Advertisement
E-Paper

ওষুধের জের, কোপ চিংড়ি রফতানিতে

পশ্চিমবঙ্গ থেকে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে ৫০ হাজার টনের মতো চিংড়ি রফতানি হয়। টাকার অঙ্কে যা ৪০০০ কোটির মতো। মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ধরা পড়ার ফলে পুজোর আগেই বাংলার চিংড়ির বেশ কিছু বরাত বাতিল করে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৮

অ্যান্টিবায়োটিকের ভূত রাজ্যের চিংড়ি রফতানি শিল্পের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে। ভূত তাড়াতে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের চিংড়ি রফতানি সংস্থাগুলি। সংশ্লিষ্ট শিল্প মহলের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্য কড়া পদক্ষেপ না করলে অচিরেই ইউরোপের দেশগুলিতে ব্রাত্য হবে বাংলার চিংড়ি।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে ৫০ হাজার টনের মতো চিংড়ি রফতানি হয়। টাকার অঙ্কে যা ৪০০০ কোটির মতো। মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ধরা পড়ার ফলে পুজোর আগেই বাংলার চিংড়ির বেশ কিছু বরাত বাতিল করে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ। এতেই অশনি সঙ্কেত দেখছে রাজ্যের সমুদ্রপণ্য রফতানিকারক সংস্থাগুলি। তাদের দাবি, চাষিদের অজ্ঞানতার কারণে অ্যান্টিবায়োটিক যুক্ত এক শ্রেণির ওষুধ দেদার ব্যবহার করার ফলে বিপদ ঘনিয়ে এসেছে। চিংড়ির শরীরে মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ঢুকে গিয়ে ইউরোপের দেশগুলিতে বাংলার চিংড়ি ক্রমশ ‘ভিলেন’ হয়ে উঠছে। অথচ চিংড়ির হাত ধরেই গত কয়েক বছরে রাজ্যের রফতনি শিল্প অনেকটা ফুলেফেঁপে উঠেছে। এই অবস্থায় চাষিদের সচেতন করে তোলার পাশাপাশি ড্রাগ কন্ট্রোলারের মাধ্যমে কিছু ওষুধ ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছে রাজ্যের সমুদ্রপণ্য রফতানিকারক সংস্থাগুলির সংগঠন। বিষয়টি ইতিমধ্যেই তারা মৎস্য দফতরকে জানিয়েছে।

সমুদ্রপণ্য রফতানিকারক সংস্থাগুলির সর্বভারতীয় সংগঠনের এ রাজ্যের সভাপতি রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মৎস্যচাষিদের একাংশ কিছু সংস্থার অ্যান্টিবায়োটিক যুক্ত ওষুধ যথেচ্ছ ব্যবহার করছে। ফলে সুনাম হারাচ্ছে এ রাজ্যের
চিংড়ি। রাজ্যের হস্তক্ষেপ ছাড়া এটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে এই বিপদের কথা তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের রফতানি পর্যবেক্ষণ পর্ষদের নির্দেশিকা অনুযায়ী চিংড়ি চাষে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ।

তবে এই সমস্যা আগেও মাথা চাড়া দিয়েছিল। তখন চাষিদের বুঝিয়ে সঙ্কট সামলে নিয়েছিল রফতানি সংস্থাগুলি। কিন্তু লাগাতার এই সমস্যা চলতে থাকলে আগামী দিনে এ রাজ্যের চিংড়ির সমস্ত বরাত বাতিল হতে পারে বলে শঙ্কিত রফতানিকারকরা। কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকও চিংড়িতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের বৃদ্ধি নিয়ে বিশেষ ভাবে চিন্তিত। মন্ত্রক মনে করছে, ভারত থেকে সমুদ্রপণ্য রফতানি সংক্রান্ত নিয়মকানুন আরও কড়া করতে চলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়। মাত্রাতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের জেরে সম্প্রতি বিপদে পড়েছে ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুও। সূত্রের দাবি, অন্ধ্রপ্রদেশের চিংড়ি রফতানিকারক সংস্থাগুলির দাবি মেনে সে রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলারকেও এ ব্যপারে সতর্ক করা হয়েছে। তার পরেই সে রাজ্যের সরকার চিংড়িতে ওষুধ ব্যবহার আটকাতে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে।

west bengal Shrimp Export Prawn চিংড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy