Advertisement
E-Paper

এনআরসির কথা তুললেনই না, সিবিআই রুখতেই দিল্লিতে? মমতার অস্বস্তি বাড়িয়ে একযোগে প্রশ্ন বিরোধীদের

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার জানান যে, রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে কথা হয়েছে এবং খুব ভাল আলোচনা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:৩০
বাংলায় গর্জন, দিল্লিতে চুপ কেন? মমতাকে প্রশ্ন বিরোধীদের।

বাংলায় গর্জন, দিল্লিতে চুপ কেন? মমতাকে প্রশ্ন বিরোধীদের।

যে এনআরসি-র বিরুদ্ধে এত গর্জন, তা নিয়ে কোনও কথাই বলতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রীর সামনে! বিস্ময় প্রকাশ করল সিপিএমকংগ্রেস। রাজ্যের দবিদাওয়া নিয়ে কথা বলতে হলে তো বাজেটের আগে দেখা করতে হত— বললেন লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। আর রাজ্য বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক কী কারণে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকটা করলেন? রাজ্যের স্বার্থে, নাকি ব্যক্তিগত স্বার্থে? পাল্টা কটাক্ষে ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য, ‘‘এ তো দেখছি গেলেও বিপদ, না গেলেও বিপদ!’’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার জানান যে, রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে কথা হয়েছে এবং খুব ভাল আলোচনা হয়েছে। কোনও রাজনৈতিক বৈঠক এটা ছিল না, একটা সরকারের সঙ্গে আর একটা সরকারের বৈঠক ছিল— এ কথাও বলেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্য নিয়েই এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন বহরমপুরের সাংসদ তথা লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক বৈঠক কেন হবে? কেউ তো বলেননি যে বৈঠকটা রাজনৈতিক ছিল। কিন্তু রাজ্যের জন্য দাবিদাওয়া জানানোর বৈঠক যদি হয়, তা হলে তো তার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, সময় রয়েছে।’’ অধীরের ব্যাখ্যা, ‘‘রাজ্যের জন্য যদি কিছু চাইতে হয়, তা হলে তো বাজেটের আগে চাইতে হবে। কিছু দিন আগে বাজেট হয়ে গেল। তার আগেই বৈঠকে বসতে হত।’’ অধীরের কটাক্ষ, ‘‘যখনই রাজীব কুমারের রক্ষাকবচ আদালত তুলে নিল, যখনই সিবিআই রাজীব কুমারকে গ্রেফতারের তোড়জোড় শুরু করল, তখনই রাজ্যের নানা দাবির কথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মনে পড়ল? আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হল। কালকে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করতে চান। প্রধানমন্ত্রী কি রেফার করে দিলেন অমিত শাহের কাছে?’’

আরও পড়ুন: কোল ব্লকের উদ্বোধনে মোদীকে আমন্ত্রণ জানালেন মমতা, কাল দেখা করতে চান অমিত শাহের সঙ্গে​

একই রকম কটাক্ষ ছুড়েছেন সুজন চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঘ সাজছিলেন। হঠাৎ বেড়াল হয়ে গেলেন কী করে!’’ সুজনের কথায়, ‘‘সরকারের সঙ্গে সরকারের বৈঠক যদি হয়, তা হলে তো ফাইলপত্র থাকবে, অফিসাররা থাকবেন। এ বৈঠকে তো কিছুই দেখা গেল না। শুধু মোদী আর মমতা, মাঝখানে ফুল! এ আবার কেমন সরকারি বৈঠক!’’ সারদা তদন্ত থেকে নিজেকে ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঁচাতেই মমতার এই দিল্লি সফর বলে সুজন ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টা করেন এ দিন। তিনি বলেন, ‘‘এনআরসি আতঙ্কে বাংলার মানুষ কাঁদছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনে একটা কথাও বললেন না? কেন বললেন না? প্রধানমন্ত্রী রুষ্ট হলে পিসি-ভাইপোর বিপদ হতে পারে বলে? শুধু পিসি-ভাইপোর স্বার্থে বৈঠক হল? বাংলার স্বার্থে নয়?’’

বিজেপির তরফে মুকুল রায় মুখ খুলেছেন এই বৈঠক নিয়ে। কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসি নিয়ে কোনও কথা বললেন না প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে? প্রশ্ন তুলেছেন মুকুল। এনআরসি পশ্চিমবঙ্গে জরুরি এবং ভারতের সর্বত্রই জরুরি— মন্তব্য মুকুলের। কিন্তু মমতা যখন তার বিরোধিতা করছেন, তখন প্রধানমন্ত্রীর সামনেও সে কথাই বলা উচিত ছিল বলে তাঁর মত। বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যের প্রশ্ন, ‘‘কেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে এনআরসির বিরোধিতা মমতা করলেন না? যদি না করেন, তা হলে পশ্চিমবঙ্গে কেন রাস্তায় রাস্তায় মিছিল করছেন এনআরসির বিরোধিতা করে?’’

আরও পড়ুন: কখনও হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার কথা বলিনি, রাজনীতি হচ্ছে, পিছু হঠলেন অমিত শাহ​

তৃণমূলের তরফে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘এক জন প্রশাসনিক প্রধান আর এক জন প্রশাসনিক প্রধানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন এবং মুখ্যমন্ত্রী কালকে বলেও গিয়েছেন যে, রাজ্যের প্রয়োজনে আমাকে যেতেই হবে। তার পরেও কী ভাবে এত কথা ওঠে!’’ ফিরহাদের কথায়, ‘‘এ তো দেখছি শাঁখের করাত, গেলেও বিপদ, না গেলেও বিপদ।’’

Mamata Banerjee Narendra Modi NRC TMC Congress CPM Sujan Chakraborty Adhir Ranjan Chowdhury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy