—ফাইল চিত্র।
বাংলায় ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর সিপিএম একটা বিষয় ঠাওর করেছিল— দলটা পক্ককেশে ভরে গিয়েছে। কমিটি স্তরে নেতা হওয়ার জন্য চুলের রং যেন ক্রমশ মানদণ্ড হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর আগেই, রাজ্য সিপিএম ঠিক করে, এরিয়া কমিটিতে এক জন অনূর্ধ্ব ৩১ রাখতেই হবে। না পাওয়া গেলে ফাঁকা থাকবে। তবু ওই জায়গায় অন্য কাউকে নেওয়া যাবে না। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের নভেম্বর থেকে দলের শাখা স্তর থেকে সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু করবে সিপিএম। তার আগে দলকে তরুণ প্রজন্মের কর্মীদের ব্যাপারে যত্নবান হতে বললেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। শুধু তাই নয়, তরুণ কর্মীদের জায়গা দিতে গিয়ে এলাকার যে নেতারা কার্যত ‘বাচ্চা ছেলে’ বলে উড়িয়ে দেন, তাঁদের উদ্দেশে ঠারেঠোরে কড়া বার্তাই দিয়েছেন সেলিম। গত মঙ্গলবার সিপিএমের প্রকাশ্য কর্মসূচি ও দলের মুখপপত্রে লেখা নিবন্ধ— দু’জায়গাতেই এই কথা উল্লেখ করেন সেলিম।
এখন প্রশ্ন হল, নিয়ম করার পরেও কি দলে তরুণদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না? না হলে রাজ্য সম্পাদককে এ কথা বলতে হচ্ছে কেন?
সিপিএম সূ্ত্রে খবর, এরিয়া কমিটিতে রাজ্যের অনেক জেলাতেই অনূর্ধ্ব ৩১-এর সংরক্ষিত জায়গাটি খালি রয়েছে। কোথাও ওই জায়গায় যুক্ত করার মতো তরুণ মুখ খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোথাও ছাত্র-যুব ফ্রন্টের কর্মী থাকলেও ‘পছন্দ-অপছন্দের’ কারণে তাঁদের নেওয়া হচ্ছে না। অনেকের মতে, আগামী বছর সম্মেলনের আগে তাই দলের এরিয়া স্তরে বার্তা দেওয়া শুরু করে দিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
আবার এ-ও বাস্তব, অনেক জায়গায় অল্পবয়সিদের এরিয়া কমিটি স্তরে জায়গা দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও জেলা কমিটিতেও স্থান পেয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সিপিএম চাইছে, ১০০ শতাংশ এলাকাতেই তা কার্যকর করতে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘যেখানে অল্পবয়সিদের কমিটি স্তরে আনা যাচ্ছে না, সেখানে নেতৃত্বের গাফিলতির জন্যই পার্টির ভাবনা বাস্তবায়িত হচ্ছে না।’’ আবার উল্টো মতও রয়েছে। সিপিএমের একটি অংশ মনে করেন, তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশই দেখনদারি রাজনীতি করতে চাইছেন। যাঁদের মূল কর্মকাণ্ড সামাজিক মাধ্যম কেন্দ্রিক। তাঁরা প্রতিদিনের বুথের রাজনীতিতে আগ্রহী নন। তা ছাড়া তরুণ প্রজন্মের অনেকে যে ভাবে বৈভব প্রদর্শন করছেন, তা নিয়েও দলের অনেকে বিরক্ত। সিপিএমের এক নেতার কথায়, ‘‘এই রোগ রাজ্য কমিটি পর্যন্ত সংক্রমিত।’’
সেলিম অবশ্য স্পষ্ট করেই বলেছেন, ‘‘শৃঙ্খলার নামে কৃত্রিম শৃঙ্খলা চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।’’ তাতে তরুণ প্রজন্ম বিমুখ হতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, সেলিম যে কথা বলেছেন তার মধ্যে আসলে রয়েছে দলের ‘রক্ষণশীল’ নেতাদের প্রতি বার্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy