Advertisement
E-Paper

মাটিই টাকা! নদীবক্ষের পলি তুলতে দরপত্রের পরিকল্পনা রাজ্যের, ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনার’ ক্ষতে প্রলেপ দিতে চায় নবান্ন

বীরভূম, দুই মেদিনীপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় জেলা প্রশাসনও এ বিষয়ে তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে বলে খবর। ২০২৬ সালের ভোটের আগে ভাঙন তথা প্লাবনপ্রবণ বিস্তীর্ণ এলাকা রাজ্য সরকারের কাছে অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজও শুরু হয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৫৮
State Government will call for tenders for the removal of river silt

এ বার থেকে আর রাজ্য সরকার নদীবক্ষ থেকে পলি তোলার কাজ করবে না। —ফাইল চিত্র।

গঙ্গা-সহ রাজ্যের নদীভাঙন রোধে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উদাসীনতা’ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নদীবক্ষ থেকে পলিমাটি তুলে গভীরতা বজায় রাখতে নতুন পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। এ বার থেকে আর রাজ্য সরকার পলি তোলার কাজ (ড্রেজ়িং) করবে না। তার জন্য দরপত্র ডাকা হবে। যে সংস্থা প্রতি কিউব বর্গমিটারে বেশি ‘রয়্যালটি’ বা ‘প্রিমিয়াম’ দেবে, তাদেরই সেই কাজের বরাত দেওয়া হবে। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শেই এমত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দুই ২৪ পরগনা এবং দুই মেদিনীপুরের বহু এলাকা ভাঙন-কবলিত। গঙ্গাভাঙনের প্রসঙ্গে প্রথমেই রাজ্যের তিন জেলা মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার নাম আসে। মালদহের মানিকচক থেকে বৈষ্ণবনগর পর্যন্ত প্রতি বছর ভাঙনে প্লাবিত হয় প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকা। তার মধ্যে পড়ে কালিয়াচক, মোথাবাড়ি-২, রতুয়া ১ নম্বর ব্লকও। কয়েক বছর আগে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা স্বয়ং। ভাঙনের ভ্রুকুটি রয়েছে পূর্ব বর্ধমান, হুগলির কিয়দংশেও।

গত রাজ্য বাজেটেই রাজ্য সরকার ‘নদীবন্ধন’ নামে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। ভাঙনের ঘটনা ঘটলে একই সঙ্গে আলোচনায় আসে পলি জমে গভীরতা কমে যাওয়ার বিষয়টিও। এ বার সেই কাজেই দরপত্র ডেকে বরাত দেবে রাজ্য। তার ফলে রাজ্যের কোষাগারেও অর্থ আসবে। মানস বলেন, ‘‘ধারাবাহিক ভাবে কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে এবং তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ীই কাজ চলছে।’’

বীরভূম, দুই মেদিনীপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় জেলা প্রশাসনও এ বিষয়ে তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে বলে খবর। ২০২৬ সালের ভোটের আগে ভাঙন তথা প্লাবনপ্রবণ বিস্তীর্ণ এলাকা রাজ্য সরকারের কাছেও অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা জানিয়েছেন, ঘাটালে গিয়েই তিনি মাস্টারপ্ল্যান উদ্বোধন করবেন। নামে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান হলেও প্রকল্পটি রূপায়িত হলে তার প্রভাব পড়বে হুগলি, হাওড়া এবং পূর্ব মেদিনীপুরেও। রাজ্য বাজেটে পৃথক ভাবে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা দেব লোকসভা ভোটের আগে রাজনীতি থেকে সরে যেতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ভোটে দাঁড়াতে রাজি হয়েছিলেন ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান রূপায়িত করার শর্তেই, যাকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যাখ্যা করেছিলেন ‘আবদার’ বলে। ভোটের পরে তারকা সাংসদের সেই ‘আবদার’ মিটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, রাজ্যে যে যে এলাকা ভাঙন বা প্লাবনপ্রবণ, তার সবই প্রায় গ্রামীণ এলাকা। যেখানকার জনসমর্থন তৃণমূলের ‘ভিত্তি’। ফলে প্রশাসনিক বিভিন্ন কাজে নবান্নের গ্রামীণ অভিমুখ স্পষ্ট। গত রাজ্য বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ হয়েছে গ্রামোন্নয়ন খাতে। জেলায় জেলায় বিভিন্ন নদীতে পলি তোলার কাজও বহরে বড় কর্মসূচি। তাতেই এ বার মনোনিবেশ করছে নবান্ন।

West Bengal government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy