সোনারপুরের তৃণমূল নেতা পার্থ মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কণিকা মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।
প্রত্যাহার করে নিতে হবে মামলা। নইলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে মেরে ফেলা হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের এক বিধবা মহিলাকে এমনই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে। কণিকা মজুমদার নামে ওই মহিলা সোনারপুর থানায় এই বিষয়ে তৃণমূলের ওই নেতা পার্থ মণ্ডলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে। পার্থ যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কণিকা পুলিশকে জানিয়েছেন, পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি না করে তিনি দীর্ঘ দিন ফেলে রেখেছিলেন। কিন্তু ফাঁকা জমিতে সম্প্রতি স্থানীয় তৃণমূল নেতা পার্থের মদতে বেআইনি নির্মাণকাজ শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে আদালতে যান কণিকা। এর পরেই তাঁর বাড়িতে পার্থ চড়াও হন বলে অভিযোগ। কণিকার দাবি, দ্রুত মামলা প্রত্যাহার করার জন্য বার বার তাঁকে হুমকি দিতে থাকেন সোনারপুর টাউন তৃণমূলের জয় হিন্দ বাহিনীর সভাপতি পার্থ। দলবল নিয়ে অশ্লীল ভাষায় কটূক্তি করার পাশাপাশি কণিকাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে মারার হুমকিও দেন তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, বছর কয়েক আগে কণিকার স্বামী মারা যান। তার পর থেকে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে তিনি সোনারপুরে বাপেরবাড়িতে থাকতেন। সম্প্রতি তাঁর দুই ছেলেমেয়ে কর্মসূত্রে ভিন্ রাজ্যে চলে যান। ইদানীং একাই থাকতেন কণিকা। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল নেতার ওই হুমকির পর থেকে আতঙ্কে রয়েছেন। পুলিশকে তিনি সক্রিয় হওয়ার অনুরোধও করেন। যদিও পুলিশ সূত্রের দাবি, এই ঘটনায় রাজনৈতিক যোগ নেই। জমিজমা সংক্রান্ত কারণেই অভিযোগ উঠেছে। গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছে বিজেপি। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কারণে সাধারণ মানুষের উপর শাসকদলের নেতাদের অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছে তারা। দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা (পূর্ব) সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উত্তম কর বলেন, ‘‘রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা অহরহ হচ্ছে। কারণ এখানে গুন্ডারাজ চলছে। শাসকদলের নেতারা সাধারণ মানুষের উপর অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছেন। অথচ পুলিশ নির্বাক!’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক লাভলি মৈত্র বলেন, ‘‘আক্রান্ত মহিলার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁর পাশেই থাকব আমি। আইন আইনের পথে চলবে। দলের কেউ যদি সত্যিই এতে যুক্ত থাকেন, তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
যাঁর বিরুদ্ধে কণিকার এই অভিযোগ, সেই পার্থের সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। যদিও তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy