Advertisement
E-Paper

জাহাজের খোলে বিষাক্ত গ্যাস, মৃত ২ চিনা নাবিক

কয়লা বোঝাই জাহাজে বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যু হল দুই চিনা নাবিকের। গুরুতর অসুস্থ আরও দু’জন। ঘটনাটি ঘটেছে বঙ্গোপসাগরের সাগর আইল্যান্ডে। অসুস্থদের চিকিৎসা চলছে তমলুকের এক বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বন্দর ও পুলিশ সূত্রের খবর, পানামার জাহাজ ‘তুয়ো ফু-৩’ ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে সাগর আইল্যান্ডে আসে ১৯ এপ্রিল গভীর রাতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৫৩

কয়লা বোঝাই জাহাজে বিষাক্ত গ্যাসে মৃত্যু হল দুই চিনা নাবিকের। গুরুতর অসুস্থ আরও দু’জন। ঘটনাটি ঘটেছে বঙ্গোপসাগরের সাগর আইল্যান্ডে। অসুস্থদের চিকিৎসা চলছে তমলুকের এক বেসরকারি হাসপাতালে। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

বন্দর ও পুলিশ সূত্রের খবর, পানামার জাহাজ ‘তুয়ো ফু-৩’ ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে সাগর আইল্যান্ডে আসে ১৯ এপ্রিল গভীর রাতে। সেখান থেকে বার্জে করে ফরাক্কায় এনটিপিসিতে কয়লা পৌঁছনোর কথা ছিল। তার আগে রবিবার রাতে কয়লার নমুনা আনতে যান চার নাবিক। তখনই বিষাক্ত গ্যাসে অসুস্থ হয়ে অ্যান বেই ডং (৪৬) এবং বিং জিংবাও (৩৬) মারা যান। অসুস্থ হয়ে পড়েন সান লিউয়া এবং ইয়াং ঝিগ্যাং।

কলকাতা বন্দরের মেরিন বিভাগের অধিকর্তা অরুণকুমার বাগচি বলেন, “কয়লা থেকে উৎপন্ন কোনও বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবেই এই ঘটনা ঘটেছে। মৃতদের দেহ বাড়িতে পৌঁছনোর জন্য চিনা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।” হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারীর আশ্বাস, “বন্দর ও সরকারের তরফে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

নাব্যতা-সঙ্কটের জন্য পণ্যবাহী বড় জাহাজ এখন হলদিয়ায় ঢুকতে পারে না। বন্দর থেকে ৭৮ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণে সাগর আইল্যান্ডে এসে থামে জাহাজগুলি। সেখান থেকে ছোট জাহাজ বা বার্জে করে পণ্য হলদিয়া বন্দরে বা অন্যত্র পাঠানো হয়। সেই মতো ৬০,০২৪ টন কয়লা বোঝাই ইন্দোনেশিয়ার জাহাজটিও সাগর আইল্যান্ডে নোঙর করেছিল। ক্যাপ্টেন শ্যেন লং ইউ জানান, জাহাজে মোট ২৪ জন কর্মী ছিলেন। বাকি ২০ জন জাহাজেই আছেন।

ঠিক কী হয়েছিল রবিবার রাতে?

তমলুকে চিকিৎসাধীন দুই জাহাজকর্মী সান লিউয়া এবং ইয়াং ঝিগ্যাং ভাঙা-ভাঙা ইংরেজিতে বললেন, “কয়লার নমুনা নিতে ডেকে থাকা টানেলের ঢাকনা খুলেছিলাম চার জন। তখনই তীব্র কটূ গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়ি। আর কিছু মনে নেই।”

বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, জাহাজের খোলে যেখানে কয়লা থাকে, সেখানে নামার জন্য নির্দিষ্ট টানেল রয়েছে। জাহাজের ডেকে ওই টানেলের প্রবেশপথের পাশেই রয়েছে আলাদা আর একটি পাইপের মুখ। জাহাজের খোলে মজুত কয়লা থেকে প্রাকৃতিক কারণে কোনও বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন হলে ওই পথে তা বের করে দেওয়ার কথা। নিয়মমতো, টানেলে নামার আগে গ্যাস বের করে দেওয়ার পাইপের ঢাকনা কিছুক্ষণের জন্য খুলে রাখেন নাবিকেরা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ওই নিয়ম মানা হয়নি বলে বন্দর সূত্রের দাবি। ফলে, টানেল দিয়ে জাহাজের খোলে নামার চেষ্টা করতেই চার নাবিক বিষাক্ত গ্যাসের কবলে পড়েন। সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্সির অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শ্রীকান্ত প্রামাণিকও বলেন, “এমনই ঘটেছে বলে আমরাও খবর পেয়েছি।”

হলদিয়া উপকূল রক্ষী বাহিনীর অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডার প্রতীপ মোদক জানান, সাগর আইল্যান্ডে প্রাথমিক চিকিৎসা করে অসুস্থদের হোভারক্রাফটে চাপিয়ে আনা হয় হলদিয়ায়। মঙ্গলবার হলদিয়া হাসপাতালে মৃতদেহ দু’টির ময়না-তদন্ত করা হয়। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট মেলার আগে ঠিক কোন গ্যাসের বিষক্রিয়ায় ওই ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি সংশ্লিষ্টেরা। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।

ship mishap gas
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy