Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
New Year

বর্ষবরণেই প্রকট হল অসচেতনতার ছবি

পিকনিকের ভিড়ে এক নম্বরে থেকেছে দিঘা। প্রায় কাউকেই করোনা বিধি মানতে দেখা যায়নি।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৩৭
Share: Save:

দীপাবলি হার মেনে গেল!

বাচ্চারা ঘুমোতে পারল না, বয়স্কদের কান ফাটার জোগাড়, অসুস্থদের ধড়ফড়ানি এক ধাক্কায় বেড়ে গেল কয়েক গুণ। সৌজন্যে, বর্ষবরণের রাত!

৩১ তারিখ রাতে যে পরিমাণ বাজি ফাটল রাজ্য জুড়ে, তেমনটা ফি-বছর ফাটে কালীপুজোয়। এ বছর করোনা আবহে কালীপুজো, দীপাবলিতে বাজির দাপট ছিল অনেকটাই কম। সেই খেদ মেটাতে যেন বর্ষবরণের রাতকেই বেছে নিলেন রাজ্যবাসীর একাংশ। উত্তর থেকে দক্ষিণ—সর্বত্রই আতশবাজি ও শব্দবাজিতে বর্ষবরণের হুল্লোড়ে মেতেছে আমজনতা।

জেলায় জেলায় এত বাজি কী ভাবে ফাটল, সেই প্রশ্নের পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

এখানেই শেষ নয়! নতুন বছরের প্রথম দিন বিধিনিষেধ উড়িয়ে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন পিকনিক স্পটগুলিতে। ডিজে-র দাপটও চোখে পড়েছে বহু জায়গায়।

কলকাতার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে শুক্রবার ভিড় হয়েছিল। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত জানান, তাঁদের ৫১ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। তবে ভিক্টোরিয়া, চিড়িয়াখানা, ময়দান সর্বত্রই মাস্কহীন অসচেতনতার ছবি প্রকট। চিড়িয়াখানায় মাস্ক পরা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে গোলমালে জড়ান এক যুবক। ভিড় হয়েছে সায়েন্স সিটিতে। সেখানে মাস্ক পরা লোকের হার ছিল বেশি। মাস্ক পরানো এবং স্যানিটাইজ় করায় তৎপর ছিলেন সায়েন্স সিটির কর্মীরাও।

পরিবেশকর্মীদের দাবি, কালীপুজোর মতো বাজির দৌরাত্ম্য রুখতে জেলাগুলিতে পুলিশের তৎপরতা দেখা যায়নি। কোচবিহারের ভবানীগঞ্জে অবশ্য বর্ষবরণের রাতে অভিযান চালিয়ে কিছু বাজি আটক করা হয়েছে।

গ্রামীণ হাওড়ার বাগনান, আমতা, উলুবেড়িয়া, শ্যামপুর— সর্বত্রই দেদার বাজি ফেটেছে। আরামবাগ শহরে রাত সাড়ে এগারোটা থেকে ঘণ্টা দেড়েক কার্যত বাজির তাণ্ডব চলে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। চন্দননগর কমিশনারেট এলাকায় ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরও হাবড়া থানা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে শব্দবাজির দাপট বেশি ছিল। ভাঙড়ের বিনোদন পার্কগুলিতে অবশ্য জলসার আয়োজন করা হয়নি। নদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে দেদার শব্দবাজি ফেটেছে। এ দিন সকাল থেকে নবদ্বীপ, মায়াপুর ও বেথুয়াডহরি অভয়ারণ্যে ভিড় হয়েছিল। কোভিড বিধি পালনের বালাই ছিল না বললেই চলে।

বৃহস্পতিবার রাত ১২টার আগে থেকে বর্ধমান, কাটোয়া, কালনা শহর-সহ বিভিন্ন এলাকায় বাজি ফাটতে শুরু করে। একই ছবি পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামেও। গভীর রাত পর্যন্ত দুর্গাপুর শহরের পাড়ায়-পাড়ায় বক্স বাজিয়ে অনুষ্ঠান হয়েছে। বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর শহরেও প্রায় সারা রাত সাউন্ডবক্স বেজেছে। বর্ষশেষের রাত ফিকে ছিল আসানসোল শিল্পাঞ্চলে।

পুলিশকর্তাদের একাংশ মানছেন, বর্ষবরণের রাতে বাজি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তেমন কোনও পরিকল্পনা ছিল না।

পিকনিকের ভিড়ে এক নম্বরে থেকেছে দিঘা। প্রায় কাউকেই করোনা বিধি মানতে দেখা যায়নি। তবে সে ভাবে সাউন্ডবক্স অবশ্য বাজেনি। কোলাঘাটে নিয়ম ভেঙে রূপনারায়ণ নদে কিছু পর্যটককে নৌকাবিহার করতে দেখা গিয়েছে। পুরুলিয়ার অযোধ্যা ও জয়চণ্ডী পাহাড়, দুয়ারসিনিতে থিকথিকে ভিড় ছিল। সাউন্ডবক্স বেজেছে তারস্বরে। অধিকাংশের মুখে মাস্ক ছিল না। অযোধ্যা পাহাড়ে পুলিশ মাস্ক বিলি করেছে। আসানসোলের কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে উপচে পড়া ভিড় হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

New Year Diwali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE