১০০ দিনের কাজে প্রায় ৭১ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন গুজরাতের মন্ত্রী বাচু খাবাড়ের পুত্র বলবন্তসিংহ খাবাড়। আর এই ঘটনাকে সামনে রেখে বিজেপিকে তোপ দাগল এই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। দুর্নীতির প্রশ্নে যদি পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজের জন্য বরাদ্দ অর্থে কোপ পড়তে পারে, তবে একই যুক্তিতে বিজেপিশাসিত গুজরাতের জন্য বরাদ্দ অর্থও কাটছাঁট হবে না কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছে তারা।
তৃণমূলের তরফে সমাজমাধ্যমে লেখা হয়েছে, “গুজরাতের পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রীর ছেলে ১০০ দিনের কাজে ৭১ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। কেন্দ্র কি বাংলার মতোই গুজরাতের বরাদ্দ কাটছাঁট করবে? কেন্দ্রীয় দল কি দুর্নীতির তদন্তে গুজরাতে যাবে? নাকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য আর সেখান ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার রয়েছে বলে সব কিছু ধামাচাপা পড়ে যাবে?”
এই প্রসঙ্গে বিজেপিকে তোপ দেগে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “বিজেপি না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা বলে। অথচ গরিবদের প্রাপ্য কেড়ে নেয়। এত কিছুর পরেও গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী চুপ করে রয়েছেন।” প্রায় একই সুরে দলের সাংসদ সায়নী ঘোষ বলেন, “ওরা বলে গুজরাত নাকি মডেল স্টেট। মনে হয় মডেল এটাই যে, গরিবের ৭১ কোটি টাকা লুট।”
গুজরাতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল গত ২৪ এপ্রিল। সেখানে অভিযোগ করা হয়, ১০০ দিনের প্রকল্পে সরঞ্জাম সরবরাহের বরাত পায়নি মন্ত্রীপুত্র বলবন্তের সংস্থা। তার পরেও তারা জিনিসপত্র সরবরাহ করেছিল। পুরো সামগ্রী সরবরাহের আগেই টাকাও মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল ওই সংস্থাকে। দেবগড় বরিয়ার কুভা গ্রামের বাসিন্দারা প্রথম বিষয়টি নজরে আনেন জেলাপ্রশাসনের। তার পরেই সক্রিয় হয় পুলিশ। এই ঘটনায় পাঁচ জনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার পর গ্রেফতার হন মন্ত্রীর পুত্র।
আরও পড়ুন:
১০০ দিনের কাজে বকেয়া টাকা চেয়ে একাধিক বার সরব হয়েছে তৃণমূল। কেন বকেয়া টাকা দেওয়া হচ্ছে না, কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে একাধিক বার এই প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের শাসকদল। কিন্তু এই প্রকল্পে বিস্তর দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ তোলে কেন্দ্র। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল বিষয়টিকে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ বলে ব্যাখ্যা করে।
গত বাজেট অধিবেশনেও ১০০ দিনের কাজে বকেয়া চেয়ে সংসদে সরব হয় তৃণমূল। সেই সময় রাজ্যের শাসকদলের সাংসদেরা পাশে পান ‘বঞ্চিত’ আরও দুই রাজ্য তামিলনাড়ু এবং কেরলের সাংসদদেরও। তৃণমূলের বক্তব্য, যদি সত্যি ভুয়ো কার্ড থেকে থাকে বা কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকে, তবে তা খুঁজে বার করুক কেন্দ্র। কিন্তু প্রকৃত উপভোক্তাদের টাকা যাতে না আটকানো হয়, সেই আর্জি জানানো হয় তৃণমূলের তরফে।