Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Climate Change

Climate Change: জলবায়ু বদলে সঙ্কট ভূগর্ভস্থ জলেও

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানের অধ্যাপক তড়িৎ রায়চৌধুরী জানাচ্ছেন, জলবায়ু বদলের পিছনে যেমন অরণ্যনিধন ও কার্বন নির্গমন দায়ী, তেমনই জলের সঙ্কটের জন্যও দায়ী মানুষই। কারণ, নির্বিচারে যে-হারে মাটি থেকে জল তুলে চাষের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জলের ব্যবসা হচ্ছে, তাতে ভূগর্ভের জলের সঙ্কট বাড়ছে।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২২ ০৬:৫৮
Share: Save:

সাগরপাড়ের বঙ্গভূমি জলবায়ু বদলের বিপদ টের পেয়েছে। সেই পরিবর্তন কি এ বার পশ্চিমবঙ্গের ভূগর্ভের জলেও থাবা বসাতে চলেছে?

সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ‘ইন্টার-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি) প্রকাশিত ষষ্ঠ রিপোর্টে সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদদের একাংশ। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, জলবায়ুর এই বদল খরার দাপট বাড়াবে।

ভূগর্ভে জলের সঙ্কটও দেখা দিয়েছে ইতিমধ্যে। তা উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকবে। অনেক পরিবেশবিদ বলছেন, নির্বিচারে জল উত্তোলনের ফলে কলকাতা-সহ রাজ্যের বহু এলাকাতেই ভূগর্ভের জলের ভাঁড়ার হুহু করে কমছে। তার উপরে জলবায়ু বদলের প্রভাব পড়লে বিপদের আশঙ্কা কয়েক গুণ বাড়বে।

কী ভাবে এই বিপদ আসছে, সেই সম্পর্কে পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর ব্যাখ্যা, জলবায়ু বদলের ফলে বৃষ্টিপাতের চরিত্র যে-ভাবে বদলাচ্ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভূগর্ভে জলের ভাঁড়ার কমছে। তিনি বলেন, ‘‘কোথাও অতিবৃষ্টি হচ্ছে, কোথাও বা খরা! যেখানে খরা হচ্ছে, সেখানে ভূগর্ভের জলের উপরে নির্ভরশীলতা বাড়ছে। অন্য দিকে ভূগর্ভের ভাঁড়ার পূরণ হচ্ছে না।’’ অর্থাৎ আয় শূন্য, উল্টে ব্যয় বেড়েই চলেছে। পরিবেশবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, অল্প সময়ে অতিবৃষ্টি ভূগর্ভের জলভান্ডার পূরণের অনুকূল নয়। ‘‘দীর্ঘ সময় ধরে নির্দিষ্ট ছন্দে বর্ষণই ভূগর্ভের ভাঁড়ার পূরণের জন্য উপযোগী,’’ বলছেন স্বাতীদেবী।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানের অধ্যাপক তড়িৎ রায়চৌধুরী জানাচ্ছেন, জলবায়ু বদলের পিছনে যেমন অরণ্যনিধন ও কার্বন নির্গমন দায়ী, তেমনই জলের সঙ্কটের জন্যও দায়ী মানুষই। কারণ, নির্বিচারে যে-হারে মাটি থেকে জল তুলে চাষের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জলের ব্যবসা হচ্ছে, তাতে ভূগর্ভের জলের সঙ্কট বাড়ছে। এ ভাবে নির্বিচারে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসই মানবসভ্যতার সব থেকে বড় বিপদ বলে মনে করেন ওই অধ্যাপক।

পরিবেশবিদেরা এটাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, রাজ্যের নদনদী যে-ভাবে নষ্ট হয়েছে, তার জন্যও ভূগর্ভের জল তুলতে হচ্ছে অতিরিক্ত হারে। কারণ, নদনদী নষ্ট হওয়ায় তার সঙ্গে যুক্ত প্রাকৃতিক সেচ ব্যবস্থাও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আইপিসিসি-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদীর উপরেও জলবায়ু বদলের প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। হিমবাহের অতিরিক্ত গলনের ফলে উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে জলের চরিত্র বদলের সম্ভাবনা আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Climate Change Groundwater Environment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE