পুজোর পরে ফল প্রকাশ করবে এসএসসি। নভেম্বর মাসে প্রকাশ করা হবে ইন্টারভিউ প্যানেল। রবিবার এসএসসির পরীক্ষাশেষে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রবিবার এসএসসির পরীক্ষার শেষে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ভাবে শেষ হয়েছে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। পরে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র আপলোড করা হবে। নভেম্বরে ইন্টারভিউ প্যানেল প্রকাশিত হবে।’’
ব্রাত্য জানান, দু’বছর ধরে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে শেষ পর্যন্ত এই পরীক্ষা সম্পন্ন হল। এসএসসির শিক্ষকপদে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫ লক্ষ ৬৬ হাজার। তার মধ্যে নবম-দশম শ্রেণির জন্য পরীক্ষায় বসেছিলেন ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ১৯২ জন। আর ২ লক্ষ ২৯ হাজার ৪৯৭ জন বসেছেন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য।
রবিবার শিক্ষামন্ত্রী জানান, কয়েক দিনের মধ্যে প্রশ্ন এবং উত্তরপত্র প্রকাশ করা হবে। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে মতামত নেওয়া হবে। এর জন্য তাঁদের পাঁচ দিন সময় দেওয়া হবে। তার পরে কারা ইন্টারভিউ দেবেন, সেটাও প্রকাশ করা হবে ওয়েবসাইটে। এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানান, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর নবম-দশমের উত্তরপত্র আপলোড করা হবে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির উত্তরপত্র প্রকাশ হতে পারে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর। গত ৭ সেপ্টেম্বর ওই শ্রেণির পরীক্ষা হয়েছিল।
রবিবারের পরীক্ষাতেও বাইরের রাজ্য থেকে প্রার্থীরা এসেছেন। ওই প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে ব্রাত্যের আক্রমণ, পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থেকে ৩১ হাজার প্রার্থী এসেছিলেন পরীক্ষা দিতে। বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে সব চেয়ে বেশি প্রার্থী পরীক্ষা দিতে এসেছেন। এখন নিশ্চয় ডবল ইঞ্জিন সরকারের ঢক্কানিনাদ বুঝতে পারছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাইরের রাজ্য থেকে যাঁরা পরীক্ষা দিতে এসেছেন তাঁদের মধ্যে একটি বড় অংশ হল উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের। কারণ, এই রাজ্যগুলিতে কোনও চাকরি নেই। বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই তাঁরা বাংলায় এসে পরীক্ষা দিচ্ছেন।"
আরও পড়ুন:
রবিবার ছিল এসএসসির একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। পরীক্ষাশেষে প্রশ্নপত্র নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শোনা যায় পরীক্ষার্থীদের মধ্যে। নবম-দশম শ্রেণির পরীক্ষা তুলনামূলক সহজ হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন অনেক পরীক্ষার্থী। নিউটাউনের বাসিন্দা পরীক্ষার্থী অভিজিৎ ভক্ত বলেন, ‘‘প্রশ্ন ভাল হয়েছে। ৫৫ নম্বর পাব। চাকরি বাতিল হওয়ার পরে আন্দোলনের কারণে আমরা পরীক্ষা দিতে পেরেছি।’’ আরেক পরীক্ষার্থী স্মিতা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নবম-দশমের তুলনায় কিছুটা হলেও প্রশ্ন কঠিন হয়েছে।’’ উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ থেকে এ রাজ্যে পরীক্ষা দিতে এসেছেন মিতা যাদব। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের রাজ্যে প্রচুর শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু ৩-৪ বছর ধরে কোনও পরীক্ষাই হচ্ছে না। তাই পশ্চিমবঙ্গে পরীক্ষা দিতে আসতে হয়েছে।’’
রবিবার এসএসসির দু’টি পরীক্ষা শেষ হল। নির্বিঘ্নেই গোটা প্রক্রিয়া সামলানো গিয়েছে মনে করছেন এসএসসির আধিকারিকেরা। পরীক্ষাশেষের পরে বিকাশ ভবনে আলাদা করে রিপোর্ট জমা দেন এসএসসি চেয়ারম্যান। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, পরীক্ষা সংক্রান্ত সেই রিপোর্ট নবান্নে পাঠানো হবে।