Advertisement
E-Paper

শাসক দলেরই জেলা বৈঠকে তাপসের নিন্দা

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাফ করে দিতে পারেন। বলতে পারেন, “ছোট্ট ঘটনা।” কিন্তু নদিয়ার গ্রামে-গ্রামে গিয়ে তাপস পালের অশ্লীল হুমকি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না জেলার তৃণমূল নেতারা। শহিদ দিবসের প্রস্তুতি নিয়ে শনিবার জেলা কমিটির বৈঠকে সমালোচনায় সরব হলেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, তাপসের মন্তব্যের জন্য দলকে বিব্রত হতে হচ্ছে জেলায়। দলীয় ভাবে তাপসের শাস্তির দাবিও উঠল।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৪ ০৩:০৫

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাফ করে দিতে পারেন। বলতে পারেন, “ছোট্ট ঘটনা।” কিন্তু নদিয়ার গ্রামে-গ্রামে গিয়ে তাপস পালের অশ্লীল হুমকি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না জেলার তৃণমূল নেতারা। শহিদ দিবসের প্রস্তুতি নিয়ে শনিবার জেলা কমিটির বৈঠকে সমালোচনায় সরব হলেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, তাপসের মন্তব্যের জন্য দলকে বিব্রত হতে হচ্ছে জেলায়। দলীয় ভাবে তাপসের শাস্তির দাবিও উঠল।

গত ১৪ জুন কৃষ্ণনগরের সাংসদ তাপস পাল নাকাশিপাড়া ও পলাশিপাড়া বিধানসভা এলাকার একের পর এক গ্রামে গিয়ে বিরোধীদের নানা হুমকি দেন। এমনকী দলের ছেলেদের ঢুকিয়ে বিরোধী দলের সমর্থক মহিলাদের ‘রেপ করানোর’ হুমকিও দেন তিনি। সম্প্রতি ওই হুমকি-সিডি সংবাদমাধ্যমের হাতে এসে পড়লে দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। তাপস চিঠি লিখে ক্ষমা চাইলে তাঁর দল আর শাস্তি দেয়নি।

কিন্তু জেলায় দলের নেতা-কর্মীদের যে ভাবে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে, তাতে তাঁরা ক্ষুব্ধ। গত শনিবার নদিয়া জেলা পরিষদের সভাকক্ষে ঘণ্টা দু’য়েকের বৈঠকে তাপস-প্রসঙ্গ বারবার ওঠে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের ব্লক সভাপতি, একাধিক বিধায়ক, জেলা পরিষদের সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও পুরপ্রধানরা। কৃষ্ণনগরের সাংসদ তাপস পাল অবশ্য ছিলেন না।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের সঙ্গে একেবারে গোড়া থেকে রয়েছেন, এমন এক প্রাক্তন জেলা সভাপতি ও বর্তমানে বিধায়ক বৈঠকের গোড়ায় বলার চেষ্টা করেছিলেন, দলীয় কর্মীদের আক্রান্ত হতে দেখে আবেগের বশে এই সব কথা বলে ফেলেছেন তাপস। কিন্তু অন্যরা তাতে ফুঁসে ওঠেন। তাঁরা তাপস পালের সমালোচনা করে শাস্তির পক্ষে সওয়াল করেন। দলের এক সাংসদের কথায়, “উপস্থিত সবাই তাপসের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস করেননি। কিন্তু যাঁরা বলছিলেন, তাঁদের প্রতি ইঙ্গিতে সমর্থন দেখাচ্ছিলেন।’’

ওই দিন সব চাইতে সরব ছিলেন নাকাশিপাড়ার নেতারা। ১৪ জুন সাংসদের সফরের চারটি গ্রাম ছিল এই ব্লকেই। তাপসের মন্তব্যে নাকাশিপাড়া ব্লকে দলীয় সংগঠন সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে, মনে করছেন স্থানীয় নেতারা। স্বাভাবিক ভাবেই এই ব্লকের নেতারা কড়া সমালোচনা করেন তাপসের।

নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি তো প্রথম থেকেই বলে আসছি কোনও জনপ্রতিনিধি বা নেতার মুখে এই ধরনের কথা অবাঞ্ছিত ও অনভিপ্রেত। আমি চাই দল শৃঙ্খলার বিষয়টি কড়া ভাবে নিয়ন্ত্রণ করুক। যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এই ধরনের মন্তব্য করার সাহস না পায়।’’ কিন্তু সেদিন একটি গ্রামে তাপস হুমকি দেওয়ার সময় কল্লোল খানকেও তো দেখা গিয়েছিল সাংসদের পাশে। তিনি বাধা দেননি কেন? বিধায়কের জবাব, “সাংসদ মাইক নিয়ে কথা বলেননি। তাই আমি কিছু শুনতে পাইনি। আমি সেই সময় আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলাম।”

বৈঠকে সবচেয়ে কড়া ভাষায় তাপসের মন্তব্যের সমালোচনা করেন দলের এক মহিলা নেত্রী। তিনি জেলা পরিষদেরও সদস্য। সভায় তিনি বলেন, তাপস পালের মন্তব্যে নারী সমাজকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে হয়ে যাচ্ছে দলের মহিলা নেতা-কর্মীদের। প্রকাশ্যে অবশ্য এই নিয়ে কথা বলতে চাননি তিনি। সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলছেন না অন্য নেতারাও। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি অজয় দে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘‘তাপস পালের বিষয়টি দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব দেখছেন। তাই এই বিষয়ে বৈঠকে আলোচনাই হয়নি।”

sushmit halder tapas pal hate speech
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy