Advertisement
E-Paper

বদলেছে দিন, লড়াইয়ের জায়গা এখন মোবাইল স্ক্রিন! ডিজিটাল দুনিয়ায় ‘সেনা’ নামাচ্ছে তৃণমূল, নতুন কর্মসূচি-সূচনায় অভিষেক

তৃণমূল সূত্রে খবর, বুথ পিছু অন্তত ১০ জনকে ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’ হিসাবে নিয়োগ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা মোবাইলে স্বচ্ছন্দ, প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা রয়েছে, রাজনৈতিক যুক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন, তেমন তরুণ-তরুণীদেরই ‘যোদ্ধা’ করতে চাইছে ক্যামাক স্ট্রিট।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:৪৯
বৃহস্পতিবার নতুন কর্মসূচি শুরু করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যার পোশাকি নাম ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’।

বৃহস্পতিবার নতুন কর্মসূচি শুরু করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যার পোশাকি নাম ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

রাজ্যের সর্বত্র বুথের সংগঠনে তৃণমূল বাকি সকলের চেয়ে এগিয়ে। লোকসভা, বিধানসভা, পুরসভা, পঞ্চায়েতেও তারাই বারো আনা। সেই জোরেই এত দিন পর্যন্ত তৃণমূলের নেতারা বলতেন, বিজেপি-সিপিএমের মতো দলগুলি কেবল ফেসবুক, এক্সেই রয়েছে। বুথে ওদের দেখা যায় না! এ বার সেই ডিজিটাল ময়দানও ফাঁকা রাখল না শাসকদল। ডিজিটাল দুনিয়া এবং সমাজমাধ্যমে নিজেদের প্রচার আরও জোরালো করতে বৃহস্পতিবার নতুন কর্মসূচি শুরু করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যার পোশাকি নাম ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’।

এই নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে তৃণমূল। যাঁরা নিজেদের নাম ‘যোদ্ধা’ হিসাবে নথিভুক্ত করবেন, তাঁদের নাম, ফোন নম্বর, জেলা এবং বিধানসভা কেন্দ্রের নাম সেখানে জানাতে হবে। এই কর্মসূচির সূচনায় অভিষেক সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়োবার্তাও দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘নানা মাধ্যমে লড়াই চলছে। রাজপথ, সংসদের মতো সমাজমাধ্যম এবং ডিজিটাল দুনিয়াও এখন লড়াইয়ের জায়গা হয়ে উঠেছে। যা রয়েছে মোবাইলের স্ক্রিনে। যেখানে প্রতিনিয়ত বাংলা-বিরোধীরা কুৎসা, অপপ্রচার করছে।’’ যাঁরা এই যোদ্ধা হবেন, তাঁদের এক এক জনকে ‘সেনা’ (আর্মি) বলে অভিহিত করেছেন অভিষেক।

সমাজমাধ্যমের প্রচারকে যে নির্বাচনেও ‘অস্ত্র’ করা যায় তা ভারতে প্রথম দেখিয়েছিল বিজেপি। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদীর প্রচারকে সমাজমাধ্যমে বিপুল উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল তারা। রাজনৈতিক দলে যে ‘আইটি সেল’ থাকতে হয়, তা-ও পদ্মশিবিরেরই দেখানো। যে পথে পরে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে সব দল। প্রসঙ্গত, তৃণমূলেও আইটি সেল রয়েছে। কিন্তু ২০২৬ সালের আগে ডিজিটাল প্রচারকে আরও সংগঠিত ও পেশাদার করতে চাইছেন অভিষেক। নিঃসন্দেহে সেই কারণেই এই উদ্যোগ। তৃণমূল সূত্রের খবর, বুথ পিছু অন্তত ১০ জনকে ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাঁরা মোবাইলে স্বচ্ছন্দ, প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা রয়েছে, রাজনৈতিক যুক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন, তেমন তরুণ-তরুণীদেরই ‘যোদ্ধা’ করতে চাইছে ক্যামাক স্ট্রিট। যদিও প্রচারের সময় সকলকেই আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে অভিষেক যে নবীন এবং তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে কাজ করতেই বেশি স্বচ্ছন্দ, সে ইঙ্গিত তাঁর কথায় আগেও বহু বার মিলেছে। ভিডিয়ো তৈরি করা, গ্রাফিকে পারদর্শী এমন সূচকেও ‘যোদ্ধা’ হওয়া যাবে তৃণমূলের।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলেরই এমন অনেক পেজ বা হ্যান্ডল রয়েছে, যেগুলি সরাসরি দলীয় কথা না-বলে অন্য ভাবে বলে। যা দল বলতে পারে না, তা-ও বলা হয় সেই পেজ বা হ্যান্ডলগুলিতে। তেমন পথেও হাঁটার পরিকল্পনা নিচ্ছে তৃণমূল। অর্থাৎ, দল যে অভিমুখ ঠিক করে দেবে, সেইমতো সংগঠিত প্রচারকে সাংগঠনিক বাঁধুনি দিতে চাইছে বাংলার পরপর তিন মেয়াদের শাসকদল।

ঘটনাচক্রে, অভিষেক যে দিন ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’ কর্মসূচির সূচনা করলেন, সেই দিনেই বিজেপির ডিজিটাল তথা সমাজমাধ‍্যম বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সারলেন অমিত মালবীয়। বিজেপির রাজ‍্য দফতরেই বৈঠক হয়েছে। সারা রাজ‍্য থেকে প্রথম সারির প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল। দলের সমাজমাধ‍্যম বিভাগের সর্বভারতীয় প্রধান হিসাবে মালবীয় নিজে বৈঠকে ছিলেন। আরও কয়েক জন সর্বভারতীয় স্তরের প্রতিনিধি ছিলেন। আর ছিলেন ভাষ‍্য নির্মাণ টিমের কয়েক জন।

সমাজমাধ‍্যমকে কাজে লাগিয়ে আগামী কয়েক মাসে বিজেপির নানা রাজনৈতিক ভাষ‍্যকে প্রতিষ্ঠা দেওয়া কতটা জরুরি এবং কোন কৌশলে তা করতে হবে, তা নিয়েই মূলত কথা হয়েছে। দীপাবলি কাটলেই রাজ‍্যে বিজেপির সকল সমাজমাধ‍্যম সৈনিককে ডেকে কর্মশালা আয়োজন হতে চলেছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর।

Mamata Banerjee Abhishek Banerjee TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy