাইটে আসে। তার পর তা জেলায় পাঠানো হয়। এখন সেখানে ৩১টি সিসিটিভি ক্যামরা লাগানো হয়েছে।’’

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২২ ১৮:৫২
Share: Save:

বগটুই হত্যাকাণ্ড মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার শেষ হল কলকাতা হাই কোর্টে। আগুনে পুড়ে আট গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় হাই কোর্টে গৃহীত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা-সহ পাঁচটি মামলার শুনানি হয় একত্রে। হাই কোর্টের নির্ধারিত সময়ের পরও বাড়তি সময় নিয়ে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ শুনানি শেষ করে। তবে বৃহস্পতিবার এই মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়নি। শুক্রবার রায় দিতে পারে হাই কোর্ট।

রামপুরহাটের বগটুইয়ে আট জন গ্রামবাসীর আগুনে পুড়ে মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ফের হয় রামপুরহাট-কাণ্ডের শুনানি। শুনানির শুরুতেই আদালতে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা ইনস্টল করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে গিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন এবং এমন কিছু মন্তব্য করেছেন যাতে তদন্তের ক্ষতি হতে পারে।’’

প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতি শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, তদন্ত-সহ কেস ডায়েরির রিপোর্ট বৃহস্পতিবার জমা করতে হবে আদালতে। নিশ্চিত করতে হবে, ওই জায়গার কোনও তথ্য নষ্ট হয়নি। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগাতে হবে। আদালতের নির্দেশ ছাড়া সিসি ক্যামেরার রেকর্ডিং যেন বন্ধ করা না হয়। জেলা আদালতের বিচারকের তত্ত্বাবধানে সিসিটিভি নজরদারি (মনিটরিং) করা হবে। পাশাপাশি, ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়ার কথাও বলা হয়। দুই বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং আইজি-কে সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনও ভাবেই তাঁদের হুমকি বা ভয় দেখানো যাবে না।

আদালতের নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবারই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় কেস ডায়েরি জমা দেন। তিনি বলেন, ‘‘সিসিটিভি ক্যামেরা ইনস্টল করার কথা বলা হয়েছিল। বুধবার হাই কোর্ট সেই নির্দেশ দিয়েছিল। সন্ধ্যাবেলা নির্দেশের প্রতিলিপি হাই কোর্টের সাইটে আসে। তার পর তা জেলায় পাঠানো হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ করা হয় পূর্ব বর্ধমানের জেলা বিচারককে। এখন সেখানে ৩১টি সিসিটিভি ক্যামরা লাগানো হয়েছে।’’

যদিও আবেদনকারী পক্ষ এখনও সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় রয়েছেন। বৃহস্পতিবার আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় দাবি তোলেন, নন্দীগ্রামের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। এ ক্ষেত্রেও রাজ্য পুলিশ বা সিট নয়, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। তাতে নজরদারি করবেন হাই কোর্টের কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। তিনি আরও বলেন, ‘‘সিট এবং পুলিশের উপর প্রভাব খাটানো হতে পারে। তাই সিবিআই-কে দেওয়া হোক এই তদন্তের ভার। ইতিমধ্যে রাজ্যের ডিজি তদন্ত না করেই বলে দিয়েছেন ওই ঘটনা রাজনৈতিক নয়।’’

শামিম আহমেদ বলেন, ‘‘‘কয়লা পাচার মামলায় ইডি জ্ঞানবন্ত সিংহকে নোটিস দিয়েছিল। তিনি ওই পাচারে যুক্ত। আর তাঁকেই কী ভাবে সিটে রাখা হল। তথ্য প্রমাণ লোপাট করতেই কি এই পদক্ষেপ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বুধবারই বলেছিলাম কেয়াম শেখ অন্যতম সাক্ষী। গ্রামের এক নাবালিকাও ওই ঘটনার অনেক কিছু প্রত্যক্ষ করেছে। পুলিশ এখনও কোনও বয়ান রেকর্ড করেনি। এখন সে কোথায় রয়েছে তা-ও জানা নেই।’’ আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেন, তাতে অসুবিধা নেই। কিন্তু তিনি কী ভাবে রাজ্য ডিজিকে বলতে পারেন, কী কী করতে হবে?’’

মামলার শুনানি হাই কোর্টের কাজের নির্ধারিত সময়ের পরেও চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। জানানো হয় হাই কোর্টের কাজের নির্ধারিত সময় শেষ হলেও এই মামলার শুনানি চলবে। কোনও আইনজীবীর অসুবিধা না থাকলে কোর্টের সময় পেরিয়ে গেলেও মামলা শোনা হবে। মামলার গুরুত্ব অনুধাবন করেই এই সিদ্ধান্ত। পৌনে ৫টা নাগাদ শেষ হয় শুনানি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE