Advertisement
E-Paper

বন্ধ স্কুলের বাগানে ফুটেছে ফুল, ফলেছে আনাজ

এই বিদ্যালয়ে প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়ারা পড়তে আসে এখনও। তবে টানা স্কুল বন্ধ থাকায় তাল কেটেছে নিয়মিত পড়াশোনায়।

বিদ্যুৎ মৈত্র

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৪৮
নবগ্রাম চক্রের ৪১ নম্বর নগরা নীরদা দেবী আদিবাসী নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের সবুজ প্রাঙ্গণে।

নবগ্রাম চক্রের ৪১ নম্বর নগরা নীরদা দেবী আদিবাসী নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের সবুজ প্রাঙ্গণে। নিজস্ব চিত্র।

দু’বছরের কাছাকাছি বন্ধ রয়েছে প্রাথমিক স্কুলের পড়াশোনা। কোথাও স্কুল ভবন ঢেকেছে আগাছায়, কোথাও স্কুলের বন্ধ লোহার গেটে ধরেছে মরচে। কিন্তু মুর্শিদাবাদ জেলার নবগ্রাম চক্রের ৪১ নং নগরা নীরদা দেবী আদিবাসী নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের মাঠ সবুজ রয়েছে। স্কুলের বাগানে ফুটেছে শীতের ফুল, ফলেছে আনাজ।

নগরা, নবগ্রাম থানার অন্তর্গত তফসিলি জাতি ও উপজাতি অধ্যুষিত কৃষিভিত্তিক প্রত্যন্ত গ্রাম। এখানে আদিবাসী পাড়া ও নগরা বাঙালি পাড়ার শিশুরা এলাকার একমাত্র এই প্রাথমিক বিদ্যালয়েই পড়তে আসে। এলাকায় শিক্ষার হার বেড়েছে। তবু এই বিদ্যালয়ে প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়ারা পড়তে আসে এখনও। তবে টানা স্কুল বন্ধ থাকায় তাল কেটেছে নিয়মিত পড়াশোনায়। অনেক পরিবারে এ বছর পড়াশোনায় গা ছাড়া ভাব। দীর্ঘ দিনের চেষ্টার ফলে বইমুখী হয়েছিল পিছিয়ে থাকা পরিবারের যে ছেলেমেয়েরা, তারা যাতে এই অতিমারির কারণে পড়াশোনার প্রতি ফের আগ্রহ না হারিয়ে ফেলে, সে জন্যই অভিভাবকদের সঙ্গী করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রথীন্দ্রনাথ সরকার ও সহ শিক্ষকরা মিলে স্কুলের এমন শিশু বান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছেন।

বিদ্যালয়ের ১২০ কাঠা জায়গার মধ্যে ৪০ কাঠা জুড়ে বাগান। পড়ুয়াদের ফল চেনাতে টবে লাগানো হয়েছে আমলকি, সবেদা, চেরি। বাগানে লাগানো হয়েছে গোলাপ, জবা ফুলের চারা। স্কুলেই আছে এলাচ, দারচিনি, তেজপাতা গাছ। আছে একটি ছোট্ট পুকুর। সেখানে মাছ চাষও হয়। এলাকার ১৮ জন মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি হয়েছে কিচেন গার্ডেন। সেখানে আনাজ চাষ হয়। আগে পড়ুয়াদের মিড ডে মিলে রান্না করে দেওয়া হত সে সব। আর সেই বাগান তৈরি থেকে ফুল ফোটা পর্যন্ত সব কৃতিত্ব সেই গ্রামবাসীদেরই দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক।

কিরীটেশ্বরী পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের লাল্টু হেমব্রম অবশ্য কৃতিত্ব দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষককে। তিনি বলেন, “স্কুলে নিয়মিত ক্লাস হত লকডাউনের আগে। কোন ছেলেটা স্কুলে আসছে না, কে অসুস্থ, সে সব বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়ে আসেন প্রধান শিক্ষক। স্কুলের বাগান পড়ুয়াদের জন্য এলাকার মানুষের সঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহ শিক্ষকেরা মিলিত ভাবে তৈরি করেছেন। তাঁদের আগ্রহ না থাকলে এই লকডাউনে অন্য স্কুলের মত এটাও আগাছায় ভরে যেত।”

চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রাক প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৯২ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে ওই স্কুলে। গত বছর থেকে এ বছর স্কুলে পড়ুয়া ভর্তি কম হয়েছে। ফের কবে স্কুলে আসতে পারবে জানে না প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তবে এই অতিমারি ‘চিরস্থায়ী’ নয় বলে মনে করেন প্রধান শিক্ষক রথীন্দ্রনাথ সরকার। তিনি বলেন, “ সহ শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে স্কুলের ভবন নির্মাণ থেকে ফুল বাগান তৈরি সব তৈরি হয়েছে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই।”

school flower Vegetables
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy