রায়দিঘিতে চার জনের খুনের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠছে ফেরার এক তৃণমূল নেতার দিকেও। ওয়াজেদ খামারু নামে ওই নেতার উপস্থিতিতেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ নিহতের পরিজন ও জখমদের। একই অভিযোগ সিপিএমেরও। যদিও শাসক দল সিপিএম-বিজেপিকেই দায়ী করেছে।
রায়দিঘির খাড়ি এলাকায় সরস্বতীপাড়ায় সেচ দফতরের জমির দখল নিয়ে গোলমালে শনিবার রাতে চার জনের মৃত্যু হয়। আমির সর্দার, রফিক মোল্লা ও কৃষ্ণ মিস্ত্রি নামে জখম তিন জন ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সোমবার তিন জনই ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। রফিক বলেন, “ওয়াজেদের নেতৃত্বেই হামলা হয়েছে। আমরা ওয়াজেদকে দেখেছি।” ঘটনার পর থেকে ফেরার ওয়াজেদ। এফআইআরে নাম-থাকা ধৃত চার জনকে জেরা করে ঘটনায় ওয়াজেদ জড়িত বলে মনে করছে পুলিশও। নিহত আতিয়ার মোল্লার বাবা আকবর মোল্লাও বলেন, নদীর চরে জমির দখল নিয়ে ওয়াজেদ আগে এক বার তাঁর ছেলে-সহ কয়েক জনকে মারধর করেছিল। থানায় অভিযোগও হয়েছিল।
সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তীর দাবি, “কিছু নেতাকে আড়াল করা চেষ্টা করছে শাসক দল। নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন।” সুজনবাবুর সংযোজন, নিজেদের নেতাদের আড়াল করে সিপিএম নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় এফআইআর হয়েছে রায়দিঘির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক ও মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের নামেও। রবিবার রায়দিঘি ঘুরে আসার পরে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় কান্তিবাবুর নাম না করে জানান, শনিবার ঘটনার দু’ঘণ্টা আগে রায়দিঘির ঘটনাস্থলে ওই নেতা ছিলেন বলে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন। যে কোনও ঘটনায় নেতাদের নাম জড়ানোর তীব্র প্রতিবাদ করে পিডিএসের রাজ্য সম্পাদক সমীর পূততুণ্ড বলেন, “রাজনৈতিক কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা আগেও হয়েছে। কিন্তু যে কোনও ঘটনায় পরিচিত নেতাদের টেনে অভিযোগ দায়ের করার এই নিন্দনীয় প্রবণতা নতুন এসেছে!”
নিহত আতিয়ারের ভাই আয়ুব মোল্লা বলেন, “আমি ওয়াজেদের নামে অভিযোগ করেছিলাম। পরে কী হয়েছে, জানি না।” ঘটনার পরে কাশীনগরে ভগবানের কাঠগোলায় আয়ুব ওই অভিযোগ লিখেছিলেন। পরে তা থানায় জমা দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে কোনও নাম বাদ দিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে কি না, সেই বিষয়ে অন্ধকারে আয়ুবও। পুলিশ জানিয়েছে, মাস ছয়েক আগে ওয়াজেদ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তার পরেই এলাকায় তৃণমূল বলে পরিচিত হাফিজুল গাজি ও হাসান গাজির সঙ্গে তাঁর ঝামেলা বাধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy