বরফে ঢেকে গিয়েছে উত্তর সিকিমের লাচুং। — নিজস্ব চিত্র
পুরু বরফের তলায় চলে গিয়েছে সিকিমের ছাঙ্গু, নাথুলা। লাচেনের ঘরদোরেও কুচি বরফের আস্তরণ পড়েছে। দার্জিলিঙের সান্দাকফুতে বরফ পড়াটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। সৌজন্য, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। ততটা শক্তিশালী না হলেও সেই ঝঞ্ঝার দাপটে হিমশীতল উত্তুরে হাওয়া বইতে শুরু করেছে শিলিগুড়ি সহ গোটা উত্তরবঙ্গেই। তাতেই বিকেল গড়াতে বর্ষশেষের সপ্তাহে কুয়াশার চাদরে মুড়ি দিচ্ছে পাহাড়-ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকা।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়াবিদ সুবীর সরকার জানান, ততটা জোরালো না হলেও পশ্চিমী ঝঞ্ঝার একাংশ ঢুকে পড়ায় খানিকটা হলেও শীত অনুভূত হচ্ছে। সে জন্য তাপমাত্রাও নেমে গিয়েছে। কুয়াশাও বাড়ছে। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘একটা জোরাল পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকতে হয়তো আরও কিছুটা সময় লাগবে। তাই বলাই যায়, উত্তরবঙ্গের পাহাড়-সমতলে হাড়কাঁপানো শীত পড়ার সম্ভাবনা এখনও আছে।’’
ক’দিন আগে বড়দিনেও বেশ গরম অনুভূত হয় পাহাড়-সমতলে। শীত উধাও হওয়ায় দেশ-বিদেশের পর্যটকেরাও কিছুটা সমস্যায় পড়েন। পরিবেশপ্রেমী মহলেও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। কারণ, শিলিগুড়ি-কলকাতার তাপমাত্রা প্রায় গা ঘেঁষাঘেঁষি করে চলছিল। সে দিক থেকে দেখলে মঙ্গলবারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা খানিকটা স্বস্তির কারণ সকলেরই। সিকিমের আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, নাথুলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠছেই না। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চলে যাচ্ছে মাইনাস ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। লাচেন, সান্দাকফুর সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও ৫-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ঘুরছে।
ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল জানান, নানা এলাকায় পর্যটকেরা খুশি। ইতিমধ্যেই পূর্ব সিকিমের ছাঙ্গু লেক, নাথুলা ছাড়াও জুলুক, গাংথাং-এ তুষারপাত উপভোগ করছেন পর্যটকরা। উত্তর সিকিমের লাচেন বা গুরুদোংমার লেকও ধবধবে সাদা হয়ে গিয়েছে। গত বছর সিকিমে প্রথম বরফ পড়ে অক্টোবরের শেষে।
চলতি বছরে দার্জিলিঙে তুষারপাতের সম্ভাবনা কতটা, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। রাতের বেলায় টাইগার হিল এলাকায় তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। সান্দাকফু লাগোয়া এলাকায় ঝিরঝির বৃষ্টিও হয়েছে বিচ্ছিন্ন ভাবে। আবহাওয়াবিদরা জানান, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার শক্তি বেশি হলে রাতারাতি তাপমাত্রা আরও নেমে যেতে পারে। বৃষ্টিপাতও হতে পারে পাহাড় ও লাগোয়া সমতলে। তারই হাত ধরে সান্দাকফু লাগোয়া এলাকায় তুষারপাতও হতে পারে বলে আবহাওয়াবিদদের ধারণা।
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে উত্তরবঙ্গের সাত জেলাতেই। এ দিন আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, রায়গঞ্জ, জলপাইগুড়ি তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। মালদহ, শিলিগুড়ি, বালুরঘাটে তা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে জাতীয় সড়কের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভোর থেকেই কুয়াশা ছিল। সে জন্য কলকাতা-শিলিগুড়ি-গুয়াহাটি রুটের বহু বাস নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy