Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

‘রাজ্য এত দিন চুপ করে বসে থাকল! কিচ্ছু করল না!’, রাজ্যের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি

যার অর্থ, রথযাত্রা কবে বা কী ভাবে হবে, তার কিছুই এখনও চূড়ান্ত নয়। 

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৫
Share: Save:

শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও বিজেপির রথযাত্রার দিনক্ষণ ধার্য হল না। দলের ঘোষণা মতো শুক্রবার কোচবিহার থেকে ওই যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ রথযাত্রা পিছিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে এ দিন ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলার শুনানি হয়। ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, রথযাত্রা নিয়ে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে বিজেপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং পুলিশের ডিজি-কে আলোচনায় বসতে হবে। আলোচনার পরে রথযাত্রা নিয়ে রাজ্য যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা বিজেপি-কে আগামী শুক্রবার, ১৪ ডিসেম্বর জানাতে হবে। যার অর্থ, রথযাত্রা কবে বা কী ভাবে হবে, তার কিছুই এখনও চূড়ান্ত নয়।

বৃহস্পতিবার বিজেপির ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’ (রথযাত্রা) পিছিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা দায়ের করে বিজেপি। সেই মামলার শুনানিতে বিজেপির আইনজীবী অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় ও সপ্তাংশু বসু দাবি করেন, রথযাত্রা নিয়ে আলোচনা ও সহযোগিতা চেয়ে গত ২৯ অক্টোবর থেকে প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের একাধিক চিঠি পাঠানো হয়েছে। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি, আইজি-কে পাঠানো সেই সব চিঠির কোনও জবাব মেলেনি। আইনজীবীরা জানান, কর্মসূচির যে যে পরিবর্তন হয়েছে, তা-ও রাজ্যকে জানানো হয়েছে। প্রশাসনের কর্তাদের কাছে বার বার দেখা করার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এক জনও সাক্ষাৎকারের সময় দেননি।

বিচারপতি সমাদ্দার এ দিন সেই পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের উদ্দেশে বলেন, ‘‘রাজ্য এত দিন চুপ করে বসে থাকল! কিচ্ছু করল না! বলটা অন্তত গড়ানো যেত। রথযাত্রা হবে কিনা, রাজ্য তা আগেই জানিয়ে দিতে পারত। রাজ্য বলতেই পারত, দশ হাজারের বেশি লোক এই যাত্রায় অংশ নিতে পারবে না। বলতেই পারত, ৪৫ দিন যাত্রা চলবে না, পাঁচ দিনে শেষ করতে হবে। কারণ, প্রশাসনেরও একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। একটা যুক্তিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি নিতেই পারত রাজ্য। ধারাবাহিক ভাবে চিঠির পর চিঠি পেয়েও রাজ্য যে ভাবে নীরবতা বজায় রেখেছে, তা আদালতকে হতবাক করছে।’’

আরও পড়ুন: ‘যাত্রা রুখে রোষ ঠেকানো যাবে না’

বিচারপতির মন্তব্য শুনে এজি স্বীকার করে নেন, প্রশাসনের উচিত হয়নি নীরবতা বজায় রাখা। এজির স্বীকারোক্তি শুনে বিচারপতি ফের মন্তব্য করেন, ‘‘এই নীরবতার কারণেই হাইকোর্টের ঘাড়ে সব চলে এল। এতটা অযৌক্তিক হওয়া রাজ্যের উচিত হয়নি।’’

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে চিঠি পাঠাল সিবিআই! ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে যুদ্ধং দেহি তৃণমূলে

এ দিন আপিল মামলার রায় দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি চক্রবর্তীর দেওয়া নির্দেশ সম্পর্কে বিচারপতি সমাদ্দার জানিয়েছেন, রথযাত্রা নিয়ে পথ খুঁজতে বিজেপি হাইকোর্টে মামলা করেছিল। সিঙ্গল বেঞ্চ (বিচারপতি চক্রবর্তীর আদালত) বিজেপির আবেদন সরসারি খারিজ করে দিতেই পারত। কিন্তু তা না করে ওই আদালত আবেদনের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করল ৯ জানুয়ারি, যখন রথযাত্রার ঘোষিত সূচির তিন-চতুর্থাংশ শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ, মামলার আর অর্থই থাকবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rathayatra Hearing Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE