Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কী চাই, টোকা দিন শুধু দরজায়

শহরের ট্রাফিক মোড়ের কাছে ফুটপাথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে যাওয়ার সময়েই চোখে পড়ল ‘মেক সিফ্ট’ বা অস্থায়ী দোকানগুলো। মোড়ের কাছে টেবিল পেতে চায়ের সরঞ্জাম নিয়ে বসেছেন দোরজে সুব্বা। বলছিলেন, ‘‘সবাই তো দোকান খুলে দিয়েছে। আমি বাদ যাই কেন!’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অনির্বাণ রায়
কার্শিয়াং শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৩৫
Share: Save:

ফুটপাথে আনাজ ঢেলে বিক্রি চলছে। আশপাশে উনুন গুছিয়ে চলছে চায়ের দোকান। তার পরেও যদি অন্য কিছু কিনতে চান, তা হলে একটু কষ্ট করতে হবে। হয় টোকা দিতে হবে দোকানের বন্ধ দরজায়, নয়তো উঠে যেতে হবে দোতলায়।

কারণ, টানা বন্‌ধের ঠেলায় এ কার্শিয়াঙের মধ্যে তৈরি হয়েছে আর একটা কার্শিয়াং!

আরও পড়ুন: প্রভাবশালীরা বাংলা বলেন কই, আক্ষেপ সভার

শহরের ট্রাফিক মোড়ের কাছে ফুটপাথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে যাওয়ার সময়েই চোখে পড়ল ‘মেক সিফ্ট’ বা অস্থায়ী দোকানগুলো। মোড়ের কাছে টেবিল পেতে চায়ের সরঞ্জাম নিয়ে বসেছেন দোরজে সুব্বা। বলছিলেন, ‘‘সবাই তো দোকান খুলে দিয়েছে। আমি বাদ যাই কেন!’’ কিন্তু চারদিকে তো সব দোকানেরই ঝাঁপ বন্ধ? দোরজে সুব্বা হেসে বললেন, ‘‘কী লাগবে বলুন না। শুধু দরজায় গিয়ে টোকা দিন।’’ পাশেই মোবাইলের শো রুম। এক যুবক শাটারে টোকা দিতেই চিচিং ফাঁক! দরজা খুলে দেওয়া হল ভিতর থেকে। এক ঝলকে দেখা গেল ভিতরে বেশ কয়েক জন। মিনিট পনেরো পরে পছন্দের সেট নিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে এলেন যুবক।

ফুটপাথে সার দিয়ে বসেছে শোলাকচু, স্কোয়াশ, আলু, পেঁয়াজের বাজার। হিলকার্ট রোডের ফুটপাথে পনির বিক্রি করছিলেন এক বৃদ্ধ। সেখানেও চায়ের গ্লাস হাতে কয়েক জনকে দেখা গেল। সঙ্গে আবার টা-ও। ‘‘সামোসা খাবেন?’’ প্রশ্ন বৃদ্ধের। ঘাড় নাড়তেই এক তরুণ এসে পথ দেখিয়ে দোতালায় নিয়ে গেলেন। উপর তলার ‘লজের’ রিশেপশন কাউন্টারে থরে থরে সাজানো মিষ্টি। গ্রাহকরা চাইলেই হাতে হাতে চলে আসছে ঘিয়ে ভাজা লাড্ডু, গরম শিঙাড়া।

এই বেচাকেনার ফাঁকে কিন্তু সকলের মুখে এক কথা: ‘‘আর কত দিন! আলোচনার দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে। এ বার তা হলে বন্‌ধ উঠবে।’’ এই আশা নিয়েই শিলিগুড়ি জংশনে মোটরচালকদের মুখে ফিরেছে সেই পুরনো ডাক: কার্শিয়াং, কার্শিয়াং। এই আশাতেই রোহিণী, জিরো পয়েন্টে নিরাপত্তারক্ষীদের তল্লাশি সত্ত্বেও পাহাড়ে উঠছে গাড়ি, পিকআপ ভ্যান, ট্রাকও। এই আশাতেই দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যাতায়াত শুরু করেছেন পাহাড়বাসী।

মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি কিছু বলতে চাননি। তবে মোর্চার এক নেতার কথায়, ‘‘কোথায় দোকান খুলল, তার থেকেও এখন গুরুত্বপূর্ণ হল নবান্নের বৈঠকে কি হয়।’’ তা-ও ওই একই আশাতেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE