Advertisement
E-Paper

ছয় সপ্তাহের মধ্যে সরকারি কর্মীদের ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ দিন: রাজ্যকে সুপ্রিম কোর্ট, পরবর্তী শুনানি অগস্ট মাসে

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ মহার্ঘভাতা দিয়ে দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই পরিমাণ ডিএ দিতে বলা হয়েছে। আগামী অগস্ট মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

Supreme Court asks West Bengal Government to give DA to the government employees

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৫ ১১:৩৪
Share
Save

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আপাতত ২৫ শতাংশ বকেয়া মহার্ঘভাতা দিয়ে দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। ছয় সপ্তাহের মধ্যে সকল কর্মচারীকে এই পরিমাণ ডিএ দিতে বলা হয়েছে। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ এ কথা জানিয়েছে। আগামী অগস্ট মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রথমে জানিয়েছিল, বকেয়া ডিএ-র ৫০ শতাংশ দিয়ে দিতে হবে রাজ্যকে। বিচারপতি করোলের মন্তব্য, ‘‘এই মামলায় ট্রাইব্যুনাল কোর্ট, হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ— সব জায়গার রায় আমরা খতিয়ে দেখেছি। সব ক্ষেত্রেই ডিএ-র পক্ষে রায় দেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু রাজ্যের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, ৫০ শতাংশ বকেয়া ডিএ দেওয়া এখনই সম্ভব নয়। তা হলে রাজ্য চালানো যাবে না। তখন আদালত জানায়, অন্তত ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ ছয় সপ্তাহের মধ্যে দিতেই হবে রাজ্য সরকারকে। বাকি বকেয়া ডিএ নিয়ে চূড়ান্ত শুনানি হবে অগস্টে।

মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘৫০ শতাংশ ডিএ দিতে বলেছিল আদালত। রাজ্যের আইনজীবী জানান, এই পরিমাণ ডিএ দিতে হলে রাজ্য সরকারের কোমর ভেঙে যাবে। অনেক দিন আগেই অবশ্য এই সরকারের কোমর ভেঙে গিয়েছে। যা-ই হোক, বিচারপতি জানান, অন্তত ২৫ শতাংশ ডিএ দিতে হবে। কর্মচারীরা এত দিন ঘুরছিলেন। আশার কথা, এই রায়ের পর সামান্য কিছু হলেও তাঁরা তাঁদের অধিকারের স্বীকৃতি পেলেন।’’

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীরা বর্তমানে ১৮ শতাংশ হারে ডিএ পান। কয়েক মাস আগে বাজেট বক্তৃতার সময়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছিলেন। তার পর ১৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ডিএ হয় ১৮ শতাংশ। সেই বর্ধিত ডিএ কার্যকর হয় ১ এপ্রিল থেকে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে এ রাজ্যের কর্মীদের মহার্ঘভাতার ফারাক এখনও ৩৭ শতাংশ। কেন্দ্রীয় কর্মীরা ৫৫ শতাংশ হারে ডিএ পান। এই নির্দেশের পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘হাতে এখনও অর্ডার পাইনি। পাওয়ার পর যা বলার বলব।’’ তবে শীর্ষ আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, ‘‘এই নির্দেশ পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি বিশাল জয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ডিএ কারও অধিকার নয়। সুপ্রিম নির্দেশে সিলমোহর পড়ল যে, ডিএ কর্মচারীদের অধিকার। আশা করব, সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘ দিন বঞ্চিত রাখার নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে তিনি পদত্যাগ করবেন।’’

সুপ্রিম কোর্টের শুক্রবারের নির্দেশে খুশি রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘কর্মচারীদের যে মহার্ঘভাতা প্রাপ্য, সেটা রাজ্য সরকার এত দিন অস্বীকার করছিল। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে এটা স্বীকৃতি পেল যে, এটা আমাদের প্রাপ্য। বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। আশা করি শেষ হলে পুরো বকেয়া ডিএ পাব।’’ আর এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘আমাদের দাবি যে ঠিক ছিল, এত দিনে তার মান্যতা পেলাম। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, হাই কোর্ট বা অন্য কোনও পর্যবেক্ষণে কোনও ভুল নেই। আমরা যারা দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তায়, তারা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেলাম।’’

২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর রাজ্যের ডিএ মামলা প্রথম বার সুপ্রিম কোর্টে উঠেছিল। ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বরের পর থেকে বার বার এই সংক্রান্ত শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। ১৮ বার শুনানি পিছিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে শুক্রবার মামলাটি ওঠে শীর্ষ আদালতে। আদালত জানায়, হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণে কোনও ভুল নেই। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের যে পরিমাণ বকেয়া মহার্ঘভাতা রয়েছে, তার মধ্যে আপাতত ২৫ শতাংশ দিয়ে দিতে হবে। পরবর্তী শুনানিতে বাকিটা দেখা যাবে।

কেন্দ্রীয় হারে এবং বকেয়া ডিএ-র দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। ২০২২ সালের ২০ মে হাই কোর্ট কেন্দ্রের সমতুল ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয় রাজ্যকে। কিন্তু হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেই মামলাতেই শুক্রবার ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ দেওয়ার কথা বলল শীর্ষ আদালত।

(এই খবর প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল, সরকারি কর্মচারীদের চার সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ)-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শনিবার এই মামলার লিখিত নির্দেশনামা প্রকাশের পর দেখা যায়, এই সময়সীমা চার নয়, ছয় সপ্তাহ। ভুল গোচরে আসার পর আমরা এই ভুল সংশোধন করে নিয়েছি। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা পাঠকদের কাছে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী)

DA Case Supreme Court

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।