লোকালয়ে বাঘের হানা সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামগুলির নিত্য সমস্যা। কুলতলি ও মৈপীঠ এলাকায় সাম্প্রতিককালে একাধিকবার লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে বাঘ। ফলে উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবার নাইলনের জালের বদলে স্টিলের নেট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও জেলা বন দফতর যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১০০ কিলোমিটার জঙ্গলঘেঁষা এলাকায় এই স্টিলের জাল বসাবে। বাঘ যাতে গ্রামে ঢুকতে না পারে, সেই ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করতেই এই নয়া উদ্যোগ বলে জানাচ্ছেন বন দফতরের আধিকারিকেরা। বন দফতর সূত্রের খবর, স্টিলের নেট বসানোর কাজটি সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হবে এবং শীতকালের আগেই বেশির ভাগ এলাকায় এই কাজ সম্পূর্ণ করার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন:
এর আগে লোকালয়ে বাঘের আগমন রুখতে নাইলনের জাল দিয়ে জঙ্গল ঘেরা হলেও, তা খুব একটা কার্যকরী হয়নি। বর্ষাকালীন ঝড়-বৃষ্টি ও জলস্রোতে জাল ছিঁড়ে যায়। উপরন্তু, মৎস্যজীবীরা নদী ও খাঁড়িতে মাছ, কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার সময় অনেক সময় ওই জাল কেটে যান। সেই ফাঁক গলেই লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। ফলে প্রতি বছর নতুন জাল বসাতে হয়, যার খরচও বেশি। এই সমস্যা এড়াতেই এবার স্টিলের জাল বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের হিসাব অনুযায়ী, ৪১ কিলোমিটার এলাকায় স্টিলের জাল বসালেই বাঘের ঢুকে পড়ার সমস্যা অনেকটাই কমবে।’’ গত কয়েক বছরে কুলতলিতে বহুবার বাঘের আনাগোনা লক্ষ্য করা গিয়েছে। ফলে এই এলাকাকে জাল দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে কুলতলির কিছু এলাকায় পরীক্ষামূলক ভাবে স্টিলের ফেন্সিং বসানো হয়েছিল এবং সেগুলি এখনও ভাল অবস্থায় টিকে রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই এ বার বৃহত্তর পরিসরে এই জাল লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন দফতরের আশা, এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে এক দিকে যেমন বাঘের হানা রোখা যাবে, অন্য দিকে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধও অনেকটা বৃদ্ধি পাবে।