Advertisement
E-Paper

৫ বছরের শিশুকে নিয়ে উধাও রাশিয়ান মা! যেখান থেকে হোক খুঁজে বার করুন: চন্দননগরের মামলায় কেন্দ্রকে সুপ্রিম কোর্ট

চন্দননগরের বোসপাড়ার বাসিন্দা সৈকত বসু। বিদেশে কাজের সূত্রে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল রাশিয়ান নাগরিক ভিক্টোরিয়ার। ২০২০ সালে তাঁদের সন্তানের জন্ম হয়। অভিযোগ, গত ৭ জুলাই থেকে মা এবং সন্তান নিখোঁজ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫ ১৬:২৬
চন্দননগরের বাসিন্দা সৈকত বসুর অভিযোগ, তাঁর সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন রাশিয়ান স্ত্রী।

চন্দননগরের বাসিন্দা সৈকত বসুর অভিযোগ, তাঁর সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন রাশিয়ান স্ত্রী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পাঁচ বছরের সন্তানকে নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছেন রাশিয়ান মা! তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না গত ৭ জুলাই থেকে। ছেলেকে ফিরে পেতে তাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন চন্দননগরের বাসিন্দা সৈকত বসু। আদালত অবিলম্বে ওই রাশিয়ান মহিলাকে খুঁজে বার করার নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং বিদেশ মন্ত্রককে লুকআউট নোটিস জারি করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। সেই সঙ্গে দিল্লি পুলিশকেও পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, কোনও সময় নষ্ট না করে সন্তান-সহ ওই মহিলাকে খুঁজে বার করতে হবে এবং বাবার হাতে শিশুকে তুলে দিতে হবে। রাশিয়ান মহিলা যাতে কোনও ভাবেই দেশের বাইরে যেতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে বলেছে আদালত। তার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিমানবন্দরগুলিতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে।

এ রাজ্যের হুগলি জেলার চন্দননগরের বোসপাড়ার বাসিন্দা সৈকত। বিদেশে কাজের সূত্রে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল ভিক্টোরিয়ার। তাঁরা বিয়ে করেন। ২০২০ সালে তাঁদের সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সংসারে নানা অশান্তির কারণে একটা সময়ের পর স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকতে শুরু করেন। দীর্ঘ দিন ধরেই ছেলের হেফাজত নিয়ে বাবা এবং মায়ের আইনি লড়াই চলছিল। আদালতের নির্দেশে তিন দিন ছেলেকে নিজের কাছে রাখার অনুমতি পেয়েছিলেন রাশিয়ান মহিলা। সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে শিশুর তার বাবার কাছে থাকার কথা ছিল। অভিযোগ, ৭ জুলাই স্কুলের সময়ের পর থেকে শিশু বা তার মায়ের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। মহিলার আইনজীবীরাও বাবাকে নানা ভাবে বিভ্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি বৃহস্পতিবার হয়েছে শীর্ষ আদালতে।

শিশুর বাবার আইনজীবী জানিয়েছেন, রাশিয়ান মহিলাকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল গত ৪ জুলাই। পিছনের দরজা দিয়ে তিনি দিল্লিতে রাশিয়ান দূতাবাসে প্রবেশ করেছিলেন বলে অভিযোগ। সেখানকার এক কূটনীতিক তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশ—

  • দিল্লির পুলিশ কমিশনার এবং ডিফেন্স কলোনি থানার এসএইচও-কে ওই শিশুকে খুঁজে বার করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রাশিয়ান মহিলার পাসপোর্টও বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
  • কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং বিদেশ মন্ত্রককে লুকআউট নোটিস জারি করতে হবে এবং মহিলা যাতে দেশ ছাড়তে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • রাশিয়ান দূতাবাসের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবে বিদেশ মন্ত্রক। যে কূটনীতিকের সঙ্গে মহিলাকে শেষ বার দেখা গিয়েছে, তাঁর বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালানোর জন্য অনুমতি চাইতে হবে।

উল্লেখ্য, আদালতে মহিলার আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু মহিলা বা তাঁর সন্তান কোথায়, সে বিষয়ে তাঁরা স্পষ্ট করে কোনও উত্তর দেননি।

আদালতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিশুর বাবা এবং ঠাকুরমা। সৈকত বলেন, ‘‘আমার ছেলের বয়স চার বছর আট মাস। কিন্তু ওর মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা চলে এসেছে এই বয়সেই। নিজেকে নিজে আঘাত করতে শুরু করে দিয়েছিল ও। বলত, আমি ওদের সঙ্গে থাকতে চাই না। মনে হয়, জানলা থেকে ঝাঁপ দিই। আদালতের নির্দেশে আমি আশ্বস্ত হয়েছি। দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা আছে। আশা করছি, আমার ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাবে।’’ শিশুর ঠাকুরমা বলেন, ‘‘বাচ্চাটা আমাকে খুব ভালবাসে, আমাকে ছাড়া কিছু বোঝে না। দিল্লিতে নিয়ে আসার পর থেকে আমি কখনও আট মাস, কখনও আড়াই মাস এসে এখানে থেকে গিয়েছি। এখন ঘরটা খাঁ খাঁ করছে। আমি থাকতে পারছি না। আমাদের খাওয়া-ঘুম উড়ে গিয়েছে।’’ শুক্রবার দুপুর ২টোয় শীর্ষ আদালতে আবার এই মামলার শুনানি হবে।

Supreme Court Russia Russian Embassy Chandannagar Home Ministry Ministry of External Affairs
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy