E-Paper

প্রতিশ্রুতির ‘ফস্কা গেরো’, বর্ষপূর্তি নিয়ে বিঁধল তৃণমূল

দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, “চব্বিশে ভোটের আগে বিজেপি ৬৯ পাতার একটি বিপুল ইস্তাহার প্রকাশ করে। সেটা নির্বাচনী জুমলা ছাড়া যে কিছুই নয়, তা বছর ঘুরতে স্পষ্ট।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ০৭:৪৬

—প্রতীকী চিত্র।

সোমবার তৃতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক বছর পূর্তি। একই সঙ্গে ক্ষমতায় আসার পরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর টানা এগারো বছরের পূর্তিও বটে। আগামী ১১ মাস গোটা দেশ জুড়ে এই বিষয়টিকে নিয়ে রাজনীতির হাওয়া গরম করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। তার অংশ হিসেবে রয়েছে বাংলাও। তাই বর্ষপূর্তির প্রাক্কালেই ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির ইস্তাহারে বর্ণিত প্রতিশ্রুতিগুলির ‘ব্যর্থতা’ তুলে ধরলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের কথায়, “চব্বিশে ভোটের আগে বিজেপি ৬৯ পাতার একটি বিপুল ইস্তাহার প্রকাশ করে। সেটা নির্বাচনী জুমলা ছাড়া যে কিছুই নয়, তা বছর ঘুরতে স্পষ্ট। নারীশক্তি থেকে কৃষক যোজনা, কর্মসংস্থান থেকে রেল সুরক্ষা— সব ক্ষেত্রেই প্রতিশ্রুতি পূরণের ধারেকাছে যেতে পারেনি এই সরকার।” উদাহরণ হিসেবে বিজেপির ঘোষণাপত্রের ১৫টি প্রতিশ্রুতির কথা তুলে তার সঙ্গে বর্তমানের তথ্য ও পরিসংখ্যান হাজির করেছেন তৃণমূল নেতা। ডেরেকের কথায়, “প্রধানমন্ত্রী কিসান যোজনার স্বশক্তিকরণের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। অথচ বাস্তবে প্রতিদিন ৩০ জন কৃষক আত্মহত্যা করছেন। ২০১৮-২৩ সালে গ্রামীণ এলাকায় শ্রমিকদের মজুরি বছরে ০.৪% হারে কমেছে, কৃষি মজুরি বেড়েছে মাত্র ০.২% হারে। পিএম-কিসানের তহবিল বাড়িয়ে ১২,০০০ টাকা করার জন্য সংসদীয় কমিটির সুপারিশ করেছিল। তা অগ্রাহ্য করা হয়েছে।”

তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই নিয়ে অনেক লম্বা-চওড়া কথা বলা হয়েছিল ইস্তাহারে। কিন্তু ১০ বছরে সাংসদ, বিধায়ক ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে ইডি ১৯৩টি মামলা করেছে ও তাঁদের মধ্যে মাত্র দু’জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। গত ১১ বছরে ইডি মোট ৫২৯৭টি মামলা দায়ের করেছে। বিচারের জন্য মাত্র ৪৭টি মামলা আদালতে পাঠানো হয়েছে। প্রতি হাজার মামলায় মাত্র সাত জনের সাজা হয়েছে। মণিপুরের উত্তপ্ত পরিস্থিতির কথা তুলে ডেরেকের বক্তব্য, “উত্তর-পূর্ব ভারতে শান্তি রক্ষার কথা বলা হয়েছিল। অথচ মণিপুরে হিংসা পরিস্থিতি চলছে প্রায় দু’বছর ধরে। প্রধানমন্ত্রী এখনও এক বারও সেখানে যাননি।”

বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান তুলে ধরে তৃণমূল নেতৃত্ব জানাচ্ছে, ৭.৫ কোটি ভারতীয় দিন প্রতি ২২৫ টাকার কম আয় করেন। সবচেয়ে গরিব (৫% মানুষ) যাঁরা, তাঁদের দৈনিক খরচ ৬৮ টাকা। অথচ দেশে একটি নিরামিষ থালির খরচ ৭৭ টাকা। অভিযোগ, ২০১৮-২৩ সালের মধ্যে কর্মসংস্থানে মহিলাদের অংশগ্রহণ মাত্র ২.৩ শতাংশবিন্দু বেড়েছে। ৫ বছরে কাজের সময় বেড়েছে মাত্র ১০ মিনিট। কাজের ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের অংশগ্রহণের হার অর্ধেক। যুবক-যুবতীদের দক্ষতার প্রশিক্ষণ এবং সম্প্রসারণ কেমন হয়েছে? দাবি করা হচ্ছে যে, কেবলমাত্র ৪% যুবক-যুবতী সরকারি ভাবে কর্মদক্ষতার প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। যুবসম্প্রদায়ের প্রতি তিন জনের মধ্যে এক জন হয় লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছেন, নয় বেকার, নয় প্রশিক্ষণ পাননি। এই অংশটির মধ্যে ৯৫% মহিলা। পিএম ইন্টার্নশিপ স্কিমের অধীনে প্রতি পাঁচটি জেলার একটিতে ১০টির কম ইন্টার্নশিপের সুযোগ ছিল, দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC-BJP Conflicts BJP PM Narendra Modi

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy