Advertisement
E-Paper

বিরোধী ‘ভাঙাতে’ জেলে গিয়ে মাফিয়া-সাক্ষাতে তৃণমূল নেতা

তাদের এক মহিলা কাউন্সিলরকে ভাঙাতে সংশোধনাগারে গিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে দেখা করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা—খড়্গপুরে এই ক্ষোভে সরব বিজেপি। পূজা নায়ডু নামে ওই কাউন্সিলর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছেন। পূজার স্বামী, খড়্গপুরে রেল-মাফিয়া বলে পরিচিত শ্রীনু নায়ডু বোমাবাজির মামলায় গ্রেফতার হয়ে আপাতত মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৫ ০৩:০৫

তাদের এক মহিলা কাউন্সিলরকে ভাঙাতে সংশোধনাগারে গিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে দেখা করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা—খড়্গপুরে এই ক্ষোভে সরব বিজেপি। পূজা নায়ডু নামে ওই কাউন্সিলর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছেন। পূজার স্বামী, খড়্গপুরে রেল-মাফিয়া বলে পরিচিত শ্রীনু নায়ডু বোমাবাজির মামলায় গ্রেফতার হয়ে আপাতত মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি। কারা দফতর সূত্রের খবর, খড়্গপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা এ বারেও তৃণমূলের টিকিটে জয়ী জহরলাল পাল রীতিমতো লিখিত আবেদন করে শুক্রবার শ্রীনুর সঙ্গে দেখা করেছেন।

বিজেপির দাবি, বোর্ড গঠনে পূজার সমর্থন চাইতেই জহরবাবু শ্রীনুর কাছে গিয়েছিলেন। সমর্থন পেলে পূজাকে ‘চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল’ করার প্রস্তাবও দেন।

শ্রীনুর সঙ্গে দেখার কথা সরাসরি স্বীকার করছেন না জহরবাবু। তবে মেদিনীপুর সংশোধনাগার সফরের কথা মানছেন। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের কারারক্ষী সংগঠনের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতেই ওখানে গিয়েছিলাম।” তাঁর সংযোজন, ‘‘কেউই অচ্ছুত নয়। পুরবোর্ড গঠনের জন্য ব্যক্তিগত ভাবে অনেকের সঙ্গেই কথা বলছি।’’

পুর-নির্বাচনে ত্রিশঙ্কু ফল হয়েছে খড়্গপুরে। ৩৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল এবং কংগ্রেস— দু’দলই ১১টি করে আসন পেয়েছে। বিজেপির দখলে সাত, বামেরা জিতেছেন ছ’টিতে। পূজার সমর্থন পেলে তৃণমূল ১২ আসনে পৌঁছে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হবে। সে ক্ষেত্রে বোর্ড গঠনে অগ্রাধিকার পাবে তারা।

গত মার্চে খড়্গপুরের খরিদায় এক বোমাবাজিতে নাম জড়ায় শ্রীনুর। এপ্রিলের গোড়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিজেপি সেই সময় অভিযোগ তুলেছিল, পূজার মনোবল ভাঙতেই তৃণমূল শ্রীনুকে গ্রেফতার করিয়েছে। বিজেপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, “তৃণমূল আমাদের দল ভাঙানোর চেষ্টা করছে। তবে ওরা কোনও ভাবেই এতে সফল হবে না।” পূজাদেবীও বলছেন, “জেলে গিয়ে কে আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করেছেন, জানি না। তবে আমি তৃণমূলকে সমর্থন করব না।”

জেলারই বিধায়ক তথা প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়ার কটাক্ষ, “প্রাক্তন পুরপ্রধান যদি জেলে গিয়ে দেখা করে থাকেন, তা হলে নিশ্চয়ই তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের তাতে সম্মতি আছে। না হলে এই সাহস জেলার কারও হয় না।” আর এক রেল-মাফিয়া রামবাবুকে পুরভোটে তৃণমূলের প্রচারে দেখা গিয়েছে বলে মনে করিয়ে সিপিএমের খড়্গপুর শহর জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘শ্রীনুর সঙ্গেও তৃণমূলের সম্পর্ক নতুন নয়। হয়তো দূরত্ব হয়েছিল। ভোটের ফল বেরোতে কাছে আসার চেষ্টা শুরু হয়েছে।’’

খড়্গপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল দীর্ঘদিনের। এক গোষ্ঠীর নেতা প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরবাবু। উল্টো দিকে তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী। দু’জনেই পুরভোটে জিতেছেন, রয়েছেন পুরপ্রধান হওয়ার দৌড়ে। এই অবস্থায় পূজার সমর্থন পেলে জহরবাবু অভীষ্টের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাবেন বলেই জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের অনুমান। এ প্রসঙ্গে দেবাশিসবাবুর মন্তব্য, ‘‘দলের নেতারা আছেন। তাঁরা নিশ্চয়ই সব বিচার-বিবেচনা করবেন।”

তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় অবশ্য বলেন, “এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। খড়্গপুর নিয়ে দলে এখনও আলোচনা শুরু হয়নি।”

barun dey midnapore trinamool tmc mafia poll vote election mamata bandopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy