Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কাচবিদ্ধ বাস-চালকের তৎপরতায় রক্ষা যাত্রীর

শনিবার সকালে প্রকাশ সাহা নামে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার (এসবিএসটিসি) ওই চালকের তৎপরতার জন্যই ধনেখালির কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে তাঁরা রেহাই পেয়েছেন বলে মানছেন ওই বাসের যাত্রীরা।

সেই বাস। (ইনসেটে) চালক প্রকাশ সাহা। —নিজস্ব চিত্র।

সেই বাস। (ইনসেটে) চালক প্রকাশ সাহা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০৯
Share: Save:

আচমকা ভেঙে গিয়েছিল বাসের উইন্ডস্ক্রিন। টুকরো টুকরো কাচ বিঁধে গিয়েছিল চালকের চোখ-মুখ-বুকে। রক্ত ঝরতে দেখেও তিনি ভয় পাননি। বাসের প্রবল গতি নিয়ন্ত্রণ করে নিরাপদে রাস্তার পাশে থেমেছেন। তার পরে যাত্রীদের শুশ্রুষা নিয়ে ফের বাস চালিয়েছেন।

শনিবার সকালে প্রকাশ সাহা নামে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার (এসবিএসটিসি) ওই চালকের তৎপরতার জন্যই ধনেখালির কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে তাঁরা রেহাই পেয়েছেন বলে মানছেন ওই বাসের যাত্রীরা। সহকর্মীরাও প্রশংসা করছেন প্রকাশবাবুর। কিন্তু প্রকাশবাবু কৃতিত্ব নিতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘যাত্রীদের যে নিরাপদে পৌঁছে দিতে পেরেছি, এটাই অনেক। উইন্ডস্ক্রিন ভাঙায় মুহূর্তের জন্য চোখে যেন ধুতরো ফুল দেখলাম। পরেই অবশ্য সামলে নিই।’’ তবে কেন উইন্ডস্ক্রিন ভাঙল, সেটি নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেননি তিনি।

ওই বাসের যাত্রী এবং এসবিএসটিসি সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে বর্ধমানের নবাবহাট থেকে সল্টলেকের করুণাময়ীগামী বাসটি ছাড়ে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে বাসটি চলছি‌ল। ছিলেন পঞ্চাশ জনেরও বেশি যাত্রী। গাড়ির গতি তখন একশো কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা ছুঁইছুঁই। সওয়া সাতটা নাগাদ সিঙ্গুরের কিছুটা আগে আচমকাই বাসটির উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে যায়। চালক প্রকাশবাবুর মুখে-মাথায় কাচ বিঁধে যায়। তাঁর পিছনে বসে থাকা দু’-তিন জন যাত্রীও জখম হন। মুহূর্তের বিহ্বলতা কাটিয়ে তিনি ধীরে ধীরে বাসটিকে রাস্তার ধারে দাঁড় করান। যাত্রীরাই প্রকাশবাবুর শুশ্রুষা করেন। পরে ওই অবস্থাতেই তিনি যাত্রীদের নিয়ে ডানলপে পৌঁছন। সেখানে পিছনের দু’টি বাসে যাত্রীদের তুলে দেন। পরে বেলঘরিয়া ডিপোতে বাস রেখে সাগর দত্ত হাসপাতালে যান। সেখানে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা হয়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্রকাশবাবুর বাড়ি কলকাতার বরাহনগরে। সন্ধ্যায় মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চোখেও আঘাত লেগেছে। চক্ষু-চিকিৎসকের কাছে যাবেন। সল্টলেকের একটি বেসরকারি ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক স্বর্ণদীপ গোস্বামী ছিলেন ওই বাসে। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ঘটনায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। চোখ-মুখে কাচ বিঁধে যাওয়া অবস্থাতেও চালক অসম্ভব দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামলালেন। ওই গতিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতেই পারত। ভাবলেই শিউরে উঠছি। কিন্তু চালক মাথা ঠান্ডা রেখে খারাপ কিছু হতে দেননি। ওঁকে ধন্যবাদ।’’ এসবিএসটিসি-র বর্ধমান ডিপোর এক কর্মীও বলেন, ‘‘ওঁর সত্যিই প্রশংসা প্রাপ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SBSTC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE