কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং উপাচার্য নিয়োগের নিয়ম বদলের পাশাপাশি এই সব প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের বিধিতেও বদলে আনতে চলেছে ইউজিসি।
ইউজিসির আগের নিয়ম অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান মোট শিক্ষক পদের ১০% চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করতে পারত। কিন্তু ইউজিসির নতুন খসড়ায় এই ধরনের নিয়োগের সীমা তুলে দেওয়ার উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ইউজিসির চেয়ারম্যান এম জগদেশ কুমারের যুক্তি, অনেক রাজ্যের সাহায্যপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়েই বহু শিক্ষক-শিক্ষিকার শূন্যপদ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলি তা পূরণ করার চেষ্টাও করছে। সেটা বিবেচনা করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে কিছুটা নমনীয়তা দিতেই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের সীমায় কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। এক বারকেন্দ্রীয় বা রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেই সব শূন্যপদ পূরণ করলেই চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ওয়েবকুটা) সাধারণ সম্পাদক শুভোদয় দাশগুপ্তের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘চুক্তিভিত্তিক এবং আংশিক সময়ের শিক্ষকদের উপর উচ্চশিক্ষা এমনিতেই বহুলাংশে নির্ভরশীল। অথচ অবসরকালীন ভাতা, ন্যায্য বেতন সব দিক থেকে তাঁরা বঞ্চিত। চুক্তিভিত্তিকশিক্ষকদের আরও বেশি সংখ্যায় নিয়োগের অর্থ তাঁদের আরও শোষণ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অনেক শিক্ষক স্থায়ী পদে নিয়োগেরযোগ্যতা নিয়ে অস্থায়ী পদে চাকরি করে চলেছেন।’’
সারা ভারত সেভ এডুকেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুণকান্তি নস্কর বলেন, “বহুদিন ধরেই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কোনও পদ সৃষ্টি হচ্ছে না। এমনকি ২০১৭–১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও পরবর্তীতে স্নাতকোত্তরে সিমেস্টার এবং চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম চালুর পরও হয়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষায় জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে ইতিমধ্যে চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু করেছে ইউজিসি। পাশাপাশি ফাঁকা পড়ে থাকা শূন্যপদও পূরণ হচ্ছে না। এতে ধীরে ধীরে স্থায়ী শিক্ষক পদই বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)