উচ্চপ্রাথমিকের শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা (এসএলএসটি) চাকরিপ্রার্থীরা শুক্রবার হাই কোর্টে আইনজীবী তথা রাজ্যসভার সিপিএম সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন হাই কোর্ট চত্বরে। তাঁদের অভিযোগ, বিচারপতির সঙ্গে ‘আঁতাত’ করে বিকাশ তাঁদের নিয়োগে বাধা দিচ্ছেন। শনিবার তাঁরাই তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে পাশে নিয়ে বিকাশ, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীদের পুরনো ছবি দেখিয়ে প্রশ্ন তুললেন, বামেদের কোনটা ‘মুখ’ আর কোনটা ‘মুখোশ’? পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিকাশ, সুজনও।
সুপ্রিম কোর্টের সুপারনিউমেরারি পদ (অতিরিক্ত শূন্যপদ) নিয়ে নির্দেশের পরেও উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ মামলার কোনও অগ্রগতি হয়নি কলকাতা হাই কোর্টে। চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, বিচারপতির সঙ্গে বিকাশের ‘আঁতাঁত’ রয়েছে। তার জেরেই এই মামলার অগ্রগতি হচ্ছে না। শনিবার তাঁরা ছবি দেখিয়ে দাবি করেন, তাঁদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন বিকাশ-সহ বাম নেতারা। বিধায়ক থাকাকালীন সুজন চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।
এসএসসি-র মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রায় ছ’হাজার অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় এবং রাজ্য মন্ত্রিসভারও অনুমোদন ছিল ওই সিদ্ধান্তে। তবে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ওই অতিরিক্ত শূন্যপদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত আইনসঙ্গত নয়। এমনকি, প্রয়োজনে ওই সিদ্ধান্তে যুক্ত মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে সিবিআই— এমন নির্দেশও দেয় আদালত। তবে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা গেলে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দেয়। কিন্তু তার পরে জটিলতা কাটেনি।
তৃণমূল নেতা কুণালের বক্তব্য, ‘‘সিপিএম দ্বিচারিতা করছে। ওঁদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন কিছু উকিল, যাঁরা এখন বিরোধিতা করছেন। সেই টাকা ওঁরা ফেরত চান।’’ তাঁর এ-ও দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন চাকরি দিচ্ছেন, কিন্তু সিপিএমের উকিলেরা আদালতে তার বিরোধিতা করে জট পাকাচ্ছেন।’’
পাল্টা বিকাশ বলেন, ‘‘যে দাবিতে আন্দোলনমঞ্চে গিয়েছিলাম, সেই দাবিতে আজও আছি। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হোক। সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি করা কোনও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নয়। ওটা দুর্নীতিকে আড়াল করার কৌশল।’’ সুজনের বক্তব্য, ‘‘মেধার ভিত্তিতে এবং স্বচ্ছ নিয়োগের কথা আমরা গোড়া থেকে বলে আসছি। আজও বলছি। মুখ্যমন্ত্রী চাইলে স্বচ্ছ নিয়োগ করতে পারতেন। উনিই সেটা করেননি বলে জট পেকেছে।’’