Advertisement
১৯ মে ২০২৪

তৃণমূলের দ্বন্দ্বে রক্তপাত, হামলা বিজেপি মিছিলেও

কোথাও নিজেদের গোষ্ঠী-কোন্দলে রক্তপাত। আবার কোথাও বিরোধী পক্ষের মিছিলে হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর। দু’টি কীর্তিতেই আঙুল উঠছে শাসক দল তৃণমূলের দিকে। ঘটনাস্থল খাস কলকাতা এবং শহরতলি। শুক্রবার রাতে কাশীপুর রোডে দলীয় অফিস দখলকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যেই মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী। ভাঙচুর করা হয় পার্টি অফিসটিও। পুলিশি জানায়, হাঙ্গামায় দুই গোষ্ঠীরই কয়েক জন আহত হয়েছেন। গোলমালের পরে গভীর রাত পর্যন্ত কাশীপুর রোড অবরোধ করে রাখা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৬
Share: Save:

কোথাও নিজেদের গোষ্ঠী-কোন্দলে রক্তপাত। আবার কোথাও বিরোধী পক্ষের মিছিলে হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর। দু’টি কীর্তিতেই আঙুল উঠছে শাসক দল তৃণমূলের দিকে। ঘটনাস্থল খাস কলকাতা এবং শহরতলি।

শুক্রবার রাতে কাশীপুর রোডে দলীয় অফিস দখলকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যেই মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী। ভাঙচুর করা হয় পার্টি অফিসটিও। পুলিশি জানায়, হাঙ্গামায় দুই গোষ্ঠীরই কয়েক জন আহত হয়েছেন। গোলমালের পরে গভীর রাত পর্যন্ত কাশীপুর রোড অবরোধ করে রাখা হয়।

পুলিশি সূত্রের খবর, কাশীপুর রোডে ওই অফিসটি আদতে ছিল কংগ্রেসের। সেটি ব্যবহার করতেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতা মণি সিংহ। সম্প্রতি তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তার পর থেকেই ওই এলাকায় নব্য বনাম আদি তৃণমূলের গোলমাল চলছে। এ দিনও তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী মণিবাবুদের পার্টি অফিস দখল করতে যায়। গোলমাল বাধে তা নিয়েই। শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

কংগ্রেসের বক্তব্য, অফিসটি তাদেরই। বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূল তাঁদের অফিস দখল করে নিয়েছে বলে কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া ও অজয় ঘোষ কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের ওই কার্যালয় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দখল করে নিয়েছে তৃণমূল। নষ্ট করা হয়েছে ইন্দিরা ও রাজীব গাঁধীর ছবি। শুক্রবার সকালে অজয়বাবু কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) বাস্তব বৈদ্যের কাছে অভিযোগও জানান। বাস্তববাবু বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কংগ্রেসের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং কলকাতা পুরসভার এক নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান তরুণ সাহা। তিনি বলেন, “তৃণমূলের কেউ কংগ্রেসের কার্যালয় দখল করেনি। তৃণমূল দখলের রাজনীতি সমর্থনও করে না।” তিনি জানান, কংগ্রেসে থাকাকালীন মণি সিংহ ওই কার্যালয় ব্যবহার করতেন। তিনি কয়েক দিন আগে সদলবল তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কার্যালয়টি তাঁরই রয়ে গিয়েছে।

স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সীতা জয়সোয়ারা জানান, ওই অফিসটি কংগ্রেসেরই। এই নিয়ে গোলমালের খবরও তিনি শুনেছেন। কিন্তু তার পিছনে কারা জড়িত, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি সীতাদেবী।

কাশীপুরে যখন শাসক দলের দুই গোষ্ঠী মারামারি করছে, রাজারহাটে প্রায় সেই সময়েই তৃণমূলের হাতে মার খাচ্ছেন বিজেপি-র মিছিলে যোগ দেওয়া লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে রাজারহাটের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিময়নগরে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, ওই ঘটনায় তাঁদের ১২ জন কর্মী জখম হয়েছেন।

বিজেপি সূত্রের খবর, সকালে বিজেপি-কর্মীরা শান্তিময়নগরে একটি সভা করেন। ওই সভায় এলাকার কয়েক জনের বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। বিজেপি-র অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ওই সভা ভন্ডুল করে দেন। বিজেপি-র তরফে নিউ টাউন থানায় অভিযোগ করা হয়। সভা ভন্ডুল করার প্রতিবাদে বিকেলে বাগুইআটি এলাকার বিজেপি নেতা পীযূষ কানোরিয়ার নেতৃত্বে মিছিল হয় শান্তিময়নগরে। অভিযোগ, ফের ওই মিছিলে হামলা চালায় তৃণমূল। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “এলাকার তৃণমূল-সমর্থকেরা আমাদের ১২ জন কর্মীকে মারধর করেছে। বেশ কয়েক জনের মাথা ফেটেছে। গুলিও চলেছে।” বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত কয়েক জনকে নাগেরবাজারের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্য কয়েক জনকে নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে।

নিউ টাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc political clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE