ডিভিসি-র দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের (ডিটিপিএস) বন্ধ পড়ে থাকা ৪ নম্বর ইউনিট চালুর দাবিতে বুধবার কলকাতায় ডিভিসি টাওয়ারের সামনে আইএনটিটিইউসি-র অবস্থান-বিক্ষোভে যোগ দিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বিদ্যুৎমন্ত্রী সেখানে বলেন, ‘‘কোনও ভাবেই ডিটিপিএস বন্ধের চক্রান্ত মানা হবে না।’’ বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরেও একই দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আইএনটিটিইউসি।
১৯৬৬-তে মায়াবাজারে দু’টি ৭৫ মেগাওয়াট ও একটি ১৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ইউনিট সম্বলিত ডিটিপিএস গড়ে তোলে ডিভিসি। ১৯৮২-র সেপ্টেম্বরে ২১০ মেগাওয়াটের চতুর্থ ইউনিটটি চালু হয়। কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের জেরে ১৯৮৫ সালে প্রথম দু’টি ইউনিট বন্ধ হয়। ২০১৬-র মার্চে বন্ধ হয়ে যায় তৃতীয় ইউনিটটি। ২০১৯-এর এপ্রিল-মে’তে চতুর্থ ইউনিটটির রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। জুনে শুরু হয় উৎপাদন। কিন্তু এর পরে মাঝে-মধ্যেই তা খারাপ হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মাস ছ’য়েক আগে থেকে পুরোপুরি উৎপাদনহীন হয়ে পড়ে আছে ইউনিটটি।
এই পরিস্থিতিতে ডিটিপিএস বন্ধ করার পরিকল্পনা চলছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের। ডিটিপিএস পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রায় চারশো স্থায়ী এবং ন’শো অস্থায়ী ও ঠিকাকর্মীরও। তাঁদের দাবি, ২০১৭-র জুনে ডিভিসি এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন কমাতে ২৫ বছরের বেশি পুরনো ইউনিটগুলিকে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ডিটিপিএস-এর চতুর্থ ইউনিটটি রয়েছে সেই তালিকায়। পাশাপাশি, ডিটিপিএস কলোনির বাসিন্দাদের অভিযোগ, টাউনশিপের রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। স্কুল, হাসপাতাল ধুঁকছে। ডিটিপিএস বন্ধ হলে লাগোয়া মায়াবাজার, পুরষা, অঙ্গদপুর, অর্জুনপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা।
অবিলম্বে চতুর্থ ইউনিট চালু করা এবং নতুন ইউনিট গড়ার দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠন আন্দোলন হয়েছে। বুধবার কলকাতায় আইএনটিটিইউসি-র অবস্থান বিক্ষোভে বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গেই ছিলেন দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তি, প্রাক্তন সাংসদ মমতাজ সঙ্ঘমিতা, দুর্গাপুরের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বরূপ মণ্ডল প্রমুখ। প্রাক্তন সাংসদ বলেন, ‘‘সংসদে ডিটিপিএস-এর প্রসঙ্গ কয়েকবার তুলেছিলাম। পুরনো ইউনিটের আধুনিকীকরণ ও ডিটিপিএস-এর পুনরুজ্জীবনের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কথা কানে তোলেনি।’’