ইলামবাজারের কানুরে আহত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে মুকুল রায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুপম হাজরা ও সুলতান আহমেদ। সোমবার বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।
লোকসভা ভোটে সাফল্যের পরে বাংলার দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে বিজেপি। তাদের পাল্টা তাড়া করার সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূলও!
বিজেপি যেমন এখানে সন্ত্রাস-কবলিত এলাকা পরিদর্শনে দলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠানো শুরু করেছে, তাঁরাও অন্য রাজ্যে পাল্টা দল পাঠাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই চ্যালেঞ্জ জানানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়ার ভিলাই বোরখেড়ি গ্রামে যাবে তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধিদল। এমনকী, এ রাজ্যে বিজেপি যেখানে সভা করবে, সেখানেই পাল্টা সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব! বিরোধী দলে থাকার সময়ে ঠিক এই ভাবেই সিপিএমের পাল্টা সভা করতেন তাঁরা। সরকারে এসে কিছু দিন আগে পর্যন্তও সেই কৌশল বজায় ছিল। লোকসভা ভোটের পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন সিপিএমের বদলে বিজেপি-র বিরুদ্ধে সেই কৌশল নিচ্ছেন তাঁরা।
মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়ায় এক আদিবাসী মহিলা গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। সেই গ্রামেই যাচ্ছেন সুখেন্দুশেখর রায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধিদল। দলে থাকছেন তিন মহিলা সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, অর্পিতা ঘোষ, উমা সরেন এবং রাজ্যসভার সদস্য নাদিমুল হক। বাংলায় সন্দেশখালি, ইলামবাজারে সন্ত্রাস-কবলিত এলাকায় বিজেপি-র কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠানো নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী রবিবারই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে অন্য রাজ্যে ঘটনা ঘটলে তাঁরাও দল পাঠাতে পারেন। বিধানসভায় এ দিন প্রায় সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
খান্ডোয়ায় তৃণমূলের প্রতিনিধিদল পাঠানো নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের মন্তব্য, “মধ্যপ্রদেশে ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিনিধিদল যাচ্ছে এমন একটি রাজ্য থেকে, যারা ধর্ষণে দেশে এক নম্বর! তৃণমূল যদি মধ্যপ্রদেশে এই রকম ঘটনায় দল পাঠাতে পারে, তা হলে এই রাজ্যে প্রতিদিনই বিজেপি-র একটা করে দল আসা উচিত!” বিজেপি-কে পাল্টা বিঁধে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় আবার বলেছেন, “মধ্যপ্রদেশে মেয়েদের উপরে বর্বরোচিত অত্যাচার হচ্ছে। বরং, ওখানে আপনারা প্রতিনিধি পাঠান!”
উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে পরপর ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু সেখানে প্রতিনিধিদল না-পাঠিয়ে খান্ডোয়ায় কেন? সুখেন্দুবাবুর বক্তব্য, “ভিলাই বোরখেড়ি গ্রামের ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। ওখানে আদিবাসী মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা সারা দেশের চেয়ে বেশি হয়।”
সন্দেশখালি ঘুরে গিয়ে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহকে রিপোর্ট দিয়েছে। সুখেন্দুবাবুরা রিপোর্ট দেবেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তৃণমূলের একটি সূত্রের বক্তব্য, প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী দলের ৪৬ জন সাংসদকে লোকসভা বা রাজ্যসভায় খান্ডোয়ার ঘটনা নিয়ে সরব হওয়ার নির্দেশ দেবেন।
ইলামবাজারে রবিবার নিহত দলীয় সমর্থক রহিম শেখের বাড়িতে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় দল ঘুরে যাওয়ার পরে এ দিনই সেখানে দলের চার সাংসদকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন মুকুলবাবু। সেখানে তাঁর অভিযোগ, “একটি গ্রাম্য বিবাদের কারণে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তাতে এখন রাজনীতির রং দেওয়া হচ্ছে!” বিজেপি-র রাহুলবাবু সভা করার পরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ও খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায় আজ, মঙ্গলবার তৃণমূলের সভায় থাকার কথা মুকুলবাবুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy