ধনখড় এবং অভিষেক। ফাইল চিত্র।
বিচারপতিদের সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার আবেদন সোমবার দুপুরে খারিজ করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। বিকেলে ফের একই কথা বললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে তাঁকে খোঁচা দেওয়ায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কেও নিশানা করেন তিনি।
উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরে দলীয় সমাবেশে অভিষেক বলেন, ‘‘বিচারব্যবস্থা নিয়ে আমি মন্তব্য করায় রাজ্যপাল আমাকে বলেছেন আমি নাকি সীমারেখা লঙ্ঘন করছি । আমি এখনও অন ক্যামেরায় বলছি, বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ৯৯ শতাংশ মানুষ সঠিক কাজ করেন। ১ শতাংশ ব্যতিক্রম। এবং এটা সব দলেও হয়।’’ এর পরেই ধনখড়কে খোঁচা দিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এর উত্তর কে দিচ্ছেন? না রাজ্যপাল । তা হলে কি আমি সঠিক জায়গায় ঢিল মেরেছি? মানে মৌচাকে ঢিল মেরেছি? ওঁর কেন গাত্রদাহ হচ্ছে? আমি ওঁকে তো কিছু বলিনি।’’
প্রসঙ্গত, শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় তৃণমূলের জনসভায় অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘আমার বলতেও লজ্জা লাগে, বিচার-ব্যবস্থায় এক জন, দু’জন এমন আছেন, যাঁরা যোগসাজশে কাজ করছেন। তল্পিবাহক হিসেবে কাজ করছেন। কিছু হলেই সিবিআই দিয়ে দিচ্ছেন। খুনের মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়ে দিচ্ছেন! ভাবতে পারেন! আপনি অভিযুক্তকে নিরাপত্তা দিতে পারেন। কিন্তু মামলায় স্থগিতাদেশ দিতে পারেন না।’’
তাঁর ওই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক দানা বাঁধে। রাজ্যপাল ধনখড় রবিবার শিলিগুড়িতে একটি কর্মসূচিতে অভিষেকের নাম না করে বলেন, ‘‘প্রকাশ্য জনসভা থেকে এক জন সাংসদ এক জন বিচারপতিকে আক্রমণ করেছেন। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় যে বিচারপতি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তাঁকে আক্রমণ করা হয়েছে। সাংসদের এ হেন মন্তব্য নিন্দনীয়। আমি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’’ এখানেই থামেননি ধনখড়। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সাংসদ হিসেবে নিজের সীমা অতিক্রম করেছেন উনি (যদিও এ ক্ষেত্রেও রাজ্যপাল স্পষ্ট করে কোনও নাম নেননি)।’’
বিচারব্যবস্থার অবমাননার অভিযোগে অভিষেকের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়েরের অনুমতি চেয়ে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অজয়কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু সোমবার দুপুরে তা খারিজ হয়ে যায়। বিচারপতি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিচারপতিদের এক শতাংশ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? এক জন সাংসদ বললেন মানেই ধরে নিতে হবে তেমন তো নয়। এক শতাংশ বলেছেন। কাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। আমার তো মনে হয়, এড়িয়ে যাওয়া উচিত।’’
এই পরিস্থিতিতে শ্যামনগরের সভায় রাজ্যপালকে ‘গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল’ বলেও খোঁচা দিয়েছেন অভিষেক। পাশাপাশি, বিজেপি থেকে তৃণমূলে নেওয়া ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা প্রয়োজন কি না, সে বিষয়ে সরাসরি মত চেয়েছেন জনতার। শ্রোতাদের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন— ‘‘আপনারা কি চান দরজা বন্ধ করে দেব?’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ ক্ষেত্রে অর্জুন সিংহের এলাকায় হাজির তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বড় অংশের জবাব ছিল— ‘হ্যাঁ’!
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy