শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মাধ্যমিক শিক্ষিকার চাকরি হারিয়েছেন মুর্শিদাবাদের মহুয়া ঘোষ-সহ চার জন। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাউন্সেলিং পর্বে অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছিলেন, মামলাকারীদের মেধার বিবেচনা করে ও নথিপত্র যাচাই করে উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিংয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (এসএসসি)। তবে এই চার জন চাকরিপ্রার্থী এসএসসি-র খাতায় ‘অবৈধ’ কি না, সেই তথ্যও যাচাই করবে এসএসসি। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “কমিশনের দুর্নীতি এবং গাফিলতিতে চাকরি হারিয়েছেন শিক্ষকেরা। তাই কমিশনকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে এবং যোগ্য চাকরিহারাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে।”
সূত্রের খবর, বুধবার সেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ায় যোগ দেন মহুয়া-সহ চার জন। কাউন্সেলিং সুষ্ঠু ভাবেই শেষ হয়েছে। নিয়মমাফিক এ বার সুপারিশপত্র ও নিয়োগপত্রের ভিত্তিতে নতুন পদে যোগ দেওয়ার কথা তাঁদের।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারানোর পরে উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগের কাউন্সেলিংয়ে সুযোগ চেয়ে মামলা করেন মহুয়া-সহ ওই চার জন। শুনানিতে মহুয়ার আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত ও অর্ক নন্দীর অভিযোগ ছিল, মেধা তালিকাভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে দিচ্ছে না স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ প্রাথমিক, দুই পর্যায়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণ হন মহুয়া। মাধ্যমিকের নিয়োগ হলেও বহু আইনি জট কাটিয়ে সম্প্রতি উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ শুরু হয়েছে। তাই সেই সময়ে তিনি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকতায় যোগ দেন। পরে সেই চাকরি করার সময়ে উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিংয়ে যেতে পারেননি। বাকি তিন জনের ক্ষেত্রেও একই যুক্তি ছিল।
এসএসসি-র কৌঁসুলি সুতনুকুমার পাত্র কোর্টে দাবি করেন, এর আগে কাউন্সেলিংয়ের সময় অনুপস্থিত প্রার্থীদের পরবর্তী কালে সুযোগ না দেওয়ার নিয়ম রয়েছে কমিশনের। মামলাকারীদের অনুমতি দিলে, যে তালিকাভুক্ত প্রার্থীরা অন্য কোনও জায়গায় চাকরি করেননি, তাঁরা চাকরির সুযোগ হারাবেন। সেই যুক্তি মানেননি বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ, মামলাকারীদের কাউন্সেলিংয়ে সুযোগ দিতে হবে। কাউন্সেলিংয়ের ফলাফল হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে কোর্টে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৪ জুলাই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)