Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal

খরচ তোলায় আবগারিই পাখির চোখ করছে রাজ্য

আবগারি রাজস্বের খাতে ২০২০-২১ বছরে আদায় হয়েছিল ১০,৬৬৫ কোটি টাকা। ২০২১-২২ বছরে তা পৌঁছয় প্রায় ১৩,৫০০ কোটি টাকায়।

Representational image of tax.

চলতি আর্থিক বছরের (২০২২-২৩) বাজেটে আবগারি রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ১৬,৫০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। প্রতীকী ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫৯
Share: Save:

গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যের নিজস্ব রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। চলতি আর্থিক বছরের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হবে কি না, তা বোঝা যাবে রাজ্যের আসন্ন বাজেট অধিবেশনে।

তবে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নিজস্ব রাজস্বের অন্যতম বড় উৎস আবগারি ক্ষেত্রে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সমস্যা হবে না এ বছর। আধিকারিক মহলের অনেকেই জানাচ্ছেন, মদ খাওয়ার প্রবণতা তেমন না বাড়িয়েও শুধু কর কাঠামোর সংস্কারের মাধ্যমে আবগারি রাজস্বে লক্ষ্যপূরণ করতে চলেছে রাজ্য।

আবগারি রাজস্বের খাতে ২০২০-২১ বছরে আদায় হয়েছিল ১০,৬৬৫ কোটি টাকা। ২০২১-২২ বছরে তা পৌঁছয় প্রায় ১৩,৫০০ কোটি টাকায়। চলতি আর্থিক বছরের (২০২২-২৩) বাজেটে আবগারি রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ১৬,৫০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। অর্থকর্তারা জানাচ্ছেন, গত ৩১ জানুয়ারির মধ্যেই আবগারি রাজস্ব ১৩,৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। চলতি আর্থিক বছর শেষ হতে বাকি ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাস। এই গতিতে চললে সেই দুই মাসেও কম করেও দেড় হাজার কোটি টাকা, মোট তিন হাজার কোটি টাকা আয়ের আশা রাখা হচ্ছে। তাতে আর্থিক বছরের শেষে লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে যাওয়া অসম্ভব নয়।

প্রশাসনিক ব্যাখ্যায়, ২০১৭-১৮ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত সম্মিলিত বার্ষিক বৃদ্ধির হার এই খাতে হয়েছে ১১%। অন্যান্য রাজ্যে তা ঘোরাফেরা করছে ৬-৭%-এর মধ্যে। ২০১৪-১৫ বছর থেকে ধরলে এ পর্যন্ত প্রতি বছর রাজস্ব বৃদ্ধি হয়েছে গড়ে প্রায় ২১% করে। এক কর্তার কথায়, “বিদেশি বা দেশি মদ খাওয়ার প্রবণতা তুলনায় তেমন বাড়েনি। অবশ্য বিয়ারে তা বেড়েছে অনেকটাই। প্রশাসন মদ খাওয়াতে উৎসাহ দেয় না। শুধু কর ব্যবস্থা সঠিক ভাবে পরিচালিত করে এ কাজ করা হয়েছে।”

আবগারি বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, আগের কর ব্যবস্থায় মদের সর্বোচ্চ দাম যত বেশি হত, কর থাকত তত কম। এখন উৎপাদক সংস্থা সরবরাহকারীকে যে দামে মদ বিক্রি করছে, তার প্রতিটি স্তরের উপর আলাদা কর বসানো হয়েছে। ডিজিটাল পরিষেবায় মদের বাজার যুক্ত হয়ে যাওয়ায় সব ধরনের অনুমোদন-প্রক্রিয়ার সময় কমেছে। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী মদের জোগান নির্ধারণ করা যাচ্ছে।

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যের খরচের যে বহর, তা সামাল দিতে নিজস্ব আয় বাড়ানোটা একটি পথ। সেই দিক থেকে নিজস্ব আয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র আবগারির রাজস্ব আদায়ে জোর পড়ছে বিশেষ ভাবে। বাকি বিক্রয় কর (প্রধানত পেট্রল-ডিজ়েল), স্ট্যাম্প-রেজিস্ট্রেশন বাবদ আয়, বিদ্যুৎ-যানবাহনের কর, ভূমি রাজস্ব থেকে আয় হয় ঠিকই। কিন্তু তা আবগারির মতো এত বেশি রাজস্ব নিশ্চিত করে না। ফলে আগামী বাজেটের পরেও আবগারি ক্ষেত্রের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় সংস্কারের পদক্ষেপ উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Tax Excise
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE