Advertisement
E-Paper

পুরুলিয়ার জঙ্গলে ‘ক্যামেরা-ফাঁদে বন্দি’ প্যাঙ্গোলিন, সংরক্ষণ এবং সুরক্ষায় তৎপর হল বন দফতর

আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণ সংস্থা আইইউসিএন-এর লাল তালিকায় (রেড ডেটা লিস্ট) ‘বিপন্ন’ (এনডেঞ্জারড) শ্রেণির ইন্ডিয়ান প্যাঙ্গোলিন ‘ভারতীয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন’-এর ১ নম্বর তফসিলভুক্ত।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ২১:২৭
ক্যামেরা ট্র্যাপে তোলা সেই প্যাঙ্গোলিন।

ক্যামেরা ট্র্যাপে তোলা সেই প্যাঙ্গোলিন। ছবি: বন দফতর সূত্রে পাওয়া।

চিতাবাঘের দেখা আগেই মিলেছে। খোঁজ মিলেছে, ভালুক, নেকড়ে, হায়না, হরিণ, সজারুর এমনকি, বিরল রাস্টি স্পটেড ক্যাটেরও। পুরুলিয়ার জঙ্গলে বন দফতরের ‘ক্যামেরা ফাঁদে’ (ক্যামেরা ট্র্যাপ) এ বার ‘বন্দি’ হল ‘ইন্ডিয়ান প্যাঙ্গোলিন’। বাংলায় যারা বনরুই নামে পরিচিত।

রাজ্যের বনপ্রাণপ্রেমী সংগঠন ‘হিউম্যান অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অ্যালায়েন্স লিগ’ (হিল)-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে গত নভেম্বর থেকে পুরুলিয়ার বিভিন্ন বনাঞ্চলে প্যাঙ্গোলিনের খোঁজ শুরু করেছে বন দফতর। ‘হিল’-এর কর্ণধার শুভ্রজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁদের বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় প্যাঙ্গোলিনের ছবি ধরা পড়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এর আগে ২০২২ সালে একটি সমীক্ষার সময় ট্র্যাপ ক্যামেরায় অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন মাঠায় প্যাঙ্গোলিনের ছবি উঠেছিল।’’

এ বার কোন জেলার কোন বনাঞ্চলে প্যাঙ্গোলিনের উপস্থিতি নজরে এসেছে? শুভ্রজ্যোতি জানান, ভারত তথা বিশ্বজুড়ে প্যাঙ্গোলিনের দেহাংশ চোরাকারবারের সংগঠিত চক্র সক্রিয়। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই সুনির্দিষ্ট ভাবে বসতিস্থল উল্লেখ করতে চান না তাঁরা। একই কথা জানিয়েছেন, রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) সন্দীপ সুন্দ্রিয়াল। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, রাঢ়বঙ্গের বিভিন্ন জঙ্গলে প্যাঙ্গোলিনের বসতিস্থলগুলি সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিতকরণ এবং তাঁদের সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা।’’

তিনি জানান, রাষ্ট্রপুঞ্জ অনুমোদিত বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএন-এর লাল তালিকায় (রেড ডেটা লিস্ট) ‘বিপন্ন’ (এনডেঞ্জারড) শ্রেণির ইন্ডিয়ান প্যাঙ্গোলিন ‘ভারতীয় বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন’-এর ১ নম্বর তফসিলভুক্ত। অর্থাৎ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বাঘ, সিংহ, হাতি, গন্ডারের মতোই ‘সর্বোচ্চ গুরুত্বপ্রাপ্ত’। বন দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ঝালদা মহকুমার একটি বনাঞ্চলে প্যাঙ্গোলিনের বসতিস্থল চিহ্নিত করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ভারত-সহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্যাঙ্গোলিনের দেহাংশ নিয়ে চোরাকারবারের সমস্যা রয়েছে। প্যাঙ্গোলিনের আঁশ মূলত চিন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়।

বিভিন্ন ধরনের টোটকা এবং হাতুড়ে ডাক্তারদের ওষুধ তৈরিতে সেই আঁশ কাজে লাগানো হয়। অসমেও প্যাঙ্গোলিন পাচারের ঘটনা সামনে এসেছে। বেশ কিছু দেশে প্যাঙ্গোলিনের মাংস খাওয়ারও চল রয়েছে। জীবন্ত প্যাঙ্গোলিনের পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় চোরাশিকার হওয়া প্যাঙ্গোলিনের আঁশও উদ্ধার করা হয়েছে। ভারতীয় প্যাঙ্গোলিন শুষ্ক এলাকায় দেখা যায়। এই রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে, মূলত পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন অরণ্যে নিশাচর ও লাজুক প্রাণীটির বাসস্থান। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গে ডুয়ার্সের জঙ্গলে চিনা প্যাঙ্গোলিন নামে পৃথক একটি প্রজাতির দেখা মেলে। দু’টি প্রজাতিরই প্রধান খাদ্য পিঁপড়ে এবং উই পোকা।

Pangolin purulia Jhalda West Bengal Forest Department Heal wildlife
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy